ডিন কুন্টজকে বলা হয় হরর থ্রিলারের সম্রাট। তার বই পৃথিবীর অন্তত ৩৮ টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে, বিক্রি হয়েছে ৪৫০ মিলিয়ন কপিরও বেশি। নিউ ইয়র্ক টাইমসের বেস্টসেলার বুকসে তার ১৮ টি বই স্থান পেয়েছে এ পর্যন্ত।
বাংলা ভাষায় এর আগে ডিন কুন্টজের কোন বই অনুবাদ করা হয়নি। এবারই প্রথম আদী প্রকাশন নিয়ে আসছে 'ইনটেনসিটি' নামের সাইকোলজিক্যাল থ্রিলারের বাংলা অনুবাদ। বইটার অনুবাদ করেছি আমি, শাহেদ জামান এবং প্রচ্ছদ করেছেন নাজিম উদ দৌলা। একুশে বইমেলা ২০১৫ এ ২৬৪ নাম্বার স্টলে পাওয়া যাবে বইটি।
কাহিনী সংক্ষেপঃ
বান্ধবীর বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল চায়না শেফার্ড।
রাতের আঁধারে ভয়ঙ্কর এক সাইকোপ্যাথ হামলা চালাল বাড়িতে।
নিজেকে মৃত্যুপথের অভিযাত্রী বলে পরিচয় দিতে ভালবাসে সে।
একে একে খুন হয়ে গেল সবাই। মরিয়া হয়ে খুনীর পিছু নিল চায়না।
ওদিকে এক বছর ধরে খুনীটার হাতে বন্দী হয়ে আছে এরিয়েল।
কে উদ্ধার করবে তাকে?
চায়না কি পারবে প্রতিশোধ নিতে?
নাকি নিজেও খুন হয়ে যাবে?
থ্রিলার-সম্রাট ডিন কুন্টজের অন্যতম বেস্টসেলিং রোমাঞ্চপন্যাস।
এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেলার মত।
আগ্রহী পাঠকদের জন্য নিচে বইয়ের কিছু চুম্বক অংশ তুলে দেওয়া হলঃ
"সাইকোলজির শিক্ষাকে অগ্রাহ্য করে ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়ের কথাই শোনার সিদ্ধান্ত নিল চায়না। লঘু, নিঃশব্দ পায়ে বিছানার পাশে হাটু গেড়ে বসল সে, তারপর গুড়ি মেরে ঢুকে পড়ল বিছানার নিচে। খাটটা পুরানো ধাঁচের, এ বাড়ির বেশিরভাগ আসবাবপত্রের মতই। চায়নার কপাল ভালই বলতে হবে, খাটটা আর এক ইঞ্চি নিচু হলেই চায়নার জায়গা হত কিনা সন্দেহ।
বাইরের করিডোরে পায়ের শব্দ থেমে গেল কোথাও, শুনতে পেল সে। ডোরনব ঘোরানো হচ্ছে, তারপর ক্যাঁচ করে একটা শব্দ। দরজা খুলে গেল একটা। কিছুক্ষণ চুপচাপ। বুকে হেটে খাটের নিচে আরও ভেতরের দিকে সরে এল চায়না।
করিডোরে আবার পায়ের শব্দ। চায়নার রুমের সামনে এসে থামল।
দরজা খুলে দিল কেউ। খুট করে শব্দ হল। আলো জ্বলে উঠল।
ঘাড় কাত করে শুয়ে আছে চায়না, ডান কান চেপে আছে কার্পেটের সাথে। খাটের নিচ থেকে একজোড়া কাল বুট আর তার উপর নীল জিনস চোখে পড়ল।"
----------------------------------------
"মিঃ ভেসের বেশিরভাগ শিকারে সময় লাগে তিন দিনের মত, কখনও কখনও পাঁচ দিন। কুকুরগুলোর জন্য স্বয়ংক্রিয় ভাবে দশদিনের খাবার সরবরাহের ব্যবস্থা আছে, তাও ইদুর বা খরগোশ ছাড়া। নিরাপত্তা প্রহরী হিসেবে কুকুরগুলোর দক্ষতা অতুলনীয়। যান্ত্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় যেসব ঝামেলা, যেমন শর্ট সার্কিট, নষ্ট হয়ে যাওয়া সেন্সর ইত্যাদির কোন বালাই নেই।
তাছাড়া ভেসের প্রতি কুকুরগুলোর ভালবাসারও কোন তুলনা হয় না। ওরা তাকে যেমন নিঃশর্তভাবে ভালবাসে সেটা কোন ইলেকট্রনিক যন্ত্রের কাছ থেকে আশা করা যায় না। তার কাপড়ে লেগে থাকা রক্তের গন্ধ পেয়েছে ওরা এখন, রেইনকোটের তলায় নাক ঢুকিয়ে আগ্রহের সাথে শুঁকছে। শুধু রক্ত নয়, তার শিকারদের আতঙ্ক, যন্ত্রণা, অসহায়ত্ব- এসবের গন্ধও পেয়েছে ওরা। এসব গন্ধ কুকুরগুলোকে শুধু উত্তেজিতই করে না, ভেসের প্রতি ওদের সমীহ আরও বাড়িয়ে তোলে। শুধু আত্মরক্ষা বা খাবার সংগ্রহের জন্য খুন করতে শেখানো হয়নি ওদের, বরং হত্যা করার ভিতর যে তীব্র আনন্দ আছে সেটা উপভোগ করতে শেখানো হয়েছে। ওরা এটা জানে যে তাদের মনিব হিংস্রতায় তাদের চাইতে কম যায় না, আর কিভাবে খুন করতে হয় সেটা তাদের মনিবকে শিখতে হয়নি। ভেসকে আরও সমীহ করতে শুরু করবে ওরা এখন, তাদের মৃদু কুই কুই আওয়াজ আর বিস্মিত বোবা চোখে তার প্রমাণ স্পষ্ট।
মিঃ ভেস সোজা হয়ে উঠে দাঁড়াল। শটগানটা হাতে তুলে নিল, তারপর বন্ধ করে দিল গাড়ির দরজা।"
------------------------------------------
"এইবার তাকে আর ঝুঁকতে হল না। যতটুকু পারল সোজা হয়ে দাঁড়াল, তারপর পিছন দিকে দৌড়ে গিয়ে পিলারগুলোর সাথে বাড়ি মারল। কুশনগুলো আঘাত কিছুটা কমিয়ে দিল ঠিক, কিন্তু যথেষ্ট হল না সেটা। এমনিতেই সারা দেহে অজস্র আঘাত পেয়েছে সে, কুশনের সাইজ যদি দ্বিগুনও হত তাহলেও তাহলেও কোন লাভ হত না। থামল না সে, কারণ ভয় পাচ্ছে যে থামলেই সমস্ত ব্যথাগুলো এক জোট হয়ে থামিয়ে দেবে তাকে, আর উঠতে দেবে না। খুব দ্রুত শক্তি ফুরিয়ে আসছে তার। চোখের সামনে কাল পর্দা নেমে আসতে চাইছে। সময়ও নেই খুব বেশি। ব্যথায় গোঙাতে গোঙাতে আবার বাড়ি মারল সে, তারপর আবার। মনে হল দেহের ভেতর তার হাড়গুলোকে ধরে কেউ ঝাকাচ্ছে এক সাথে, চেষ্টা করেও নিজের গলা থেকে বেরিয়ে আসা আর্তনাদ থামাতে পারছে না সে। ওদিকে জানালার বাইরে কুকুরগুলো আবার হন্যে হয়ে উঠেছে, জানালায় খামচাচ্ছে বার বার। কিন্তু থামল না চায়না..."
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:২৭