টঙ্গী সরকারি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ফাহমিন জাফর। ২০২৪ সালের ১৮ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে বন্ধুদের সঙ্গে উত্তরা এলাকায় যোগ দেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পুলিশ গুলি চালালে গুরুতর আহত হয়ে উত্তরার একটি মার্কেটের সিঁড়িতে লুটিয়ে পড়েন ফাহমিন। ছররা গুলিতে তার সারা শরীর ঝাঁজরা হয়ে যায়। পরে আন্দোলনের সহযোগীরা তাকে উত্তরার একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে মারা যান তিনি।
ফাহমিনের ফোনের কলতালিকায় সবার শেষে ছিল বাবার নম্বর। কেউ একজন ওই নম্বরে ফোন করে জানান, ‘ফাহমিন আহত হয়েছে, জরুরিভাবে আপনারা হাসপাতালে আসুন।’ ফাহমিনের বাবা ওই সময় তাদের রাজশাহীর বাসায় অবস্থান করছিলেন। খবর পেয়ে তিনি ঢাকায় ফাহমিনের মা শিল্পী ও মামা মোকতাদিরকে ফোন করে ওই হাসপাতালে যেতে বলেন। তারা হাসপাতালে গিয়ে ছেলের লাশ বিছানায় পড়ে থাকতে দেখেন।
ওই রাতেই তারা ফাহমিনের লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়ি আত্রাইয়ের উদ্দেশে রওনা দেন। পরদিন ১৯ জুলাই জুমার নামাজের পর পারিবারিক গোরস্তানে ফাহমিনকে দাফন করা হয়।
ফাহমিন জাফর আন্দোলনে যাওয়ার সময় মাকে বলে, ‘স্বৈরাচার পতনের আন্দোলনে গিয়ে যদি আমার মৃত্যু হয়, তাহলে তোমরা আমার লাশ ঘরে আনবা না; যতক্ষণ না হাসিনার পতন হচ্ছে।’ গুলিতে ঝাঁজরা আমার বাবুর ছবি চোখে ভাসে, ঘুমাতে পারি না বলে ফাহমিন জাফরের মা।