পুলিশের ভাষানুযায়ী এটি ছিল একটি নিছক ‘গলা টিপে হত্যা (Neck Compression)’ ;এর বাইরে তারা আর কিছুই বলছে না। এসব দেশে যে কোন ব্যক্তি (শিশু থেকে মৃত লাশ পর্যন্ত সবার আস্তিক, নাস্তিক, সংশয়বাদী)-র নাগরিক অধিকার কঠোর আইন দ্বারা সংরক্ষিত। আদালতে বিচারাধীন বিষয় নিয়ে এরা সাধারনত উলটাপালটা কথাও বেশী বলেন না। কিন্তু মিডিয়া ছাড়ছে না। ভাবখানা দেখে মনে হয়, এরকম একটা ঘটনার জন্যই বুঝি পাপারাজ্জিরা প্রস্তুত হয়েছিল। সাথে যুক্ত হয়েছি আমরা, যারা কিনা ওয়েষ্টার্নদের চেয়েও বেশী ওয়েষ্টার্ন হয়ে গেছি। অসত্য প্রবাদবাক্যের মত, ব্রাক্ষ্মন মুসলমান হলে নাকি বেশী গরু খায়।
মেয়েটির করুন মৃত্যু, হত্যার অভিযোগে স্বামী জেলে, পুলিশের কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে অপর ছেলেটিও গ্রেফতার, মিডিয়ার অত্যাচার, মাতম করা তো দূরে থাক সব মিলিয়ে কোনদিকে যাবেন কূলকিনারা পাচ্ছেন না পরিবারের বর্তমান কর্ণধার মুমূর্ষ মা মিসেস পারভেজ। নতুন জীবন গড়তে এসে জন্মভূমি থেকে হাজার হাজার মাইল দূরে এমন এক দুর্যোগ দূর্বিপাকের সম্মুখীন হবেন তা কি কখনো কেউ ভেবেছেন? হতভাগা মেয়েটির জানাযাও শেষ মুহুর্তে বৃহৎ ইসনা মসজিদ থেকে সরিয়ে অন্যত্র সারতে হয়েছে ঘরোয়া পরিবেশে, অত্যন্ত চুপিসারে। যে কোন ঘটনার সাথে আরবী নাম, হিজাব টাইপের কথাবার্তা থাকলে জমে ভাল। মাত্র দশ মিনিটের জন্য সপ্তাহে একদিন মসজিদে গেলেও অথবা মৌসুমী মুসল্লী হলেও ‘ডিভোটেড মুসলিম’ বানিয়ে মোটামুটি একটা হিংস্র বা বর্বরতার রূপ দিয়ে সংশ্লিষ্ট ধর্মের সাথে যোগসূত্র স্থাপন করা যায়। আকসার বন্ধু-বান্ধবদের উদ্ধৃতি দিয়ে ব্যাপকভাবে ভার্চুয়াল ও স্ক্রিন মিডিয়াতে প্রচারিত হচ্ছে, মাথা ঢাকতে অস্বীকার করে স্কুলে যাওয়া ও এই বয়সে বাড়ি থেকে বের হয়ে বন্ধুর সাথে থাকাতেই পাষন্ড বাবার এই কান্ড-‘অনার কিলিং (Honor killing)’; যা আকসার বাবার নিজ ধর্মেও গর্হিত চরমতম শাস্তিযোগ্য অপরাধ! ১৭ই ডিসেম্বরে বহুল প্রকাশিত ডেইলী টরোন্টো স্টার ঘটনাটির পিছনে অন্য কারনসমূহ বের করার ইঙ্গিত দিয়ে মন্তব্য প্রকাশ করেছে, ‘যে বাড়ির কোন মহিলা সদস্যাই হিজাব পড়েন না, সে বাড়িতে কি করে তা-ই না পড়ার অজুহাতে একটি মেয়ে খুন হতে পারে?’ মাথা না ঢাকার অপরাধে বাবা কর্তৃক আদরের মেয়েকে একেবারে খুনই করতে পারে কিনা, না কি এটা সচরাচর আরেকটি এংগার ম্যানেজমেন্টের করুন পরিনতি, তার রহস্য উদ্ঘাটনের দায়িত্ব আমরা আপাতত পুলিশ ও আদালতের উপর ছেড়ে দিয়ে আসুন একটু ভিন্ন আঙ্গিকে আলোচনা করি।
এর মাস তিনেক আগে (২রা অক্টোবর) একই শহরে কানাডিয়ান ইমিগ্র্যান্ট এক মহিলার রক্তাক্ত লাশ নিজের বাড়ী থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। দেশে ফিঁয়েন্সকে ফেলে ফিলিপিনো মহিলা মিসেস ডুলনুয়ান এখানে এসে বিয়ে করেছিলেন। সন্দেহভাজন আহত স্বামীসহ আরও একজনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এই ঘটনার দুই মাস (২৯শে নভেম্বর) পার হতে না হতেই নাম ও বয়স না প্রকাশ করে পুলিশ আরো এক অক্ষত কিন্তু অস্বাভাবিকভাবে মৃত মহিলার লাশ পেয়েছে তার নিজ কন্ডো থেকে। বছর দেড়েক আগে একজন বাংলাদেশী তার স্ত্রীকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে মেরে ফেলেছে টরন্টোতে। বুয়েটের মেয়ে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার ফারজানা আপাকে মেরে মিশিগানে স্বামী জেল খাটছে প্রায় পাচ বছর ধরে। গত ২১শে ডিসেম্বরে জ্যামাইকায় স্বামীর হাতে নৃশংসভাবে খুন হলো গৃহবধু শাহিদা সুলতানা লাভলী। আমাদের এক প্রাক্তন প্রতিবেশী সিঙ্গেল মাদার শেরী বলত, তার মেয়ে সারাহ্র বয়স যখন দুই বছর, তখনই তার বাবা ‘জাস্ট ওয়াক্ড আউট (বাড়ি থেকে চলে গেছে)’। মেয়েটির বর্তমান বয়স বারো বছর, বাবা এখনো ফেরেননি। শেরী বলত, সেজন্যই সারাহ্ বেশী বেশী আমাদের বাসায় এসে পারিবারিক বন্ধন উপভোগ করতে নাকি পছন্দ করত।
মহিলাদের উপর অত্যাচার, নির্যাতনের হরদম কাহিনী বলতে গেলে এসব দেশে নিয়মিতই হয়ে গেছে। এক নারী অধিকার সংক্রান্ত ওয়েবসাইটে তো দেখলাম, প্রতি সাত সেকেন্ডে আমেরিকায় কোন না কোনভাবে মেয়েরা তাদের আপনজনদের হাতে নিগৃহীত হচ্ছে। আবার এর বাইরে, নিজের সন্তানকে গাড়ির মধ্যে রেখে বিউটি পার্লারে যাওয়া এবং ফিরে এসে মৃত পাওয়া, গার্লফ্রেন্ডের সহায়তায় পানিতে আপন সন্তানদেরকে চুবিয়ে মারা, শুট করা ইত্যাদির ঘটনাও নতুন নয়। হোমিসাইডের এমনসব ঘটনা এসব দেশে ঘটে যা আমাদের দেশে বসে চিন্তাও করা যায় না, আর আমাদের দেশে মাঝে মধ্যে এমনসব ঘটনা ঘটে, যা এসব দেশের মানুষ ভাবতেও পারেনা।
কোন পরিবারের জন্য তরুন ছেলেমেয়েদের বিগড়ে যাওয়া নতুন কোন অভিজ্ঞতা নয়। কিভাবে এদের মনমানসিকতার সাথে খাপ খাওয়ায়ে একটি সেতু বন্ধন সৃষ্টি করা যায় সেটিই বিবেচ্য বিষয়। প্রায় অপ্রতিরোধ্য এই সামাজিক, পারিবারিক সমস্যা ও এংগার ম্যানেজমেন্ট (Anger Management)-কে কিভাবে নিয়ন্ত্রন করা যায় তা নিয়ে সমাজ বিজ্ঞানীরা ভাবতে বসেছেন। কড়া আইনেও এদের লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছেনা কেন তা নিয়ে তারা প্রচুর গবেষনা করছেন। মূল সমস্যার অন্তর্মূলে গিয়ে সমাধানের পথে না যেয়ে ‘কালচারাল ক্ল্যাশ’, ‘নো টু হিজাব’, ‘নো টু ইসলামিক স্কুল’, ‘পলিটিক্যাল কাঠমোল্লাদের বানানো ইসলামে এটি নতুন সংযোজন’ ইত্যাদি জাতীয় সস্তা কথাবার্তা বলে, একদল লোককে ক্ষেপিয়ে তুলে সহজে স্কলার হয়ে গেলেও, অশান্ত এই পৃথিবীতে আর যাই হোক শান্তি আসবে না। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কোন সদস্য কর্তৃক বিচার বহির্ভূতভাবে কোন হত্যার জন্য সংশ্লিষ্ট অপরাধীর পরিবর্তে কেউ কি খোদ উক্ত আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকেই নিষিদ্ধের দাবী তোলে? মানূষের দৃঢ বিশ্বাসে হাত না দিয়ে বা বিচ্ছিন্ন কোন ঘটনাকে পুঁজি না করে তা থেকে কিভাবে অশিক্ষা-কুশিক্ষা, গোঁড়ামী ও ধর্মান্ধতা দূর করা যায়, সেদিকে নজর দেয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
উদার মন থাকলে মানুষের বিশ্বাস, কৃষ্টি, ঐতিহ্যের ভিন্নতা ও বৈচিত্রতা একটি দারুন সৌন্দর্য ও উপভোগের বিষয়। মাল্টিকালচারিজমের কথা বলা হবে, জুইস স্কুল, ক্যাথলিক স্কুলের চরম নিয়ন্ত্রিত ও সংরক্ষিত শিক্ষাব্যবস্থাকে নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধ চর্চার পাদপীঠ বলা হবে, আর ইসলামোফোবিয়া আতঙ্কে মুসলিমদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও নিজ্বস্ব দৈনন্দিন কর্মকান্ডের সমালোচনা করে প্রমান করার চেষ্টা করা হবে যে ‘ইসলাম মানেই সন্ত্রাস’-এর মানে তো সবার জন্য সমান আচরন নয়। আমেরিকার টক শো’গুলো এই দ্বৈত নীতির পক্ষে সাফাই গেয়ে অদ্ভূত যুক্তি দিয়ে বলছে, ‘আমাদের সমাজে বহুমাত্রিক কালচারালের মোজাইক থাকবে ঠিকই, তবে সেখানে মেয়েরা হেড স্কার্ফ পড়তে পারবে না’!
ডেট্রোয়েটে কালো আমেরিকান মেয়েদেরকে আমাদের দেশের ঠিক হাফেয সাহেবদের মত মাথায় সাদা গোল টুপি পড়তে দেখতাম। আমি তো অবাক হয়ে একদিন জিজ্ঞেস করেছিলাম, বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেট ছাড়া এগুলো তোমরা কোথায় পেলে? আর ছেলেরা পিছনে ঝুলানো মাথায় কালো একটি পট্টি (ঠিক RAB-র মত) বেধে সারাদিন দিব্যি চষে বেড়ায়। আফ্রিকীয়দের ঐতিহ্যবাহী ঢিলেঢালা সাত রঙের অদ্ভূত পোশাক, চাইনিজ পুরুষদের ট্র্যাডিশনাল জমকালো জি পাও ও মহিলাদের চাং সান, মালয় মহিলাদের বাহারি পোশাক বাজু কোরোং ও পুরুষদের সারুন (লুঙ্গি)-র উপর দিয়ে আলাদা এক ফালি কাপড় পেচানো, খ্রীস্টান পুরুষ পাদ্রীদের মাথায় এক ধরনের টুপিসহ আজানুলম্বিত গাউন ক্যাসোক (cassock) ও নানদের হেড স্কার্ফ, জুইশ পুরুষদের পোশাক সাদা হাটু পর্যন্ত লম্বা কিটেল (kittel) ও পীর সাহেবদের মত বুক পর্যন্ত লম্বা দাড়িসহ মাথার ঠিক মাঝখানে ছোট্ট টুপি ইয়ামাকা (yamaka) বা কিপ্পাহ (kippah) আর মহিলাদের পেচিয়ে মাথা ঢাকা কাপড় কিপ্পট (kippot), শিখ পুরুষদের দেওবন্দ হুজুরদের চেয়েও বড় পাগড়ী (যা কানাডাতে এমনকি মোটর সাইকেল চালাতে হেলমেটের বদলে পর্যন্ত পড়ার অনুমুতি রয়েছে) ও মহিলাদের শাড়ীর ঘোমটা, উপমহাদেশের পাজামা-পাঞ্জাবী, সালোয়ার-কামিজ, শেরওয়ানি, ঊড়না, কিস্তি টুপি ও শাড়ি ইত্যাদি এসেছেই তাদের কোন না কোন বিশ্বাস, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য থেকে।
নিজে মানুন বা না মানুন, কানাডিয়ান ভ্যালুই হলো এগুলোকে সমীহের চোখে দেখা, কটাক্ষ না করা; আর সহনীয় ও সাধারন মানুষেরা কিন্তু তাই ই করে। ভিন্ন কালচার সম্মন্ধে জানতে মুক্ত চিন্তার এদেশের মানুষজনের প্রচন্ড আগ্রহ দেখেছি। গত বছর আমার অফিসের (যাদের মধ্যে আমিই একমাত্র মুসলমান) সবাই জড়ো হয়ে অবাক ও মনোযোগ সহকারে শুনছিল ঈদুল আযহার ইতিহাস। আকসার মৃত্যুর দুইদিন পর ১২ই ডিসেম্বরে সিবিসি টেলিভিশন সাবেক জুইশ হেড স্কার্ফ পড়া সাদা মহিলা সান্ড্রা নওয়ি’র দীর্ঘ সাক্ষাৎকার সম্প্রচার করে। পপ স্টার ক্যাট স্টিভেন (ইউসুফ ইসলাম)-র এক সময়ের অন্ধভক্ত সান্ড্রা খোলামেলাভাবে তার অনুভূতি প্রকাশ করছিলেন। বলছিলেন, সতেরো বছর বয়স থেকে বিদ্রোহী ও আনহ্যাপি যুবতী হিসেবে বাড়ি থেকে বের হয়ে যাওয়া, মাতাল অবস্থায় গাড়ি চালাতে গিয়ে অল্পের জন্য জীবন রক্ষা পাওয়া, গান বাজনা, ড্রিংক্স ইত্যাদি নিয়ে অতৃপ্ত জীবন বাহিত করার কথা। বর্তমানে নিজে নিজেই হিজাব পছন্দ করে তা পড়ে অফিস করার সুখানুভূতি প্রকাশ করছিলেন তিনি কানাডিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনে। তাই বলছিলাম, যারা এটি পরিধান করেন তারা যদি একে বাধা মনে না করেন, তবে আপনি বা আমি বলার কে? এসব পড়তে গিয়ে কেউ যদি মারাই যায় অথবা না পড়ার জন্য যদি কাউকে মেরে ফেলা হয় তার দায়-দায়িত্ব তো সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকেই নিতে হবে, বেচারা পোশাকের ঘাড়ে সব দায় চাপিয়ে আমরা সমাজ ও পরিবারকে তো পরিশুদ্ধ করতে পারি না।
সাত লাখেরও বেশী মানুষের শহরটি হল মিসিসাগা। বহু জাত, ধর্ম ও বর্নের সংমিশ্রনে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাসরত এই শহরে শতকরা ৪৫ ভাগেরও বেশী মানুষ ইংরেজীর বাইরে অন্য ভাষায় কথা বলে প্রমান করছে ইমিগ্র্যান্টদের (৪০.২০%) ব্যাপক পদচারনা। ১৯৭৮ সালের পূর্বে আপেল বাগান ও আদিবাসীদের আবাসস্থল মিসিসাগাকে উন্নত, নিরাপদ ও আধুনিক বিশ্বমানের সিটিতে পরিনত করতে শতকরা প্রায় সাত ভাগ মুসলিম পুরুষ ও মহিলা যাদের মধ্যে অগনিত পেশাজীবি ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, প্রফেসর, ফার্মাসিস্ট, ব্যাংকার, একাউন্ট্যান্ট, দক্ষ শ্রমিকদের অবদান অনস্বীকার্য্য। অসংখ্য ব্যবসায়ী ও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মালিক ও উদ্যোক্তা তারাই। রাজনীতিতেও তারা পিছিয়ে নেই। আকসাদের এলাকার এমপিই হলেন পাকিস্তানী ইমিগ্র্যান্ট ওয়াজিদ খান, তার পাশের এলাকার তরুন এমপি হলেন সউদী বংশোদ্ভূত ইঞ্জিনিয়ার ও এমবিএ ওমর আলগাবরা।
ছিয়াশি বছর বয়স্কা সিটির মেয়র হ্যাযেল ম্যাকক্যালিয়ন (Hazel McCallion) যিনি নিরুংকুশভাবে (৯১% ভোটে) জয়ী হয়ে ত্রিশ বছর ধরে অফিস করছেন এবং ননসেন্স পলিটিক্সের বিরুদ্ধে সোচচার হওয়ায় সবাই যাকে আদর করে ‘হারিকেন হ্যাযেল’ নামে ডাকেন; সুযোগ পেলেই মুসলিম নারী ও পুরুষদের ভূয়সী প্রসংশা করে বলেন ‘আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল সুশৃংখল এক পরিশ্রমী কমিউনিটি’। ভিন্ন ধর্ম ও পোশাকের প্রসংশা করে এংলিকান (Anglican) চার্চের সদস্যা ও এখনো হকি খেলোয়ার হ্যাযেল এই বয়সেও তার নিজের নৈতিক দৃঢতা ও সক্ষমতার সাথে কাজ করাকে ‘ক্যাথলিক পাওয়ার’ বলে গর্ব করেন।
পরিশেষে, ইমিগ্র্যান্টদের উদ্দেশ্যেও বলতে চাই, জোর জবরদস্তি করে কোন কিছু করার সুযোগ স্বদেশে থাকলেও তাদের নতুন এদেশে নেই। বড়দের সাথে চোখে চোখ রেখে কথা বললে যেসব দেশে বেয়াদব বলে গন্য করা হয়, আর এখানে চোখের দিকে তাকিয়ে কথা না বললে অপরপক্ষ অপমানিত ও উপেক্ষিত হয়। নিজ জন্মভূমির রপ্ত করা শিক্ষা ও মূল্যবোধের সাথে আসমান জমিন ফারাক এসব অজানা অচেনা পরিমন্ডলে মডার্ন ম্যানেজমেন্ট বুঝে অত্যন্ত সতর্কতা ও বুদ্ধিমানের সাথে পথ চলতে হয়। সন্তাদেরকে শুধু শিক্ষা প্রদান নয়, গুরুত্ব দিয়ে তাদের কাছ থেকে শিখতেও হয়। আর তা না করলে অনিশ্চিত গন্তব্যস্থলের উদ্দেশ্যে মহাসমুদ্রের এ যাত্রায় নাবিকের হাতের রশি যেকোন মুহুর্তে ছিড়ে জাহাজ ভর্তি যাত্রীসহ অতল সমুদ্রের অচিন ও চাকচিক্যময় জগতে তার সযত্নে লালিত প্রিয় জাহাজটি চিরদিনের মত হারিয়ে যেতে পারে।
লেখাটি দৈনিক আমারদেশ ১৫ ও নয়াদিগন্ত ১৬ ই জানু'০৭ এ ছেপেছে
Plz. click here to read it in English from the daily Financial Express on Jan14'07
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ২:২৭