...... পূবের আকাশ ঘোলা হতে শুরু করে।মেঘের হস্তক্ষেপ বাড়তে বাড়তে ঘোলাটে ভাবটা হয়ে ওঠে ধূসর, এরপর কালো। কেশ-কালো মেঘ দুড়মুড় করে, শুরু হয় আকাশের জল ফেলা। ঝুমঝুম ঝুমঝুম, পড়ছে তো পড়ছেই, অবিরাম। বারান্দায় ঝুলিয়ে রাখা অর্কিডের সেই পুরোনো টবটাও ভিজে কেমন চকচকে দেখাচ্ছে। নবনী শুধু দেখতেই থাকে। জানালা ঘেষে বেড়ে ওঠা ইউক্যালিপটাসটা ঝোড়ো হাওয়া আর আকাশভাঙা জলের তোড়ে নেচে চলেছে শাখা দুলিয়ে দুলিয়ে। ভিজে চুপচুপে চারপাশ আর সাথে সোঁদা গন্ধের মিশেল সব মিলে নবনীর কেমন স্বর্গ স্বর্গ লাগে। বুকের ভেতর কোথায় যেন ফাঁকা ফাঁকা ভাবটা খুব বেশি প্রভাবশালী হয়ে উঠতে থাকে। ছোট্ট জীবনে দেখে ফেলা অনেক ক'টা স্বপ্নের একটা স্বপ্ন বার বার ওকে কুড়ে কুড়ে খেতে থাকে। ইশ, ও যদি একটা বার ওই মানুষটাকে সাথে নিয়ে, তার হাতে হাত রেখে ইউক্যালিপটাসটার মত নাচতে পারত। থাক, নাচানাচি না হোক, অন্তত ওই স্থির অর্কিডখানার মতই..... তার হাতদুটো ধরে রেখে স্থির দাড়িয়ে আকাশী জল মাখতে পারত। ইশ......
আর না পেরে সব প্রতিজ্ঞা ভুলে নবনী ডায়াল করে বসে চিরচেনা সেই ১১ ডিজিটে। বেজে যাচ্ছে, বেজে যাচ্ছে, নাহ টুট টুট শব্দ ছাড়া আর কোন আওয়াজ আসেনা। সেই গলাটা শোনা হয় না নবনীর।নিজেকে সঁপে দেয়া ভালবাসা উপেক্ষা করে চলে যাওয়া মানুষটা সত্যিই ভীষণভাবে ওকে ভুলে গেছে। ভালবাসার টানে যতবার নবনী ফেরে ততবারই দেখে শুধু শূন্যতা। ওকে ছেড়ে ঠিকই পারছে মানুষটা। দুর্বল নবনী গুঁড়িয়ে যেতে থাকে, শীতের পাতাঝরা গাছগুলোর নিঃস্ব, রিক্ত হতে থাকে ধীরে ধীরে.. ....কি কষ্ট, কি কষ্ট .....
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১:৫৮