শেকল
এলাকার এক ভাবির সঙ্গে দেখা। জিগ্যেস করলেন, “বিয়েশাদি করা লাগবে কি না। বয়স তো কম হলো না।” একটু চিন্তা করে বললাম, “সত্যিই তো। আপাতত একটা করা দরকার।”
তো এই ভাবি সেদিন এলেন আমাদের বাড়ি। আদর-আপ্যায়ন করলাম। আমার ব্যবহারে সন্তুষ্ট হয়ে মায়ের সাথে আলাপ জুড়লেন। আলাপের সারকথা এই: এই ছেলে এত ভালো কেমনে হলো? এর যন্ত্রণায় তো আপনাদের বাড়িতেই আসতে পারতাম না। আরও অনেককিছু।
বস্তুত ছেলেবেলায় খুব দুষ্টু ছিলাম। কেউ বাড়িতে এলে কাঁচি-দা-বটি নিয়ে দৌড়ানি দিতাম। এই ভাবিও বাদ যেতেন না। ওনার তখন বাচ্চা হয়নি। ছোট্ট আমাকে কোলে নিয়ে মাতৃত্বের স্বাদ নিতে চাইতেন, অথচ আমার পাগলামিতে বাড়িতেই আসতে পারতেন না। কথিত আছে আমার বদভ্যাস ছিল এখানে সেখানে ঘুরে বেড়ানো। বাড়ির কাছে পুকুর। ডুবে যেন না মরি, মা পায়ে শেকল পরিয়ে রাখতেন।
মারামারি
ঘুসি মেরে দাঁত ফেলে দেওয়ার রেকর্ড শুধু চিত্রনায়ক জসীমের না, আমারও ছিল। সুমন নামে এক ছেলের সঙ্গে খেলছিলাম। লেগে গেল মারামারি। রাগ সংবরণ করতে না পেরে মুখে দিলাম এক ঘুসি। দাঁত একটা পড়ল, সাথে টলটল করে রক্ত। এ নিয়ে বিরাট ইতিহাস।
মারামারি
মামাত ভাইয়ের সাথে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে ঝগড়া। সে মারতে এল। মেজাজ চড়ে গেল আমার। লাঠি না পেয়ে কলসি নিয়ে দিলাম দৌড়ানি। বেচারা গ্রামছাড়া।
মোবাইল
স্যারের ওপর মেজাজ খারাপ। শাস্তি কেমনে দেব? কোনোমতে নম্বর জোগাড় করলাম। এরপর নিয়ম করে প্রতিদিন মিসকল। কল ব্যাক করলে রিসিভ করে হাততালি।
মোবাইল
এক স্যারের ছেলের সঙ্গে বন্ধুত্ব। একদিন মেসেজ দিলাম, “কী রে শালা? সব ভালো তো? তোর বোনের খবর কী?” পরদিন জানতে পারি ওই সিম স্যার নিজে ব্যবহার করেন।
খেজুরের রস চুরি
রস খাব, কিন্তু কেমনে খাব? বাড়ির পাশে এক খেজুর গাছে উঠলাম। তখন শেষ রাত। সবাই ঘুমে। আমার সাথে কয়েকজন চাচাত ভাই। রস নামিয়ে সুন্দর মতো পানি ভরে রাখলাম। কেউ টেরও পেল না।
লেবু
এক জেঠি আমার নামে নালিশ করলেন মায়ের কাছে। আমি না কি তার পাকা ধানে মই দিয়েছি। মহিলাকে কী শাস্তি দেওয়া যায়? ওনাদের গাছের যত লেবু আছে, সব পেড়ে মাটিতে পুঁতে রাখলাম। নিজেকে নিরাপদ রাখতে বোনের বাড়ি পালালাম।
মূত্র বিসর্জন
বোর্ডিংয়ে থাকি। প্রতিদিন তেল চুরি হয় বোতল থেকে। একদিন বুদ্ধি করে জলবিয়োগ করে রাখলাম বোতলে। কেমনে যেন রাষ্ট্র হয়ে গেল। বিচার বসল আমার নামে। বড়ো ভাইরা সহায় থাকায় সে যাত্রায় বেঁচে গেলাম।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুন, ২০২৪ দুপুর ১:০২