somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শেখ হাসিনা ছাড়া আওয়ামীলীগ দলের ভবিষ্যৎ কী হতে পারে?

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ভোর ৪:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শেখ হাসিনা যদি পুনরায় ক্ষমতায় ফিরে আসে তাহলে এই ঘটনা হবে একটা অলৌকিক ঘটনা। শেখ হাসিনার ক্ষমতা ফিরে পাওয়া বলতে গেলে একটা অসম্ভব ব্যাপার। জাতিসংঘের রিপোর্ট প্রকাশ থেকে বোঝা যায় যে আন্তর্জাতিক মহল তাকে স্থায়ী ভাবে মাইনাস করেছে। তাহলে সেই ক্ষেত্রে সামনের দিনগুলিতে আওয়ামীলীগ দলটা কি সফলভাবে রাজনীতি চালিয়ে যেতে পারবে?

শেখ পরিবার ছাড়া এই দলের ঐক্য ধরে রাখা কঠিন হবে। আবার শেখ পরিবার হাল ধরলে সাধারণ জনগণ তাদের গ্রহণ করবে না। শেখ হাসিনা ভারত থেকে ভিডিও কল করে কি দলকে উজ্জীবিত করতে পারবে? আসলে পারবে না। শেখ হাসিনা ভাবছে যে আমলা এবং পুলিশের বড় অংশ তাদের সাথে আছে। কিন্তু এখানে শেখ হাসিনা হিসাবে ভুল করেছে। সামরিক এবং বেসামরিক আমলাদের চোখ উল্টাতে বেশী সময় লাগে না। এই আমলা এবং পুলিশই আগামী সরকারের কথা মত উঠবে আর বসবে।

একটা দল টিকতে হলে সাংগঠনিক বন্ধন লাগে। আওয়ামীলীগের সেটা আছে। কিন্তু আরেকটা জিনিস লাগে, সেটা হল আদর্শ। আওয়ামীলীগ মনে করে তাদের আদর্শ আছে। কিন্তু তারা যেটাকে আদর্শ বলে সেটা হল আসলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দেবতার পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার চর্চা এবং মুক্তিযুদ্ধকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য ব্যবহার। ১৯৭৫ সালে তারা বলতো আইনের শাসন না শেখ মুজিবুরের শাসন চাই। তারা তাদের শাসন প্রক্রিয়াকে মুজিববাদ নামকরণ করেছিল। অথচ শেখ সাহেব প্রচণ্ড রকম ব্যর্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত নিজের জীবন পর্যন্ত হারান। তিনি শুধু ব্যর্থই ছিলেন না, তার প্রশ্রয়েই আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগ, রক্ষীবাহিনী ইত্যাদি দল এবং বাহিনী দেশে খুন এবং অরাজকতা তৈরি করেছিল। উনি জানতেন যে তার দলের লোক এগুলি করছে অথচ সেই আওয়ামীলীগ দল ছাড়া তিনি বাকি সব দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। উনি নিজের দলের ঊর্ধ্বে উঠতে পারেননি কখনও। তাজউদ্দীনের মত ত্যাগী নেতাকে উনি ক্ষমতাহীন করেছিলেন। যে তাজউদ্দীন না থাকলে মুক্তিযুদ্ধ কোন পথে যেত ভাবা যায় না।

গত সাড়ে ১৫ বছরে আওয়ামীলীগের আদর্শ কী ছিল? তাদের আদর্শ ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর শেখ সাহেবকে বিক্রি করে রাজনীতি করা। এটা হল বাহ্যিক দিক। আর প্রকৃতপক্ষে তারা নিমজ্জিত ছিল অসংখ্য খুন, গুম, পাশবিক নির্যাতন, দুর্নীতি, লুটপাটে, যার মাত্রা ছিল পূর্বের যে কোন সরকারের চেয়ে বহু গুণ বেশী। শেখ হাসিনা সমাজের ১০% লোককে খুশি রেখে বাকি ৯০% লোককে বঞ্চিত করেছে। ক্ষমতার বিনিময়ে ভারতের কাছে দেশ বিক্রি করে দিয়েছে তারা। এই আদর্শ নিয়ে একটা দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া অনেক কঠিন কাজ। তাদের দলের তরুণ প্রজন্ম মাথায় হেলমেট, হাতে হাতুড়ি, শটগান আর পিস্তল নিয়ে পুলিশের পাশে দাড়িয়ে ছাত্র-জনতার উপরে নির্যাতন চালিয়েছে বিভিন্ন সময়ে। দিনে দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের গায়ে হাত তুলেছে। এই আদর্শ দিয়ে এই দল কিভাবে আগাবে।

তাহলে ভবিষ্যৎ কি এই দলের? শেখ হাসিনা বাংলাদেশে সশরীরে রাজনীতি করতে না পারার কারণে দল চালানো কঠিন হবে। শেখ হাসিনা যত দিন জীবিত আছেন ততদিন উনি দলের দায়িত্ব অন্য কাউকে দিবেন বলে মনে হয় না। ওনার মৃত্যুর পরে দলের হাল ধরার মত কেউ থাকবে না। দলের মধ্যে তখন ফাটল ধরার সম্ভবনা বেশী। আওয়ামীলীগের আদর্শবান নেতাদের অনেক আগেই হাসিনা দূরে ঠেলে দিয়েছেন। তাই এই দলের ভবিষ্যৎ ভালো মনে হচ্ছে না।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১২:০১
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অদৃশ্য দোলনায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৯ শে মার্চ, ২০২৫ সকাল ৮:৩৮



ভোরের রোদ্র এসে ঘাসের শিশিরে মেঘের দেশে চলে যেতে বলে
শিশির মেঘের দেশে গিয়ে বৃষ্টি হয়ে ঘাসের মাঝে ফিরে আসে-
বৃষ্টি হাসে শিশিরের কথায়। তাহলে আমরা দু’জন কেন প্রিয়?
এক জুটিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লায় দেছে!

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৯ শে মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১২:০৯



আল্লায় দেছে। কথাটার মানে হচ্ছে- আল্লাহ দিয়েছেন।
হ্যা আল্লাহ আমাদের সব দেন। এই দুনিয়ার মালিক আল্লাহ। আল্লাহ আমাদের দুনিয়াতে পাঠিয়েছেন শুধু মাত্র তার ইবাদত করার জন্য। কিন্তু মানুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ড. ইউনূসকে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান....

লিখেছেন জুল ভার্ন, ২৯ শে মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪

ড. ইউনূসকে পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান....

বাংলাদেশ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে চীনের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয় সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করেছে। শনিবার (২৯ মার্চ) এক বিশেষ অনুষ্ঠানে ক্ষুদ্রঋণ ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

ড. ইউনুস: এক নতুন স্টেটসম্যানের উত্থান

লিখেছেন মুনতাসির রাসেল, ২৯ শে মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭


ড. মুহাম্মদ ইউনুস ধীরে ধীরে রাজনীতির এক নতুন স্তরে পদার্পণ করছেন—একজন স্টেটসম্যান হিসেবে। তার রাজনৈতিক যাত্রা হয়তো এখনও পূর্ণতা পায়নি, তবে গতিপথ অত্যন্ত সুস্পষ্ট। তার প্রতিটি পদক্ষেপ মেপে মেপে নেয়া,... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রধান উপদেষ্টার চীন সফর কেমন হলো ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৯ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ৮:৪৮


প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস এখনো চীন সফরে রয়েছেন। চীন সফর কে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে এক শ্রেনীর মানুষের মধ্যে ব্যাপক হাইপ দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এমন সাসেক্সফুল সফর আর কোনো দলের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×