১। দুটো অন্ন
আমি সহজ করে দুটো অন্ন চেয়েছিলাম
সে অন্নের পথ সুপ্রসন্ন হয়নি
তোমরা ছিটালে চিটা বীজ
ক্ষেত জুড়ে ধান নেই
তোমরা খাও পনির চীজ।
আমি হই রোগে শোকে কাতর
তোমরা বাঁধো অষ্টভূজি পাথর
আমার আছে তালিতাপ্পি ঘর
তোমরা সাজো রুপকুমারীর বর।
আমি এখনো ছাউনি ঝরা পানি
তোমাদের কথা শুনি অষ্টজ্ঞানী।
২। সহজ জীবন
ভেবেছিলাম দাঁড়ি কমা সেমিকোলন দিয়ে জীবন চালাবো না
তাই ক্রমাগত বাঁধা ডিঙ্গিয়ে পাড় হয়েছি
এখন বাঁধাগুলো জড়োসড়ো হয়ে পাহাড় হয়েছে
পাহাড় ডিঙ্গোনোর কোন কসরত জানি না
ফুরসত পেলে এখন পাদদেশে বসে পড়ি
চিৎকার করে বলি পাহাড় সরে যাও
পাহাড় সরে না এত অল্পতে হিমালয় টলে না।
তাই ভেবেছি এখন আর বাঁধা ডিঙ্গোবো না
পারলে বাঁধাই আমাকে ডিঙ্গিয়ে যাবে
সহজ জীবন সরল করে চলতে
এর চাইতে উপযুক্ত কোন তরিকা জানা নেই।
৩। যাবার আগে
এমন কোন ঘর বাঁধিনি যা শয়নের জন্য পরিপাটি হবে
এমন কোন খাল কাটিনি যা নদী থেকে জল আনবে
পূর্বপুরুষের মত পরিকল্পনা সব নগরবিদদের হাতে
ওদের ঘরদোর বাহির বারান্দা হাওয়া মহল
সব ধূপধাপ করে গড়ে উঠে।
আমার ঘরদোর নেই একটা ভাঙ্গা পালংকও নেই
চাইলে যেকোন পথে যে কোন ঘাটে থাকতে পারি
সামন্তবাদ আমাকে এই স্বাধীনতাটুকু দিয়েছে।
শুনেছি দেশ থেকে অবিশ্বাসীদের তাড়ানো হচ্ছে
আমাকে বিতাড়িত করার আগে একবার শুধু ইংগিত দিবেন
আমি আপনাদের নিয়মতন্ত্রশালায় কয়েকপ্রস্থ কালো চিকা মেরে যাবো।
৪। বিরামচিহ্ন
আমার বিরামচিহ্ন বসে আছে সন্মুখে। আমি আর এর বাইরে যেতে পারিনা। এর বাইরে আমার বিকাশ নেই। প্রকাশ নেই। কলমের ডগায় জমছে বরফ।
সেই কবে থেকে স্টেশনে বসে আছি। আমার অতিথি নেই। আসার প্রয়োজনও বোধ করেনি। তাই নম্বরবিহীন ট্রেনের কথা বলে টেলিগ্রাম করেছে। আমি বসে আছি অজানা স্টেশনে। এর বাইরে আমার গন্তব্য নিষেধ।
মাঝরাতে স্বপ্নে কে জানি আসে। আমার স্বপ্ন থামিয়ে বলে, অনেক হয়েছে। এবার থামো। এরপর স্বপ্ন দেখা বন্ধ।
আমি বসে আছি অজানা ঘরে বন্ধ্যা কলম আর দৃষ্টিসীমা নিয়ে।
৫। ভয় হয়
কতটা তলিয়ে গেলে ওঠা সম্ভব নয় জানি না
আমি তলিয়ে গেছি হাজার দৃষ্টি সীমার বাইরে
একদিন সৃষ্টিতে ছিলাম সোহাগে ছিলাম
এখন ভরা নদীর মাঝে অথৈই জলে।
পাল টেনে যায় বিষাদ বাতাস
আকাশ দেখায় নীল গিরিখাঁদ
মেঘের বুকে বিজলীর প্রতাপ
তাই ভয় হয় আমার ভয় হয়
আমার তরী যেন আমার নয়।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই মে, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৫