ব্লগে বিষয়টা নিয়ে কিঞ্চিত বাতচিত হয়েছিলো একজন মানবীর সঙ্গে (বাস্তবে বহুজনের সঙ্গেই হয়েছে)! তিনি বলেছিলেন, তিনি নাকি অমুসলিমদের কোন ধর্মীয় উৎসবেই যাননা; তাঁর ধর্ম নাকি এগুলো সমর্থন করেনা (এ বিষয়ে ইসলাম আসলে কী বলে?), যদিও তাঁর বহু অমুসলিম বন্ধু-বান্ধব আছেন; ঈদে, উৎসবে তাঁরা তাঁর বাড়িতে নিয়মিতই আনাগোনা করেন ।
শোনা যাচ্ছে বোদ্ধ বিহার থেকে গরীব ও দুস্থদের মধ্যে ইফতার সামগ্রী বিতরন করা হচ্ছে (কেউ কেউ অভিযোগ করছেন শূকরের মাংস বিতরন করে নাকি মুসলমানদের রোজা নষ্ট করা হচ্ছে । রামুতে বোদ্ধ পল্লীতে হামলার ক্ষত এখনো শুকোয়নি । অহরহ সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা চলছেই । নিজেদের জান নিয়েই যেখানে টানাটানি; এ অবস্থায় তাঁরা এমন কাজ করে নিজেদেরই বিপদ ডেকে আনবে? আপনার কমন সেন্স কী বলে?), অমুসলিমদের কেউ কেউ রোজা রাখার ঘোষণা দিয়েছেন । এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এরা যে মুসলমানদের সঙ্গে ধর্মীয় উৎসবে একাত্ততা ঘোষণা করেছেন; তাহলে এদের ধর্মত্ব অবশিষ্ট থাকবে তো?
পয়লা বৈশাখকেও এদেশের এক শ্রেণির মানুষ হিন্দুদের উৎসব বলে থাকেন (ভারতের মুসলমানরা, মিয়ানমারের রাখাইনরা অত্যাচারিত হলে এদেশের হিন্দু-বোদ্ধদেরকেও অত্যাচার করতে হবে; তাঁদের উপাসনালয়ও ভাঙতে হবে- এমন ধারণা পোষণকারী) এই উৎসব বর্জন করতে প্রচারণা চালান এই বলে যে এইদিন হিন্দুরা উপবাস করেন, ধর্মীয় আচার পালন করেন (চাঁদকে কেউ যদি পূজো করেন, সেটা কি চাঁদের দোষ? পয়লা বৈশাখকেও কেউ যদি ধর্মীয় উৎসব হিসেবে ব্যবহার করে এর দায় তো পয়লা বৈশাখ এর নয়) ।
বারো মাসে তেরো পার্বণ এর দেশ বাংলাদেশ এর মানুষ উৎসব এর ব্যাপারে সবসময়ই উদার! হিন্দুরা মুসলমানদের উৎসবে, মুসলমানরা হিন্দুদের উৎসবে শরিক হয়ে থাকে । এ বিষয়ে তাঁদের মধ্যে ধর্মীয় গোঁড়ামি কাজ করেনা । দুর্মুখেরা তাঁদের দমাতে পারেনা কখনো । অবশ্য বিভিন্ন অজুহাতে মাঝেমাঝে অমুসলিমদের উপাসনালয় ভাঙা হয়, তাঁদের হত্যা করা হয়- এর দায় ধর্মীয় উগ্রবাদীদের, সাধারণ মুসলমানদের নয় ।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা জুলাই, ২০১৭ দুপুর ২:২২