আজ ২৯মে তারিখে প্রয়াত অভিনেতা হুমায়ূন ফরীদির জন্মদিন ।তার একদিন হঠাৎ (৮৬)নাটক দেখে ফ্যান হয়ে গেলাম ।মহুয়ার মন (৮৬) নাটকে তার অভিনয় দেখে মুগ্ধ হয়েছিলাম ।নাটক দুটি দেখেছিলাম ১৯৯০ এর দিকে ।তারপর একটা সময় তার অভিনয়ের সামনে অন্যদের অভিনয় পানসে মনে হতে থাকলো ।কান কাটা রমজান চরিত্রটিই বোধ হয় তার সবচেয়ে সেরা কাজ । তাকে নিয়েই এই কবিতা । জন্ম একটি আনন্দ দায়ক ঘটনা ।নবজাত শিশুটিই কেবল কেঁদে ওঠে আর সবাই আনন্দের জোয়াারে ভাসতে থাকে । এমনই এক আনন্দময় পরিবেশে ১৯৫২ সালের ২৯মে প্রয়াত কিংবদন্তীর অভিনেতা হুমায়ূন ফরীদি ঢাকা জেলায় জন্ম গ্রহণ করেন। প্রয়াত মানুষের জন্মদিন ঘিরে আজকের কবিতা প্রচেষ্টা । তাই হয়তো কবিতায় বিষাদের ছায়া সুস্পষ্ট ।
হুমায়ূন ফরীদি , মায়ার পৃথিবী ছেড়ে —অসময়ে চলে গেলে
বড্ড অসময়ে!!
চলে গেলে দূর নক্ষত্রের দেশে ।
আর স্মৃতির বনে রেখে গেলে শূন্যতা ঢের;
তুমি করলে জয়, অগনিত মানব হৃদয়,
তাই আজও থেকে গেলে অক্ষয়,
স্মৃতির ললাটে পরালে অবিনাশি টিপ
ব্যর্থতা চাপালে প্রাণসংহারি মরণের প্রয়াশে ।
রূপোলী পর্দার আলোয়
কাঁদালে,
হাসালে,
আনন্দে ভাসালে,
এভাবেই আকস্মাৎ হলো শেষ
তব জীবনের অবশেষ ।
আর থেকে গেলে সাফল্যের শিখরে
মরণেরও পরে।
চলার পথে আলোকবর্তিকা জ্বেলে
হয়ে গেলে বরণীয়—যাদুর পাখা মেলে ।
হুমায়ূন ফরীদি,
তুমি ‘চন্দ্রগ্রস্ত’ তুমি ‘সংশপ্তক’
তুমি ‘মহুয়া’র সাজে কিংবদন্তী সাজা;
তুমি ‘তিনি একজন’ এর বিলাসী আল্পনা
‘কোথাও কেউ নেই’য়ের ধূর্ত উকিল
‘শ্যামল ছায়া’র ছায়া
তুমি ‘সমুদ্রে গাঙচিল’
তুমি ‘বিশ্বপ্রেমিক’...
‘ভূমিকা’র বিরহী চরিত্র
‘সন্ত্রাস’ এর রামরাজত্ব সাজা
লজিং মাস্টার চরিত্রে অনবদ্য...
তুমি মঞ্চনাটকে অতুলনীয় — অভিনয় জগতের রাজা!
চলে গেলে না ফেরার দেশে
দু’চোখের আড়ালে ।
তবু অভিনয়ে অভিনয়ে মুগ্ধতা মেখে দিলে চোখে!
কখনো বেদনা দিলে এঁকে বুকে
আনন্দ বেদনার বেনাজল ঢেলে—অগণিত মানুষের দু’চোখ ভরালে,
হৃদয় জুড়ালে;
এই দিনে — তুমি এলে
স্মৃতিঘেরা ঊনিশ’বায়ান্নে,
আসা যাওয়ার রংমহলে ;
এলে সবুজ শ্যামল বাংলা মায়ের কোলে।
প্রথম যৌবনে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিলে
অতঃপর বিচিত্র সব চরিত্রের অসাধারণ রূপায়ন করলে রঙিন পর্দায়!
মন্ত্রমুগ্ধ করলে আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা।
আহা!!
সবটুকু জৌলুস সুধা নিয়ে
মায়ার পৃথিবী ছেড়ে বড্ড অসময়ে চলে গেলে !!