ধরি এক ছিল "ক" আরেক ছিল "খ"
ক খুব ভালো স্কুলে ছোট কাল থেকেই পড়াশোনা করতো , সবসময় ক্লাস টেস্টে হায়েস্ট মার্ক্স পেতো(আসলে স্কুলেই যা গিলিয়ে দেয়া হত তা উগরিয়ে আসতো),বাসায় ৫/৬ টা ভার্সিটির ভাইয়া এসে ইনডিভিজুয়াল সাবজেক্ট পড়াতো ..সেই সাথে বিকেলে আবৃত্তি ক্লাস, নাচের ক্লাস, গানের ক্লাস, ড্রইং ক্লাস তো আছেই ,বছর শেষে ফাস্ট বা সেকেন্ড হতো সেই স্কুল এর বেলা থেকেই .....
খ একটা সাধারন প্রাইমারী স্কুলে ভর্তি হল ,স্কুলের অবাধ স্বাধীনতায় সে বড় হল, স্কুলের পড়াশোনার পাশাপাশি সে খারাপ ভালো যা কিছুই শিখুক সে ভালো এবং খারাপ কে আলাদা এবং সংজ্ঞায়িত করতে শিখলো , স্কুল শেষে বাসায় এসে ভাল্লাগলে পড়তে বসতো অথবা বসতো না , বিকেলে খেলতেও যেতো, বছর শেষে মোটামোটি ২০ এর আশে পাশে থাকলো ........
এই "ক"শ্রেনীর বাচ্চাদের কোমল মনের মধ্যে আমাদের এখনকার অভিভাবক শ্রেনীর যে চাপ, জন্ম হয়েই যে বাচ্চা পাশের বাসার আন্টির ছেলের সাথে কম্পিটিশান ,অমুখ আত্মীয়ের সাথে কম্পিটিশন রেসে লাইফে সে আসলে কি শিখে ...
দিন শেষে ফলাফল , ক্লাস এইটে এ প্লাস মিস করে সুইসাইড ....
অপরদিকে খ শ্রেনীর বাচ্চারা যেখানে যার অভিভাবক তার শুধু ভালো আর খারাপের মাঝে পার্থক্য টা শিখিয়েই এই বিশ্বজগতের পাঠশালায় ছেয়ে দিয়েছে, সে জীবনে কম্পিটিশান কি আসলে জানে না, নিজের জীবনের রাস্তা একসময় নিজেই পছন্দ করে নেয় , কারণ প্রকৃতি তাকে শেখায় ভালো কোনটি আর খারাপ কোনটি , কোন রেইসের মাঝে সে থাকে না ........
তাই দিন শেষে "ক" এর অভিভাবক অবাক হয়ে লক্ষ্য করে "খ"হাসতে খেলতেই এ প্লাস ই পেলো , অথচ তার বাবা মাও তা আশা করেন নি।
আমাদের সমাজের সোশ্যাল স্ট্যাটাস আজকাল এতো গুরুত্বপুর্ন যে ছেলেকে কিংবা মেয়েকে দেশের সেরা স্কুলে না পড়ালে , কিংবা সেরা টিচারের কাছে কোচিং না করালে ,কিংবা কো কারিকুলার এক্টিভিটিসে না থাকলে তার জীবনের ১৬ আনায় ২০ আনাই বৃথা বলে মনে করা হয় .......
শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য সেদিনই পুর্ন হবে, যেদিন বাচ্চারা নিজেই মঞ্চে এসে বলবে,আমি ভালো গান করতে পারি,এখন আমি গান করবো ,মায়ের চোখ রাঙ্গানি আবার বাবার ফেসবুক ও সোশ্যাল স্ট্যাটাস এর মান রাখার জন্য নয় ।
এমন দিনেরই প্রত্যাশায় .............