চলে যাচ্ছে রমজান ২০২২। গত দু'বছরের মহামরী আবদ্ধ জীবন কাটিয়ে এ বছর রমজান যেন কিছুটা সস্তির শ্বাস ফেলেছে। আবার ফিরেছে মানুষ চিরায়ত রমজানের আমেজে। কিছুটা শৃংখলার মাঝেও রমজান আবার এসেছে পুরোনো উৎসব মুখর রূপে। আমি এবং আমার চারপাশ সাজিয়ে গুছিয়ে রাখা এ আমার এক মহা আনন্দবিলাস। তাই রমজানের ইফতারের টেবিল সজ্জা এবং তার ছবি নিয়ে আসি আমি বারবার।
এ আমার ইফতার টেবিল নয়। রমজান উপলক্ষ্যে রমজানের আমেজে সাজানো গৃহকোন। ফেসবুকের একটিভিটিগুলো এবং নানা রকম গ্রুপগুলো আজ বিশ্বব্যাপী সমাদৃত ও সুপরিচিত বটে। কিন্তু আমি তাতে খুব একটা আগ্রহ পাইনা। তবে গৃহসজ্জার একটি অতি মূল্যবান গ্রুপ আছে যা আমার কাছে বিশেষ প্রিয়। সেই গ্রুপেই আমি জেনেছি দেশ বিদেশের নানা উৎসব উপলক্ষে বদলে যাওয় গৃহকোনের সাজসজ্জা সম্পর্কে। সেই গ্রুপে আমি পেয়েছি নানা রকম সৌন্দর্য্যের পরিচয়। তাই আমিও এবারের রমজান এবং বৈশাখী আদলে সাজিয়েছি গৃহকোন।
এই ছবিটা খুব ভালো লাগছিলো তাই জুড়ে দিলাম কিন্তু কিছুতেই সোজা হচ্ছে না। মাহে রমজানের আমেজে তাসবিহ, মোমবাতি বা আগরবাতিতে সাজিয়ে দিলে মনে হয় ভালো হত ভেবেই আমিও সেই স্টাইলই ফলো করার ট্রাই করেছি।
রমজানের প্রথমদিনটি থেকেই এই সজ্জায় ঝলোমলো ছিলো আমার গৃহকোন।
এলো বৈশাখ
বৈশাখে আবার সাজিয়ে দিলাম এই গৃহকোন বৈশাখী আমেজে। রনজান থাকায় বৈশাখের কোনো অনুষ্ঠানে যাইনি সেদিন বটে কিন্তু বৈশাখ পালনে আমার প্রতি বছরের শিশুদের নিয়ে করা কর্মযজ্ঞে ভীষন ভীষন ক্লান্ত ছিলাম আমি।
তবুও থামেনি আমার বৈশাখী গৃহসজ্জা। লাল নীল বৈশাখী সাজ আর নক্সীপিঠা মুরলী সাজিয়ে দিতেও ভুলিনি কিন্তু।
ওহে সুন্দর মম গৃহে আজি পরমোৎসব রাতি ...... হ্যাঁ এ গানটাই আমার মনে বাঁজছিলো এই গৃহসজ্জার সময়টাতে।
রেখেছি কনকমন্দিরে কমলাসন পাতি.......কমলাসন নেই তবে সুন্দর করে চেয়ার টেবিল সাজানো ছিলো আরেক প্রান্তে।
আজ সবার রঙ্গে রঙ মেলাতে হবে
লাল সাদা আর লাল সাদা
আরও থাকুক অন্য কিছু রঙ্গগুলো...
আমার বৈশাখী ইফতার টেবিলের চিত্র
চিরায়ত ইফতার
বেগুনী, পেঁয়াজী, ছোলা, চপ, জিলাপী ফলমূল, হালিম টালিম
এসব ছাড়াও সালাদ ফ্রেঞ্চ ফ্রাইজ, স্যুপ ইন বান, থাই স্যুপ চিকেন স্যুপ এসব এসব করেছি কিছু কিছু দিন ইফতারে...
গোলাপী ইফতার ডেজ
গোলাপ ফুল আর গোলাপী গোলাপী টেবিল ম্যাটের সাজে ইফতারটাই গোলাপী ইফতার নাম দিয়েছি আমি।
মুড়ির সাথে এই পেঁয়াজ, মরিচ, সরিষার তেলের সাজটা কেমন হয়েছে? নিশ্চয় অনেক অনেক সুন্দর তাইনা?
বানের ভেতর মাশরুম স্যুপটা ঠিক করে সাজানো হলো না সেদিন যদিও। টিন ফয়েলে মুড়ানো ছবিটাই তুলতে হলো ঠান্ডা হয়ে যাবার ভয়ে।
এমনি এমনি পুরো টেবিলের ছবি।
গোলাপী দিনের ইফতার টেবিল..
বেগুনী ইফতার ডেজ
মাঝের ঐ সুন্দর মিষ্টির বেগুনী বক্সটার জন্যই এই সাজের নাম বেগুনী ইফতার ডে হয়ে গেলো। এই বেগুনী বক্সটা পাঠিয়েছিলো আমাদের প্রতিবেশী তার প্রবাসী পুত্রের নাতনী হওয়া উপলক্ষে।
টেবিলের আরেক প্রান্তের ছবি ......
বেগুনী ইফতার ডে চিত্র....
লাল নীল ইফতার ডেজ
যদিও লাল নীল হলুদে সবুজে মাখামাখি ইফতার সজ্জা তবুও নাম দিলাম লাল নীল ইফতার ডেজ।
লাল হলুদ সবুজে মুড়ানো খানা খাদ্যের জোরে এত্ত সুন্দর রঙ্গিন ইফতার হয়ে গেলো।
লাল লাল নীল নীল হলুদ হলুদ আর সবুজ সবুজ বেগুনী ইফতার।
নীল নীল ইফতার ডেজ
এই ছবিগুলিতে তেমন কিছু খানা খাদ্য নেই। শুধুই নীল নীল সজ্জা।
আরও নীল নীল
এই আমার বানানো স্পেশাল রামেন।
আর বিবিকিউ বান বৌল মাশরুম স্যুপ।
দুটোই কিন্তু মজার মজার।
এবারের রমজানে প্রায় প্রতিদিন ছিলো লাল লাল তরমুজ।
তরমুজ আর পেপে রঙ্গিন ফলমূল
কাঁচা আমের শরবৎ
আরও আরও ছবি তুলেছি। মানে বলতে গেলে রোজ রোজই। যদিও খানাপিনাগুলোর চেয়ে সাজসজ্জাই বেশি। তাই এ আমার খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি ইফতার সজ্জা।
এই পোস্ট মানে আমার প্রতি বছরেই ইফতার পোস্ট যদিও আমি পোস্ট করি তবে এবারের যার বিশেষ অনুরোধে লিখেছি তাকেই উৎসর্গ করলাম। তার নাম নীলুমনি। আমাদের নীল দর্পন আপুনি। আপুনি বললো রমজান যায় যায় কোথায় তোমার ইফতার পোস্ট? আর তাই তাড়াতাড়ি তড়িঘড়ি শপিং টপিং বাদ দিয়ে ছবিগুলো নিয়ে আসলাম।
সবাইকে ঈদের অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা। ঈদ মুবারাক!!
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৩ রাত ৯:০৭