তা্জহাট রাজবাড়ী, রংপুর এর সবচেয়ে বিখ্যাত জায়গা.......বেগম রোকেয়ার স্মৃতিবিজড়িত বাসা'র অনেক কাছে এর অবস্থান... আমার জন্ম রংপুর এ...তাই রংপুর নিয়ে মাঝেমাঝেই লিখব...আজ রাজবাড়ী নিয়ে লিখছি:
ইতিহাস:
মহারাজা গোপাল চন্দ্র রায় এর নির্মাতা...বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে এটি নির্মীত হয়...মহারাজা গোপাল চন্দ্র রায় ভারত থেকে এসেছিলেন এবং একজন স্বর্ণকার ছিলেন....তাই তার পেশা (তাজ/স্বর্ণ) থেকে এই রাজবাড়ীর নাম তাজহাট হয়েছে বলে ধারনা করা হয়। তিনি অনেক অত্যাচারী ছিলেন বলে ধারনা করা হয়.... রাজবাড়ীর প্রবেশ পথটি এখন পিচঢালা তবে একসময় সেখান দিয়ে সবাই জুতা খুলে বগলে নিয়ে হাটত... এই রাজবাড়ী অনেক দিন পর্যন্ত এই এলাকার প্রাণ ছিল।
গঠন:
রাজবাড়ী সর্বমোট ২১০ ফুটের মত প্রশস্ত ও চার তলার সমান উচুঁ..... এর গঠনশৈলী প্রাচীন মুঘল সাম্রাজ্য থেকে অনুপ্রাণিত মনে করা হয়... এর প্রমাণ মেলে মাঝে বিশাল একটা গম্বুজ ও ২ পাশে তার ছড়িয়ে যাওয়া দালান গুলোর একটা মসজিদ এর অবয়ব তৈরী হওয়া থেকে.........তবে রাজবাড়ী যেই দিক থেকে সব রাজবাড়ী থেকে আলাদা তা হল এর সিড়িগুলো....সর্বমোট ৩১ টি সিড়ি আছে যার প্রতিটাই ইটালিয়ান ঘরানার মার্বেল পাথর এ তৈরী.... অসম্ভব সুন্দর এই সিড়ি গুলো....সিড়ি থেকে উঠে মিউজিয়াম পর্যন্ত মেঝের পুরোটাও একই পাথর এ তৈরী.....
রাজবাড়ীর পিছনে গুপ্ত সিড়ি দেখতে পাবেন যেটা রাজারা বিপদের সময় পালানোর সময় ব্যবহার করার জন্যে তৈরী করেছিলেন....এই গুপ্ত সিড়ি কোন একটা সুড়ংগের সাথে যুক্ত যা সরাসরি ঘাঘট নদীর সাথে যুক্ত এমন একটা জনশ্রুতি শুনেছি তবে সিড়ি টা এখন নিরাপত্তা জনিত কারনে বন্ধ থাকায় সত্যতা যাচাই করতে পারিনি।
রাজবাড়ীর আরেকটা সুন্দর জিনিস এর ফোয়ারা টা......কালের বিবর্তন এ শ্বেতশুভ্র মার্বেল ও তার সবুজাভ নকশা কিছুটা মলিন হলেও এখনো এর জৌলুস বুঝা যায় পুরোপুরি। কথিত আছে রানী'র জন্যেই বিশেষ করে এটি নির্মাণ করা হয়েছিল।
কিভাবে যাবেন :
যাওয়া খুব সহজ..... ঢাকা / যেকোন জায়গা থেকে রংপুর চলে আসুন এরপর যেকোন রিকশাও্য়ালা কে বললেই নিয়ে আসবে এখানে......প্রবেশ ফি : বাংলাদেশী হলে ১০টাকা ও বিদেশী হলে ২০ টাকা।
তথ্যসুত্র: উইকিপিডিয়া এবং রংপুর এর ইতিহাস ও বিভিন্ন সময়ে শোনা জনশ্রুতি