যখন প্রেম টু বি কন্টিনিউ ছিল
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
প্রেমিকার মত রোমাঞ্চকর আর ত্যক্ত উৎপন্নকারী জলজ্যান্ত কিছু দ্বিতীয়টি জীবনে এসেছে কি না বলা মুশকিল। ছেলেরা যতই তাফালিং করুক বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অসুন্দরী মেয়ের খপ্পড়ে স্বেচ্ছায় গিয়ে ধরা দেয়। কেউ কেউ ধরা খাওয়ার জন্য জান কয়লাও করে ফেলে। অতি সুন্দরী মেয়েরা প্রেমিকা হিসেবে ঘোলা জলের উপরিতলের মাছের মত কয়েকদিন ঘুরে ফিরে কথিত প্রেমিকের মনে নাড়াচাড়া দিয়ে দেয় ডুব।
সাহিত্য রেখে সহজ করে বলি, কোন জায়গায় সুবিধা করতে না পেরে, অনেক চেষ্টা তদবির করে একজন অসুন্দরী মেয়ের প্রেমে পড়েছিলাম। মানুষ মাত্রই সুন্দর তবে অসুন্দরী বলার কারণ হচ্ছে প্রেমিকার কাছে ‘বাও’ না পাওয়া বা সুবিধা করতে না পারা। যখন প্রেমিক হিসেবে নিজের জায়গাটা নড়বড়ে ঠেকে এবং প্রেমিকার কাছে বিশেষ অগুরুত্বপূর্ণ, ঝামেলা হিসেবে নিজেকে আবিষ্কার করা যায় তখন মাথা আউলিয়ে এমন কিছু আওড়ানোই স্বাভাবিক।
ঘটনা হচ্ছে, প্রেমিকা যথারীতি জীবনটার দফারফা করে তুলেছিল। ব্রেকআপ করার কলিজাও ছিল না (আহারে, তাহার জন্য মন পুড়তাছে)। কলিজা না থাকলে প্রেমিকের বৈধ আচরণ হচ্ছে মিউমিউ করা আর প্রেমিকার যাবতীয় হাউকাউ হজম করা। এটা করবা না, ওটা করবা না, এটা করলে আমিও এইটা করমু, ওইটা করলে আমিও ওইটা করমু। এতটা সময় ঘুম থেকে উঠবা, অতটা সময়ের পর বাইরে থাকবা না। ওর সাথে মিশবা না, ওরে ফোন নম্বর দিবা না। এখন ডেটিংয়ে মালপানি ঢালতে হবে, তখন মালপানি ফেলা নিষেধ। নেটে এই করবা না, ওই করবা না। এই জামা পড়বা না, ওই জামা পড়বা। এই দিন এইটা করবা, ওইদিন ওইটা করবা না। আরে সব্বনাশ! (সংক্ষেপিত ও পরিমার্জিত।)
প্রেমিকা নিজে থেকেই চলে গেছে। আমি রোবট হিসেবে খারাপ আছিলাম না। বরং রোবটের অপারেটর হিসেবে সে ব্যর্থ বলা যায়। আমাকে অপারেট করতে করতে সে ক্লান্ত। আর কত!
এখন নতুন যন্ত্রণা বাসা বেঁধেছে। আমাদের নিকট একে অপরের গচ্ছিত স্মৃতি স্মারক যা কিছু আছে সেগুলো হাতবদল করতে হবে। হাতঘড়ি, সেভিং ক্রিম, নেইলকাটার, পাউডার (কি আর কইতাম- তাহার মন পাইবার জন্য একজন আদর্শ রোবট হিসেবে পাউডার ব্যবহার করাও শুরু করেছিলাম। থাক, যা জেনেছেন পেটে রাইখেন।) লিস্টি অনেক লম্বা। এগুলো হাতড়ে, খুঁজে জড়ো করতে হচ্ছে। মোটামুটি কাজ গুছিয়ে এনেছিলাম। আরেকবার রোবট হিসেবে আমার পারফর্মেন্স আশা করি তাকে সন্তুষ্ট করতে চলেছি এমনটা ভাবতে ভাবতে নির্ধারিত সময়ে কলেজের দীঘির পাড়ে গিয়ে দাড়িয়েছিলাম। একটু পর সে এল, দেখল এবং ঝাড়ি দিল। কেন তাঁহার কথামত ব্রেকআপ করলাম, কেন তাঁহার জন্য আমার মন পোড়ে নাই, কেন তাঁহার স্মৃতি স্মারকও ফিরিয়ে দিতে একটুই বুক কাঁপল না? ঝাড়ির শেষ পর্যায়ে সে কাঁদতে লাগল। মৃদুমন্দ বাতাস বইছে। তাঁহার চিবুক বেয়ে নেমে আসা কয়েক ফোঁটা কান্নাজল দীঘির পাড়ের অর্ধমৃত ঘাসে টপটপ করে ঝরে পড়তে দেখলাম। আমি আর কী বলি, এখন আরেক যন্ত্রণার কথা ভাবছি, পকেটে টিস্যুপেপার নেই, আনতে ভুলে গেছি। আমার ওপর পকেটে সদা-সর্বদা টিস্যু পেপার রাখার হুকুমত নাজেল করা আছে তাঁহার। এখন টিস্যু পেপার চেয়ে বসলে আরো কিছু ঝাড়ি শুনতে হতে পারে। তাই তাঁহার চাপা কান্নার বিচিত্রসব সুরগুলোতে দীঘির পরিবেশ যে অনুপাতে মন্ত্রমুগ্ধ হচ্ছে আমি সেই অনুপাতেই ঘামছি।
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।
এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন
বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?
সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী
বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন
জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন
=বেলা যে যায় চলে=
রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।
সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন