নেইমার ডাক্তারের সহিত সাক্ষাত করিয়া নেইমার বলিলো “ডাক্তার সাব, বোধ করি আপনি অবগত রইয়াছেন এইবারের বিশ্বকাপের ব্রাজিল ডিফেন্সনির্ভর। কিন্তু ভক্তকূল ব্রাজিলের এ্যাটাক হইতে বেশি বেশি গোল আশা। একটু কম গোল করিলেই তাহারা গোল গোল অক্ষি আকৃতি লইয়া বিলাপ করে এই ব্রাজিল আগের ব্রাজিল নয়, এই ব্রাজিল শ্যাষ ইত্যাদি। আমি দুর্বল স্বাস্থ্যের বালক। প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডার বাদই দিলাম, আমার বান্ধবী গালে চুমু খাইলেই আমি কয়েক ফিট দূরে ছিটকাইয়া গিয়া পড়ি। ডাক্তার সাব, আপনার নিকট কি হইবে এমন কোন ঔষধী যাহার ফলে ব্রাজিল ডিফেন্স করিবার ফাকে ফাকে টুকটাক গোল প্রদান করিয়া ভক্তকূলকে ডিফেন্ড করিতে পারিবো”?
ডাক্তার সব শুনিয়া ভরাট কন্ঠে বলিলো, “গোল চাও হে বালক? তোমার ওষুধ হইলো পেনাল্টি, ম্যাচপ্রতি একবার করিয়া ডোজ। এই ডোজে তোমাদের প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি পাইবে”।
নেইমার বলিলো, “প্রজনন ক্ষমতা আমার ভালোই। ১৯ বছর বয়সেই পুত্র সন্তানের পিতা হইয়াছি”।
ডাক্তার বলিলো, “আমি তোমার প্রজনন ক্ষমতার কথা বলি নাই, ব্রাজিলের গোলের প্রজনন ক্ষমতা বুঝাইয়াছি”।
নেইমার প্রেসক্রিপশন লইয়া চলিয়া গেলো। প্রথম ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ব্রাজিল ৩-১-এ জিতিলো কিন্তু দ্বীতিয় ম্যাচে মেক্সিকোর সহিত গোলশূন্য ড্র করিতেই নেইমার আবার গোল ডাক্তারের নিকট হাজির।
“ডাক্তার সাব, গোলের প্রজনন হার এক ম্যাচ পরেই কমিয়া গেলো কেন?”
ডাক্তার বলিলো “ইহার কারণ দুইটা। এক নম্বরে হইলো মেক্সিকো ওচোয়া টিকা আবিস্কার করিয়া ফেলিয়াছে। ঐ টিকা নিলে আমার ডোজ কাজ করিতে পারে না। আমি ঐদিন চেয়ারে বসিয়া টিভিতে মেক্সিকোর সহিত তোমাদের ম্যাচখানা দেখিয়াছিলাম। ওচোয়ার সেভ দেখিয়া ইচ্ছা হইয়াছিলো চেয়ারখানা ছুড়িয়া টিভি ভাঙ্গিয়া ফেলি কিন্তু চেয়ার ছুড়িইয়া মারিলে ওচোয়া সেইটাও ঠেকাইয়া দিতে পারে ভাবিয়া আর মারি নাই”।
নেইমার বলিলো “আর দুই নম্বর কারণ”?
“সেইটা হইলো ডোজের সাইড ইফেক্ট। প্রথম ম্যাচেই দেখিয়াছো তোমার গোলের প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি পাইয়াছে কিন্তু সাইড ইফেক্টে পড়িয়া ফ্রেড স্টার্লাইজড হইয়া গিয়াছে। এখন উপায় হইল সামনের ম্যাচে যতো পারো রেফারি হইতে পেনাল্টি আদায় করিয়া লহো। বেস্ট অফ লাক”।
নেইমার চলিয়া যাইবার কিছুদিন পরে হাজির হইলো হিগুয়াইন, আগুয়েরো, আর ডি মারিয়া। ডাক্তার দেখিয়া বলিলো “আরে তোমরা? মেসি কই”?
ডি মারিয়া বলিলো “টানা দুই ম্যাচে গোল করিয়া মেসি ভাবে রইয়াছে। সারাদিন খালি গান গাইয়া যায়
“আমি বার্সা নগরের রাজপুত্তুর
পায়ের জাদু এনেছি
ইরান তুরান ডিফেন্স ভেঙ্গে
আমি তোমার দেশে এসেছি”
ডাক্তার বলিলো “তা তোমাদের কি সমস্যা”
হিগুয়াইন বলিলো "আমাদের সমস্যা আমরা গোলের কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগিতেছি। মেসির গোলে দুই ম্যাচেই কোনমতে জিতিয়াছি। আমাদের এই গোলের কোষ্ঠকাঠিন্য হইতে উদ্ধার করুন”।
ডাক্তার বলিলো “ইহা তো কোন সমস্যা নয়। টয়লেট চাপিলে টয়লেট বাইর করিলেই চলে। কে বাইর করিলো সেইটা সমস্যা নহে। মনে করো তোমাদের টয়লেট চাপিয়াছে। তিনজনের হইয়াই কাম সারিতে বাথরুমে দৌড়াইবে মেসি।বেবাক আর্জেন্টিনা সমর্থক এতেই খুশী। ৮৬তে আমি ম্যারোদোনাকে হ্যান্ডবল ডোজ দিয়াছিলাম। ম্যারাদোনা ঐ ডোজে গোল করিয়া নাম দিলো “হ্যান্ড অফ গড"। আর্জেন্টিনা সমর্থকগণ ম্যারাদোনাকে বানাইয়া দিলো ফুটবল ঈশ্বর”।
আগুয়েরো বলিলো “আমার শ্বশুরমশাইকে যেমন ওষুধ দিয়াছিলেন আমাদেরকেও কি সেরকম কিছু প্রদান করিতে পারেন ”?
ডাক্তার বলিলো “ ঠিক আছে, আর্জেন্টিনার কথা ভাবিয়া আমি আরো কড়া এ্যাটাকের ডোজ লিখিয়া দিতে পারি। তবে শুনিয়া রাখো, ইহার সাইড ইফেক্ট রইয়াছে”।
তিনজন একত্রে বলিলো “কি সাইড ইফেক্ট”।
ডাক্তার বলিলো, যত এ্যাটাকের ডোজ বাড়াইবে, ডিফেন্সের শক্তি কমিয়া যাবে”।
ডি মারিয়া বলে “আপনি প্রেসক্রিপশনের ডোজ লিখিয়া দেন। আমি শিউর ডিফেন্সের শক্তি হ্রাস হইবে না”।
এবার ডাক্তার অবাক “কেন”।
ডি মারিয়া ডান হাত দিয়া বাঁ হাতের মুঠোয় একখানা কিল মারিয়া বলিলো “কারণ আর্জেন্টিনার ডিফেন্স বলিয়াই কোন কিছু নাই”
(ফেসবুকে ব্লগ ব্লাস্টার নামে একটা পেইজ চালাই যেখান থেকে আমরা আমাদের নিজেদের এবং প্রিয় ব্লগারদের লেখা শেয়ার দেই। চাইলে সেখানে লাইক দিতে পারেন)