রেজওয়ান তানিমঃ
উদিত রৌদ্রের রাগ,
বলতো কি করে পড়া যায় মেঘমন্ত্র, খুঁজে নেয়া যায়
মাতাল অসুখে ডুবে যাবার কাগুজে উচ্ছ্বাস ?
সম্ভাবনার বিকেল খুঁজে দেরি হয়ে গেল, নামল নোনতা রাত
ওর বুকে লুকাই তৃষ্ণার মদ! সকাল হলেই মাতাল হব, তার আগেই
জল নেমে গেল মেঘমল্লারে; হল না আর প্রাণের কম্পন!
আলো ফোটা আর্দ্র সকালে, স্পর্শের সংকেত ললাটে লিখে নিয়ে
তোমার ভিতরে ডুবে লিখে দিতে চেয়েছি, বেদুইন প্রেমের আপেক্ষিক কথামালা!
দূরাগত প্রতীকের সুরে ওরা চলে গেছে অস্তমিত সময়ের কাছে
যে শুধু দেখেছিল মৃত পাতাদের অসুখ ও মর্মরে ঘেরা যৌবন!
নিরাশ্রয় বায়ুরা জানে, কোন সে স্রোতহীন জলে তার ঠোঁট কাঁপে
মিটিমিটি জোনাকি জানে, কেন স্মৃতির শালবনে একাকী ময়ূর কাঁদে ?
শায়মাঃ
ডানাভর্তি মেঘ নিয়ে পালক ছড়াচ্ছে এই উড়ুউড়ু মন
ভেবেছিল, এই বুঝি পেল ছোঁয়া তার, জাগল জোয়ার।
একবার ছুটে গেল হলদে বিকেলের ঘাঁটে, রাতের আঁচলে
প্রেম বেধে নিতে উড়িয়ে দিল একজোড়া শাদা কবুতর!
বিনিদ্র ছায়াপথে, আজও আঁচড় কাটেনি ফেলে আসা গুনগুন
তোমার সঘন প্রেম, মেলেনি উত্তর আজো, নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ
হবে কি এই ফাগুনে, সোনাবিকেলে এক বনশালিখ টুপ করে
গাইবে গান চঞ্চুতে মেখে, ফিসফাস প্রেম আর অন্তিম অপেক্ষা!
রেজওয়ান তানিমঃ
আহত ময়ূরের ক্ষত থেকে ঝরে না রক্ত, ঝরে শুধু বিষাদ!
ভুল উচ্ছ্বাসে ডোবা পাংশু আঙুলেরা আজ প্রতিবাদী ভ্রূণ হয়ে
হারানো চিবুক খোঁজে মুদ্রাঙ্কিত রাতে, অনেক তরঙ্গ বুকে নিয়ে
সে লুকায় ছলাৎ ছল প্রেম, শঙ্খবিলাসে অথবা মেঘমিনারে।
যে বুক একবার শুঁকেছে নির্ভরতার ঘ্রাণ; আর আশ্রয় নিয়েছে কোন
ভীত চোখ রোমশ বনে, গেঁথেছে জলপাই তাজ, দ্রোহী তোমার চুলে
সেখানে নামলে নৈঃশব্দ্যের নগ্ন সন্ন্যাস, বোকাটে বকুল থেমে থেমে
যদি জপে অপেক্ষার নাম, মনে হয় তখন কেবল, আমি আহত ময়ূর!
শায়মাঃ
পৃথিবীর এত কোলাহল, এর মাঝে আচানক মনে আসে
এ চিবুক ছুঁয়েছে যে প্রেম, ভুল স্পর্শের সে চমকে হাহাকার ওঠে।
বারবার ব্যথা জাগে, আমার চাতক মন, জলতেষ্টা আর
অযাচিত আবেগ মুছে নিয়ে তবুও ডুবে যায় অকারণ মাদকতায়!
প্রতিদিন বেহায়া শঙ্খ, মনে করিয়ে দিচ্ছে নিনাদের সুরে
আমি একা, যেন শরে বাধা ব্যাধ; নিয়তি নিত্য নেমে থাকে
কাদা জলে, অন্ধকারে ফেলে রাখে আমায়, স্থির অবিচল।
অকারণ কথকতা, ভুলে বসা রোদ শোনে জলনুপুরের বেদনা!
রেজওয়ান তানিমঃ
জানি দেখা হবে একদিন, দূরবর্তী নদীগান যেমন উদাস করে
বলে যায় আমাদের ঘাসপুতুলের গান, নতুন আদর চুমু মেখে
ওম খুঁজবার আরেক ফাগুন উপাখ্যান! রোদসকালে শহরের
উঁচুতে উঠে দেখা হবে- মেঘের মিনারে, পাখি ঠোঁটে প্রেম ফোঁটে!
প্রিয়ন্তিকা, ভুলে গেছ রৌদ্রদিন, ঘাসের চাঁদরে শুয়ে আনমনে
ডুবিভাসি প্রেম, সোনালি সোহাগ নিয়ে মিশে যাওয়া মাতাল মন!
কাজল ও চোখে ফেনা জাগে, জানি বালু ও জলের সঙ্গম অনিঃশেষ
দূরে চলে গেলেই যায় না ছিঁড়ে, প্রেমভাষা আনকোরা বেদনার সুর!
শায়মাঃ
মোমহীন কাগজের নৌকোয় যদি ভাসানো যেত, সব অবসাদ
যদি আবার লেখা যেত, ঠোঁটে লুকানো পৃথিবীর গল্প পদ্মপাতায়!
আলোপুকুরের সোনালি আভায় ডুব দিয়ে খুঁজতাম নিজেকে,
আর গাইতাম মেঘমল্লার, জলে ধুয়ে যেত আটপৌরে বিষাদ।
ভালবাসা এক অচিন অসুখ, এই লিখে চুপিসারে দিলাম যে চিঠি
ও শারদ মেঘে, মন্ত্রপূত সুরে ভেসে দিও তারে, গোপন অভিসারে
লেখা গভীরতম কাব্যকলা! তানসেন হয়ে সে জাগাক প্রেম দীপাবলি
মুগ্ধ রাতে হই মিলনের সুরে বাধা দুটি সারসপাখি, বিপাশার তীরে।
আমাদের যুগল আবৃত্তি
প্রিয়ন্তিকা ও নির্ঝরের প্রেমগান - রেজওয়ান তানিম ও শায়মা হক
কবিতার পেছনের গল্পঃ-
আমার কবিতা, গল্প বা যে কোনো লেখাই আসলে খেলা খেলা লেখা। সুন্দর একটা সময় কাটাতে এই লেখালিখি, খেলাখেলি। রেজওয়ান তানিম ভাইয়া আমার এই খেলা খেলা লেখা নিয়ে অনেক অনেক দিন ধরেই আমার উপরে খুবই বিরক্ত। উনি আসলে আমাকে মহা সম্ভাবনাময় কবি ভেবে থাকেন। তানিমভাইয়ার মতে আমার কবিতা নিয়ে এ্যটলিস্ট আরও সিরিয়াস হওয়া উচিৎ ছিলো যা আমি কখনই হইনি। তো সেদিন আমার এই খেলা খেলা কথা ছলেই উঠলো সেই ব্যাপারটা। আমিও চ্যালেঞ্জ নিয়ে নিলাম ওকে তোমার সাথেই লিখবো এইবার। কিন্তু গাঁয়ের জোরে চ্যালেঞ্জ তো ছুঁড়ে বসলাম তবে লিখতে গিয়েই বুঝলাম এমন বিপদে আর কখনও পড়িনি আমি। যাই লিখি ভাইয়া মুখে কিছু না বললেও কেটে কুটে তার দফারফা এডিট করে দেয়। হা হা হা তবুও মজাই পেয়েছি তার সাথে সিরিয়াস কবিয়াল প্রেমকাব্য লিখতে গিয়ে।
কবিতা লেখা প্রায় মাসখানেক ধরে চলছে। এরপরে লেখা তো হলো, এখন আমার শখ হলো কবিতাটা পড়ি। ভাইয়াকে বললাম। কিন্তু কি করে তা সম্ভব! ভাইয়া থাকে দূর দেশে আর আমি এইখানে! সব মুসকিল আসান করতে এগিয়ে আসলো গেম চেঞ্জার ওরফে গেমুভাইয়া ডাবল ওরফে আমার প্রিয় জিনিয়াসভাইয়া। আর সে যখন আমাদের দূর দেশের দুই প্রান্তের কথামালা একই সুতোয় যোগসূত্র বেঁধে দিলো তখন আমার আনন্দ আর ধরে কোন পাত্রে! উছলে উছলে পড়ে!
তাই এই লেখার বিশেষ কৃতজ্ঞতা গেমুভাইয়া ওরফে গেম চেঞ্জারভাইয়া ওরফে ওরফে আমার প্রিয় জিনিয়াস ভাইয়াটার কাছেই রইলো। আর রেজওয়ান তানিমভাইয়ার কাছে রইলো অশেষ কৃতজ্ঞতা। ভাইয়া তুমি যেমনই আমার ঢং ঢাং বিরক্তি সহ্য করে অসীম ধৈর্য্যের পরিচয় দিয়েছো তেমনি আমার জীবনে এক স্মরনীয় কবিতা লেখার স্মৃতি রেখে গেলে। অনেক অনেক ভালো থেকো তোমরা দুজনে। অনেক অনেক ভালোবাসা তোমাদের জন্য।
কি করি আজ ভেবে না পাই ভাইয়ার লেখা কবিতায় আমি
অনন্ত প্রেম- আবৃত্তি- ইমরাজ কবির আর আমি
বৃতিমনির আবৃত্তি
তাশমিন নুর আপুনির একটা অসাধারণ আবৃত্তি!!!!!!!
আরও কেউ আবৃতি দিলে জুড়ে দেবো এইখানে....
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:১২