somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-বডি মডিফিকেশন (কত অজানা রে পার্ট-৩৪)

১২ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৮:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বডি মডিফিকেশন !! অনেক প্রাচীন কাল থেকেই পৃথিবীর বিভিন্ন কালচারের সাঠে মিশে আছে এই অদ্ভুত রীতিনীতি। আজ আপনাদের জানাবো বডি মডিফিকেশনের তেমন কিছু জাতির কথা। চলেন যাই ...


১) Ear stretching


এটি বলা অসম্ভব যে কে প্রথম মানুষ যে এটি করেছিল বা কেন তারা তা করেছিল। আজ বর্তমান বিশ্বের অনেক দেশের অনেক সংস্কৃতির মানুষ বিভিন্ন কারণে কান লম্বা করার এই শিল্প অনুশীলন করে আসছে। কেন এটা করেছিল তা জানা না গেলেও মনে করা হয় ধর্মীয় বিশ্বাস, শয়তানের দৃষ্টি থেকে মুক্তি, যৌন শক্তি বৃদ্ধি এবং শারীরিক সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য এটি করা হতো। তবে কারন ভিন্ন হলেও সমস্ত বিশ্বের মানুষ এখনো কান লম্বা করার এই কালচারের অভ্যাস করে আসছে। কেনিয়া Masai উপজাতিদের থেকে আমাজন বেসিন Huaorani উপজাতি সবখানেই কান লম্বা করতে দেখা যায়। যাই হোক, আমাদের দেশে বর্তমানের জেনারেশনের অনেকেই কানে দুল পরে, অচিরেই আমরা লম্বা কানের জেনারেশন দেখতে পাব বলে আশা করি।


২) Nose plugs


আমাদের পাশের দেশ ভারতের উত্তরের অরুনাচল প্রদেশের Ziro উপত্যকায় বসবাসকারী Apatani উপজাতির নারীদের ভিতর এই কালচার চলে আসছে। Apanti উপজাতির মহিলাদের অরুণাচলের অন্যান্য উপজাতিদের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর বলে বিবেচনা করা হয়। তারা নাকি এতোটাই সুন্দর ছিল যে অন্য উপজাতির পুরুষরা প্রায়ই তাদের অপহরন করতো। তাই তারা নিজেদের রক্ষার জন্য অসুন্দর হতে এই কালচার শুরু করে। Apanti মহিলারা তাদের নাকের ফুটোয় বড় কাঠের প্লাগ পরতেন। অবশ্য এই কালচারটি এখনকার ২৬,০০০ জনের শক্তিশালী Apatani উপজাতির মেয়েরা চর্চা করে না। ইইইই ...


৩) Facial Scarification


স্থানীয় sorcerer যখন তার গরম ছুরিটা লোকাল Dinka ছেলে-মেয়েদের কালো মুখের উপর চালায় তখন তারা কান্নাকাটি করে না। কারন যদি তারা করে তাহলে সমাজে তাদের সম্মান হারাবে। মুখের scarification এর এই কালচার সুদানে সর্বত্রই হয়ে থাকে। এটি পুরুষদের ক্ষেএে ভিন্ন ভিন্ন উপজাতির পরিচয় বহন করে আর মেয়েদের জন্য এটি সৌন্দর্যের বিষয়। ঞঁ !!! আল্লাহ আমাদের দেশে যদি হইতো !!!

Dinka উপজাতিয় পরিচয়ের জন্য পুরুষেরা তাদের মুখে তিনটি প্যারালাল লাইনের স্থায়ী দাগ তৈরি করে। পুরুষত্বের প্রমান হিসাবে Dinka জাতির মানুষ কৈশোর বয়সে এই scars করেন, এটি করে তারা দায়িত্বপালনের যোগ্য তা প্রকাশ করে, মানে পুলায় এখন বিয়া করবো।


৪) Mediums activities


কিছু কিছু মানুষের জন্য, এইটা ভয়াবহ বিভৎষ বিষয় হতে পারে কিন্তু স্থানীয় Thais দের জন্য এটি পুরোপুরি স্বাভাবিক একটা ব্যপার। এই অনুষ্ঠানটি "সাবালকত্ব" হওয়ার প্রমানের একটি কালচার যে কারণে তারা এই ব্যথা উপেক্ষা করা. এই তারা যে প্রাপ্তবয়স্ক হয়েছে তা সারা বিশ্বের সামনে প্রকাশের জন্য প্রতি বছর এই অনুষ্ঠান টি হয়ে থাকে।

Phuketতে "The vegetarian festival" নামের একটি উৎসব হয় যাতে চাইনীজ ধর্মীয় চর্চার গুরুত্ব অনেক বেশী থাকে(লাইনটা আমি ঠিকমত বুঝাইয়া অনুবাদ করতে পারলাম না বলে সরি)। প্রতি বছরের অক্টোবরে দক্ষিণ থাই দ্বীপ Phuketতে এটি অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক ইভেন্টটি হলো একটি মিছিল বা র‌্যালী যা রোজ সকালে অনুষ্ঠিত হয়। মিছিল চীনা দেবতা "mediums" এর সন্তুষ্টির জন্য পুরুষরা তাদের ব্যথা সহ্য করে থাকে। Mediums ফলোয়াররা ধারালো বস্তু (বেশিরভাগই ধাতু অবজেক্ট) দিয়ে তাদের দেহে এফার-ওফার করে থাকে। এছাড়া তারা জলন্ত কয়লা ও ধারালো তলোয়ারের উপর দিয়েও খালি পায়ে হাটে।

কথা হলো, ক্ষততো কয়েকদিনের ভিতর সেরে যায় কিন্তু দাগ থেকে যায়। (আমাদের দেশে চরকপুজায় এমন ভাবে পিঠে বড়ষি গেথে একটা উৎসব হয়)


৫) Teeth Sharping


আমি ডেন্টিষ্ট হইয়া শড়ম পাইলাম।কিন্তু দাঁত চুখখা করাও যে আর্ট হইতে পারে তা আমিও আজ জানলাম। ঐতিহাসিকভাবে, অনেক সংস্কৃতির মানুষের ভিতর শরীরের এই মডিফিকেশনের রেওয়াজ আছে। বালি দ্বীপের মানুষরা বিশ্বাস করে দাঁত মানুষের রাগ, ঈর্ষা, এবং অন্যান্য নেতিবাচক আবেগের প্রতিনিধিত্ব করে। এছাড়াও বিভিন্ন ভিয়েতনামি এবং সুদানী উপজাতিদের ভিতরে অনুরূপ আধ্যাত্মিক চর্চা করতে দেখা যায়। মায়ান সংস্কৃতিতে শ্রেণী পার্থক্য বুঝাতে দাঁতের বিভিন্ন শেপ দেওয়া হতো। মধ্য-আফ্রিকার অনেক উপজাতির ভিতর বিভিন্ন প্রানীর দাঁতের শেপের অনুকরনে প্রচলন আছে। অনেকে কুমীরের দাঁতের শেপে দাঁত বানায়, অনেকে সিংহের দাঁতের শেপে আবার অনেকে সাপের দাঁতের মত করে দাঁত মডিফিকেশন করতো।


৬) The alligator skin scarification


Scarification সারা বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন উপজাতির মানুষ করে থাকে। তবে পাপুয়া, নিউ গিনি Sepik নদী উপজাতির পুরুষরা ব্যাপকভাবে এর চর্চা করে থাকে। দীর্ঘ সাতদিন জনসমক্ষে অপদস্থের হওয়ার পর এ থেকে মুক্তির জন্য একটি ছোট্ট অনুষ্ঠান হয় যা ridiculously বেদনাদায়ক। উপজাতির প্রবীণ সদস্যরা alligator এর চামড়া অনুকরণে একটি প্যাটার্ন তাদের নবীন পুরুষ সদস্যদের পিঠে তৈরি করে। কোন রকম এনেসথেসিয়া ছাড়াই ব্লেড ব্যবহার করে তারা এটি করে থাকে। তারা এটি করে থাকে নদীর alligatorদের ধোঁকা দেওয়ার জন্য যাতে তাদের নবীব ছেলেরা বড় হতে পারে। কাহিনী হলো যদি এলিগেটর তাদের পিছন থেকে দেখে তাহলে তাদের সেই ছেলের পিঠের শেপ দেখে আর একটা alligator মনে করবে। কি বুদ্ধি !!!


৭) The lip plate


আমি ব্যাক্তিগত ভাবে মেয়েদের নাকে নাকফুল পড়াটা খুব পছন্দ করি। মনে পড়ে গেল, জীবনের প্রথম কামাই দিয়ে মাকে ডায়মন্ডের নাক ফুল কিনে দিয়েছিলাম। কিন্তু সৌন্দর্যের
জন্য কেও ঠোঁট কেটে কাঠের বা মাটির প্লাগ শুধু সুদান ও ইথিওপিয়া (১৭০০ বিসি), Mesoamerica (১৫০০ বিসি), এবং উপকূলবর্তী ইকুয়েডর (৫০০ খ্রিস্টপূর্ব) বিভিন্ন উপজাতিদের ভিতরই দেখা যায়। আজকের দিনে শুধু মাএ আফ্রিকা এবং Amazonia এর কয়েকটি ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠির ভিতর এটি দেখা যায়।

আফ্রিকায়, মুলত নিচের ঠোটে একটি কাঠের প্লাগ বসানো হয়। তারা ঠোঁটের ফাকের আড়াআড়ি মাঝের দুই দাঁতের বা চার দাঁতের সমান করে চামড়া কেটে ছিদ্র তৈরি করে। Sara ও Lobi উপজাতির মেয়েরা উপরের ঠোঁটেও এরও একটি প্লেট বসায়। অন্যান্য উপজজাতির মেয়েরা যেমন Makonde মেয়েরা একটা প্লেট পড়ে। ইতিহাস বলে যে এই প্লেটের সাইজ ঐ পরিবারের আর্থ-সামাজিক অবস্থা ও গুরুত্ব রিপ্রেজেন্ট করে।


৮) Giraffe women


এর কথা কম বেশি সবাই জানে। নর্দার্ন থাইল্যান্ড Kayan নারীরা তাদের গলায় পিতলের কয়েল পরে। তাই তাদের "long necks" বা the "giraffe women" বলা হয়। অনেক মেয়েরা ২৫টা পর্যন্ত কয়েল পরে যা তারা সারা জীবনেও খুলে না।

মিথ বলে যে এই কয়েল নাকি খুলা যায় না। কিন্তু আসলে এটি সত্যি না। তারা গলা পরিষ্কার ও কয়েল পরিষ্কার করা ও রিপেয়ার করার জন্য এটি খুলে থাকে।

বাচ্চা মেয়েরা ৫ বছর বয়সেই তাদের প্রথম কয়েলটা পরে যার ওজন সাড়ে চার পাউন্ড। পরে আস্তে আস্তে আরও কয়েল যোগ করা হয়। কিন্তু মূল রহস্যটি হলো এই রিং পরলে গলা লম্বা হয়না, বরং রিংটির ওজনে কাধ (ক্লেভিকল) নিচের দিকে নেমে যায়। প্যাথেটিক!!

সিরিজের কয়েকটি -
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-পৃথিবীর প্রাচীন রহস্য যা আজও সমাধান হয়নি (কত অজানা রে পার্ট-৩১)
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়-পৃথিবীর প্রাচীন রহস্য যা আজও সমাধান হয়নি (কত অজানা রে পার্ট-৩২)
পৃথিবীর যত সব আজব-অদ্ভুত ... আজকের বিষয়- বিখ্যাত গ্লাডিয়েটর (কত অজানা রে পার্ট-৩৩)


সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৩:৩৬
২৮টি মন্তব্য ২৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

AI-এর লগে গ্যাঁজাইলাম =p~

লিখেছেন জটিল ভাই, ০১ লা এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৪:১২

♦أَعُوْذُ بِاللهِ مِنَ الشِّيْطَانِ الرَّجِيْمِ (বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহ্'র নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি)
♦بِسْمِ ٱللَّٰهِ ٱلرَّحْمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ (পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহ্'র নামে)
♦ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ (আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক)


(স্ক্রিনসট)

সামহোয়্যার ইন ব্লগ... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালন সাঁইজির আধ্যাতিকতা,পরিচয় ও মানবতাবাদ

লিখেছেন রাবব১৯৭১, ০১ লা এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৪:৪০

লালন সাঁই ছিলেন একজন বাউল সাধক, দার্শনিক ও মানবতাবাদী। তাঁর আধ্যাত্মিকতা মূলত গুরু-শিষ্য পরম্পরা, সাধনা ও অন্তর্জ্ঞানভিত্তিক। তিনি ধর্ম, জাতি, বর্ণভেদ মানতেন না এবং বিশ্বাস করতেন, "মানুষের ওপরে কিছু নাই।"... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ছোট কালের ঈদ।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০১ লা এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৯:০৫



ঈদ মানেই ছিল নতুন জামা, নতুন টাকা আর আনন্দের ঝলক। ছোটবেলার সেই ঈদগুলো এখনো স্মৃতির মণিকোঠায় জ্বলজ্বল করে।



আমার নানা সোনালী ব্যাংকে চাকরি করতেন। আমি তখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

পিটার প্যান সিনড্রোম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০১ লা এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৯:৪২


প্রাপ্তবয়স্ক হয়েও দায়িত্ব নিতে না চাওয়া, বাস্তবতা এড়িয়ে চলা এবং জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত থেকে পালিয়ে যাওয়ার প্রবণতা অনেকের মাঝেই দেখা যায়। তারা শৈশবের মতো স্বাধীন, নিরুদ্বেগ জীবন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপি কি ক্ষমতা কুক্ষিগত করবে না?

লিখেছেন ধূসর সন্ধ্যা, ০১ লা এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১১:২২

ক্ষমতায় আসার পরে বিএনপির আচরণ কেমন হবে?
এই প্রশ্নের উত্তর নিশ্চিত ভাবে দেওয়া সম্ভব না। তবে আমরা কারো আচরণ কেমন হতে পারে সেটা তার অতীত থেকে খানিকটা আন্দান করতে পারি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×