somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইনসমনিয়াক

২৫ শে অক্টোবর, ২০১১ রাত ১১:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি একজন ইন্সমনিয়াক।

ইন্সমনিয়া বা অনিদ্রা যা কত ভয়ঙ্কর অসুখ, সেটা যার হয়নি তাকে বলে বুঝানো যাবে না। অনেকেই অনেক কারনে অনিদ্র রাত কাটায়। ব্যবসায়িরা ব্যবসার চিন্তায় রাতে ঘুমাতে পারে না। এসএসসি র ছাত্ররা রাত জেগে পরা মুখস্ত করে। এই রাত জাগার সাথে ইন্সমনিয়ার কোন মিল নেই। আপনি মনে প্রানে ঘুমাতে চাইছেন। আপনার মনে কোন দুশ্চিন্তা নেই, আশপাশের কোন গোলযোগ আপনার নিদ্রায় ব্যঘাত ঘটাচ্ছে না। রাত জেগে সময় কাটানোর কোন কাজ নেই। কিন্তু আপনার ঘুম আসছে না। সারা পৃথিবী নিশ্চুপ ঘুমিয়ে আছে, শুধু আপনার চোখে ঘুম নেই।
এ বড় ভয়ঙ্কর অনুভুতি।

আমি অসহায়ের মত বিছানায় ছটফট করি। রাতের এই সময়টায় প্রতিটি সেকেন্ড বড় লম্বা হয়ে যায়। আমি একটু পর পর দেয়ালের বড় ঘড়িটার দিকে তাকাই। সময় যেন কাটতেই চায় না। মাঝে মাঝে সন্দেহ হয় ঘড়িটা কি বন্ধ হয়ে গেছে!!

রাতে সময় কাটানোর নানা উপায় আমি আবিষ্কার করেছি। ইন্সমনিয়াক রুগির সবচে বড় বন্ধু হল টেলিভিশন। ইদানিং নতুন অনেকগুলো এফ এম রেডিও চ্যনেল বের হয়েছে। সারা রাত গান চলে। এ ছাড়া চাইলে বই পরার অভ্যাস করা যায়। তবে সমস্যা হল এই সব উপায়ের কোনটাই খুব বেশিক্ষন কাজে দেয় না। টানা আধঘণ্টা টিভি দেখার পর হঠাৎ আপনি আবিষ্কার করবেন আপনি আসলে টিভির দিকে শুধু তাকিয়ে আছেন। টিভিতে কি চলছে আপনি জানেন না। একই সমস্যা গান শোনা বা বই পরার ক্ষেত্রেও। ইন্সমনিয়ার রুগির জন্য কোন কাজে দীর্ঘ সময় মনোনিবেশ করা প্রায় অসম্ভব।

আমি অস্থির হয়ে বিছানায় উঠে বসি। দেয়াল ঘড়িটা সময় বলছে রাত দুটা। টিভি চলছে। এইচবিও তে একটা রগরগে মুভি দেখাচ্ছে। দেখতে ভাল লাগছে না। আমি টিভি বন্ধ করে দিলাম। ঘরটা নিরব হয়ে গেল। শুধু দেয়ালে বসানো ঘড়িটার টক টক শব্দ ছাড়া আর কোন আওয়াজ নেই। আমার ভীষণ পিপাসা পাচ্ছে। আবার বমি বমি লাগছে। নীরবতার মাঝে ঘড়িটার টকটক শব্দ বড় বেশী কানে বাজছে। টকটক টকটক । অসহ্য হয়ে আমি ঘড়িটা দেয়াল থেকে নামিয়ে আনলাম। অফ করার সুইচটা খুজে পাচ্ছি না। ইচ্ছে করছে ঘড়িটা তুলে একটা আছাড় মারি। অবশেষে সুইচটা খুজে পেলাম। ঘড়ি বন্ধ করতেই ঘরে সত্যিকারের নিরবতা নেমে এল। বোধ হয় দেয়ালের উপর দিয়ে পিঁপড়া হেটে গেলেও শুনতে পাব। আমার দম বন্ধ হয়ে এল। মনে হচ্ছে কবরের ভেতর ঢুকে গেছি। পাগলের মত আমি আবার ঘড়ি চালু করলাম। আহ শান্তি। মনে হচ্ছে, আমি এখনো বেচে আছি।
জানালা দিয়ে বাইরে তাকালাম। যত দূর চোখ যায় একটা বাড়িতেও আলো জ্বলছে না। কোথাও কেউ জেগে নেই। এমনিতে মাঝে মাঝে রাস্তা থেকে পাহারাদারের বাশির আওয়াজ পাওয়া যায়। অথবা বেওয়ারিশ কুকুরের ঘেউঘেউ কানে আসে। আজ সেসব কিছুই নেই। পৃথিবী যেন আজ মৃত একটা গ্রহ।
বাসায় আমি একা নই। আমার সাথে আমার স্ত্রিও আছে। পাশের ঘরে ঘুমুচ্ছে। আমার স্ত্রি বেশ অসুস্থ। সত্যিকথা বলতে বিয়ের পর তাকে কদিন সুস্থ অবস্থায় পেয়েছি মনে পরে না। ডাক্তাররা তার রোগটাই ধরতে পারেছেন না। কখনো বলছেন টাইফয়েড, তারপরই বলছেন লিভারের সমস্যা। প্রথম প্রথম স্ত্রিকে বহুদিন হাস্পাতালে রেখে চিকিৎসা করিয়েছিলাম। এখন বাসায় নিয়ে এসেছি। একটা নার্স রেখে দিয়েছি। সেই দেখাশুনা করে।

আমি বিছানা থেকে নেমে দাঁড়ালাম। মেঝেতে পা ছোঁয়াতেই মাথাটা বোঁ করে ঘুরে উঠল। ইন্সমনিয়ার সাথে সাথে এই লক্ষণটিও দেখা দেয়। হাঁটতে গেলে যখন তখন মাথা ঘুরে উঠে। মনে হয় পায়ের নিচে মাটি নেই, যেন পিচ্ছিল জেলির উপর দিয়ে হাঁটছি। সেই সাথে ইদানিং মোটর ফাংশনেও বেশ এলমেলো হয়ে গেছে।

নিঃশব্দে গাড়ির চাবিটা তুলে নিয়ে আমি রাস্তায় নেমে এলাম। স্ত্রিকে জাগাইনি। ঘরের মধ্যে দম বন্ধ লাগছিল। আমাকে লং ড্রাইভে বের হতে হবে। হাইওয়ে ধরে ছুটতে হবে সূর্যের মুখ দেখা পর্যন্ত।
*
ধানমন্ডি ছয় নম্বর ধরে চলছি। দিনের বেলা এই রাস্তাটা লোকে লোকারণ্য থাকে। এখন রাত তিনটা। আশেপাশে একটা মানুষ নেই। আমি গারি ছুটিয়েছি অনির্দিষ্টের পানে। অল্প সময়ের মধ্যেই শাহবাগ পার হয়ে গুলিস্তানে চলে এলাম। সেখান থেকে চিটাগাং রোড। আমি ছুটছি।
মেয়েটা হঠাৎ করেই আমার গাড়ির সামনে এসে পরল। একে বারে শেষ মুহূর্তে ওকে দেখতে পেয়ে ব্রেক চেপে ধরেছিলাম। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। আমার মিতসুবিসি ল্যন্সার মেয়েটিকে পিষে ফেলে দশ হাত দূরে গিয়ে তারপর থামল।

আমি স্টিয়ারিং ধরে বসে বসে ঘামছি। এখানে এখন বসে থাকা মতেই বুদ্ধিমানের কাজ হচ্ছে না। যে কন মুহূর্তে কারও চোখে পরে যেতে পারি। ভাগ্যিস যে আশেপাশে কেউ নেই। কিন্তু আমার হাত দুটো যেন জমে গেছে। আমার সকল শুভ বুদ্ধির বিরুদ্ধে গিয়ে অনেক ঝোকের বসেই আমি গারি থেকে বের হলাম। মেয়েটা এক চুল নড়ছে না। আমি ঝুকে বসে তার চেহারাটা দেখার চেষ্টা করলাম। মেয়েটি মৃত সন্দেহ নেই। কিন্তু কোন আঘাতের চিহ্ন চোখে পরল না। শুধু বাম গালে একটা খামচির দাগ। মেয়েটির বয়স ষোল সতেরোর বেশী নয়। পোশাক আশাক দেখে তাকে রাস্তার মেয়ে বলেই মনে হল। জানি না কেন, মেয়েটির চেহারা আমার খুব পরিচিত লাগছে। কিন্তু কিছুতেই মনে করতে পারলাম না একে আমি আগে কোথায় দেখেছি।

আমি আর সময় নষ্ট করলাম না। দ্রুত গাড়িতে ফিরে এলাম।
কিভাবে যে গাড়ি চালিয়ে বাড়ি ফিরে এলাম নিজেও জানি না।

***

ঘড়িতে সময় সকাল নয়টা। আরামবাগের ট্রাফিক জ্যামে বসে আছি। চারপাশে যেন একটা গাড়ির সমুদ্র। গাড়ি চালাচ্ছে আমার ড্রাইভার। আমার হাতে আজকের চারটা পত্রিকা। সবগুলো কাগজ ভাল করে ঘেঁটে দেখলাম। যাত্রা বাড়ির কাছে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর কোন খবর নেই। এমনটা হয়াই স্বাভাবিক। প্রতিদিন কতলোক রোড এক্সিডেন্টে মারা যায়। একটা রাস্তার মেয়ে কিভাবে মারা গেল তা নিয়ে মাথা ঘামানোর সময় কার আছে।
জানালা গলে আমার দৃষ্টি চলে গেল বাইরে। হাফ ডজন ফকির দল বেধে ভিক্ষা করতে নেমে গেছে। পাশের ফুটপাত ধরে হতে চলেছে অসঙ্খ মানুষ। তাদের মধ্যে একজনের উপর আমার দৃষ্টি আটকে গেল। কিছু না বুঝেই আমি গাড়ি থেকে বের হয়ে গেলাম। ফুটপাতে ভীষণ ভিড়। কিছুতেই তার কাছাকাছি পৌছতে পারছি না। ঠিক মত তার চেহারা দেখার আগেই সে মানুষ সমুদ্রে হারিয়ে গেল।

জ্যাম ছেরে দিয়েছে। ড্রাইভার চিৎকার করে আমাকে গাড়িতে ফিরতে বলছে। মনে এক রাশ প্রশ্ন নিয়ে আমি আবার গাড়িতে ফিরে এলাম। মেয়েটিকে কাল রাতে আমি রাস্তার সাথে পিষে ফেলেছি। আমি মোটামুটি নিশ্চিত, যে সে স্পটেই মারা গেছে। কিন্তু আজ তাহলে ভিড়ের মধ্যে আমি কাকে দেখলাম?

*

সেনা কল্যান ভবনের তের তলায় আমার অফিস। আমি একটা মাল্টি ন্যাশনাল কম্পানির ব্রাঞ্চ ম্যনেজার। মাত্র ছত্রিশ বছর বয়েসে আমি ক্যরিয়ারে যতোটা উন্নতি করেছি এতটা অনেকে কল্পনাও করে না। আমি পরিশ্রমি মানুষ। কিন্তু ইদানিং আর কাজে মন বসাতে পারি না। কিছুক্ষনের মাঝেই সব গুলিয়ে ফেলি। ইন্সমনিয়ার রুগীর সবচে বড় সমস্যা কনসেন্ট্রেশন। আমার উচিত দীর্ঘ ছুটি নিয়ে বিশ্রাম করা। কিন্তু আপনি যদি ঘুমাতেই না পারেন তাহলে বিশ্রাম কিভাবে সম্ভব। ডাক্তার দেখিয়েছি। সে এক গাদা পিল লিখে দিয়েছে। সে সব গিলে কোন লাভই হয়নি। শেষ বার ডাক্তার বলল অনেক সময় গুরুতর মানসিক সমস্যার লক্ষন হিসেবেও ইন্সমনিয়া দেখা দিতে পারে। ওষুধ খেয়ে যখন কিছু হচ্ছে না, আপনি বরং একজন ভাল সাইকিয়াট্রিস্ট দেখান।

সাইকিয়াট্রিস্ট দেখান হয়নি। ছুটিও নেয়া হয়নি। অফিসে যতক্ষন থাকি, কোন কাজ না করতে পারলেও নিজেকে ব্যস্ত রাখতে পারি। কিন্তু ঘরে আমার দম বন্ধ হয়ে আসে। আমার স্ত্রি প্রায় একটি জড় পদার্থ। তার সাথে বসে গল্প করার উপায় নেই। বেশির ভাগ সময় সে এক পিল খেয়ে প্রায় অচেতন অবস্থায় বিছানায় পরে থাকে। ভাবতে অবাক লাগে, চরম অসুস্থ এই মহিলাটিকে নিয়ে কিভাবে আমি আমার জিবনের নয়টি বছর পার করে দিলাম।

আজ সারা দিন মিটিং। আমি বাথরুমে ধুক্লাম হাত মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ার জন্য। মুখে ঠাণ্ডা পাইর ঝাপটা দিতে বেশ ভাল লাগল। চোখ মুছে আয়নায় তাকাতেই দেখলাম সেই মেয়েটি আমার পেছনে দারিয়ে আছে। ভীষণ চমকে আমি ফিরে তাকালাম।

বাথ্রুমে আমি ছাড়া আর কেউ নেই।

বুঝতে পারছি আমার হেলুসিনেসন হচ্ছে। ডাক্তার বলেছিল ইন্সমনিয়ার একটি পরযায়ে গিয়ে হেলুসিনেসন শুরু হতে পারে। এখন যা দেখছি সব হেলুসিনেসন।

কিছুতেই মিটিং এ মন দিতে পারলাম না। গুরুত্বপূর্ণ কিছু ডিল মিস হয়ে গেল।

চরম ক্লান্তি নিয়ে বাড়ি ফিরলাম।

গলার টাইটা আলগা করে বারান্দায় বসেছি। সন্ধ্যা নামতে শুরু করেছে।

“চাচা, হাত মুখ ধুয়ে আসেন। আমি আপনার চা নিয়ে আসছি।“

ভীষণ চমকে আমি মুখ তুলে তাকালাম। আমার সামনে সেই মেয়েটা দারিয়ে আছে। আমি কিছু বলার আগেই সে ভেতরের ঘরে চলে গেল।
আমি তো ভয়ঙ্কর অসুস্থ। আমি মেয়েটিকে কল্পনা করে আমার ঘরের ভেতর নিয়ে এসেছি। এমনকি সে আমাকে এখন চাচা বলে সম্বোধন করছে। বাড়ির মাঝে স্বাধীন ভাবে ঘুরে বেরাচ্ছে। যেন সব কিছু তার কত পরিচিত।

হেলুসিনেসন কখনো দুই চার সেকেন্দের বেশী স্থায়ি হয় না। আমি বারান্দায় স্থির বসে অপেক্ষা করতে থাকি। মেয়েটিকে অবশ্যি খুব তারাতারি আর দেখতে পাব না।

“আপনার চা নেন।“

ধূমায়িত এক কাপ চা মেয়েটি আমার দিকে বারিয়ে দ্দিয়েছে।
আমি হাত বারানর সাহস পাচ্ছি না। নিজেকে বিশ্বাস করতে পারছি না।

“কি হল, কতক্ষন ধরে থাকব?” মেয়েটি বিরক্ত হয়ে তাগাদা দেয়।

আমি চায়ের কাপ হাতে নিলাম। মেয়েটি আমার পাশেই একটা চেয়ারে বসল। “আজ অনেক্ষন চাচির জ্ঞান ছিল। আপনার কথা বারবার জিজ্ঞাসা করছিল। আমি যতই বলি চাচা অফিসে গেছে, ফিরতে সন্ধ্যা হবে, তার মনেই থাকে না। একটু পর আবার জিজ্ঞাসা করে আপনি কই।“

আমি কোন কথা বললাম না। মেয়েটি বলে চলল, “চাচি একটু আগে ঘুমিয়ে পরেছে। আর পনের মিনিট জেগে থাকলেই আপনার সাথে দেখা হত। আহা বেচারা।“

আমি অনেক কষ্টে গলায় শক্তি সঞ্চয় করে জিজ্ঞাস করলাম, “তুমি কে?”
মেয়েটা ফিক করে হেসে ফেলল। “চাচা কি আমাকে চিনতে পারছেন না? আপনাকে বধ হয় গরমে ধরেছে। দেখে মনে হচ্ছে কেমন ঘোরের মধ্যে আছেন।“

আমি চুপ করে রইলাম। মেয়েটি উঠে দাঁড়াল, “আমি যাই, অনেক কাজ জমে আছে।“

আমি তাকে পেছন থেকে ডাকলাম, “শোন”

কি?

“তুমি আমার হাতটা একটু ধরবে?”

মেয়েটা আবার হেসে ফেলল। “চাচার আজকে হথাত কি হছে বলেন তো?”

“কিছু হয়নি, তুমি কি আমার হাতটা একবার স্পরশ করতে পারবে।“

মেয়েটি সহজ ভাবেই আমার হাত স্পর্শ করল।

***
রাত দেড়টার দিকে আমি গাড়ি নিয়ে বের হয়ে পরলাম। ঘরে আর একটা মিনিট থাকলে আমি হার্ট ফেল করেই মারা যেতাম। যেই মেয়েটিকে আমি রাস্তায় পিষে মেরে ফেলেছি সে দিব্যি আমার বাসায় ঘুরে বেরাচ্ছে। আমাকে চা বানিয়ে দিচ্ছে, ডিনার তৈরি করছে, গুনগুন জ্ঞান গাইছে। যেন সে এই ঘরেরই একজন। আমি মেয়েটির দিকে তাকাতে পারছি না। তাকে কিছু জিজ্ঞেস করতেও ভয় পাচ্ছি। শুধু জানি এইটা আমার হেলুসিনেসন নয়। হেলুসিনেসন এতক্ষন স্থায়ি হয় না। আর সে যদি কল্পন হবে তাহলে কিভাবে আমাকে স্পর্শ করল।

গাড়ি নিয়ে আমি মাতালের মত ছুটছি। কথায় যাচ্ছি নিজেও জানি না। শুধু জানি আমাকে বাসা থেকে দূরে সরে যেতে হবে, অনেক দূরে।

একটা জংলা মত জায়গায় আমি গাড়ি থামালাম। জায়গাটা কোথায় আমি চিনতে পারছি না। কিন্তু জায়গাটা তারপরও পরিচিত মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে এখানে আমি আগেও একবার এসেছি। কখন, কেন সে সব মনে করতে পারছি না। হেড লাইতের আল নিভিয়ে আমি গাড়ি থেকে নাম্লাম। আশেপাশে বর বর ঝপঝার। একটু দুরেই একটা ডোবা দেখতে পাচ্ছি। ডোবা থেকে বিশ্রী দুরগন্ধ উঠে আসছে। আমি একটা সিগারেট ধরালাম।
জায়গাটা কি নির্জন। আমার গা ছম ছম করে উঠল। মনে হল আমার এখানে থেকে ঠিক হচ্ছে না। কেউ আমাকে এখানে দেখে ফেললে বড় বিপদ হবে।

হঠাৎ গাড়ির শব্দ শুনতে পেলাম। আরেকটা গাড়ি এসে থামল জঙ্গলের কাছে। দরজা খুলে এক মাঝ বয়েসি পুরুস বের হয়ে এল। সিগারেট ছুরে ফেলে আমি লুকিয়ে পরলাম বড় একটা ঝোপের আড়ালে। মানুষটির চেহারা অন্ধকারে বুঝা যাচ্ছে না। সে আমার গাড়িটা লক্ষ করেনি। দ্রুত সে হেটে গেল নিজের গাড়ির পেছনে। ট্রাংক খুলে বড় একটা বস্তা নামিয়ে আনল। দেখেই বুঝা যাচ্ছে বস্তাটা বেশ ভারি। মাতির উপর দিয়ে ছেঁচড়ে সে বস্তাটা নিয়ে চলল ডোবার পারে। মাঝ পথে বস্তার বাধন খুলে গেল। অস্পষ্ট কণ্ঠে লোকটা গাল দিয়ে উঠল। নিঃশ্বাস বন্ধ করে আমি দেখলাম বস্তার ভেতর থেকে একটি মানুষের হাত বেরিয়ে এসেছে। হাতটি একটু একটু নড়ছে। বস্তার ভেতরের মানুষতা কি এখন বেচে আছে? লোকটি অতি দ্রুত বস্তার মুখ আবার বেধে ফেলল। তারপর বস্তাটা গরিয়ে দিল দবায়। দেখতে দেখতে বস্তাটা অদৃশ্য হয়ে গেল। কোন দিকে না তাকিয়ে আবার উঠে বসল তার গাড়িতে। তারপর হুস করে যে পথে এসেছিল সে পথেই অদৃশ্য হয়ে গেল। আমি গাড়ির লাইসেন্স নম্বরটি দেখার চেষ্টা করলাম। গাড়ির তেরল লাইতের আলয় যততুকু পরতে পারলাম তা হচ্ছে ক৩৪৫২। পাগলের মত আমি ডোবায় ঝাপিয়ে পরলাম। নাড়ি উলটে আসা গন্ধ উপেক্ষা করে ডুব দিয়ে বস্তাটা পারে তুলে আনলাম। টেনেটুনে বস্তার মুখ খুলতেই বেশ কিছু সময় চলে গেল। ভেতরের শরীরটিকে বের করে আনতে বেশ পরিশ্রম করতে হল। সেলফনের আলয় চরম বিস্ময় নিয়ে দেখলাম বস্তার ভেতর সেই শরীরটি জিবিত নয়।

বেশ কয়েক দিনের পুরনো একটি মৃতদেহ। কারন শরীরটি পচে গলে গেছে।

এবং দেহটি সেই মেয়েটির।

***
পরের দিন আর অফিসে গেলাম না। সারাটা দিন এক রকম ঘোরের মধ্যে কেটে গেল। মেয়েটিকে ঘিরে রহস্যের কোন সুরাহা হচ্ছে না। বলা বাহুল্য কাল রাতে ঘরে ফিরে আর মেয়েটিকে দেখতে পাইনি। তাহলে কি সারাটা সন্ধ্যা এমনকি রাতেও আমি তাকে কল্পনা করেছি? সেতা কি করে সম্ভব? আমার এখন দৃঢ় বিশ্বাস মেয়েটি ঘরেই ছিল। কল্পনা এত বাস্তব হতে পারে না।

সন্ধ্যায় কম্পিউটার খুলে বসেছি। পুরনো দিনের ছবিগুলো দেখছি। আমার বিয়ের ছবি। আহা, মিতু তখন দেখতে কত সুন্দর ছিল। আমাদের হানিমুনের ছবি। কি সুন্দর ছিল সেই দিনগুল। কয় বছর আগের কথা এগুল? অথচ এখন সব কিছু কত বদলে গেছে। বিছানায় শুয়ে থাকা মিতুকে দেখে কে চিনতে পারবে এই মিতুই ছবির মিতু। হানিমুন থেকে ফেরার পরই তার শরীর খারাপ হতে শুরু করে। আমি আর সামনে এগিয়ে যাই। এই ছবিগুলো রিসেন্ট তোলা। আমাদের গত বিবাহ বার্ষিকীর। মিতু তখন ভীষণ অসুস্থ। বিছানায় উঠে বসতেই কষ্ট হয়। তবুও তার জেদ বিবাহ বার্ষিকী করতেই হবে। বড় জকন অনুষ্ঠান করা হয়নি। শুধু আমরা দুজন কেক কেটে আনন্দ করেছি। সেই বোধ হয় শেষ মিতুর মুখে হাসি দেখতে পেয়েছি।

হঠাৎ আমার মনে প্রশ্নটা উকি দেয়। জদ্দুর মনে পরে অনুষ্ঠানে আমরা দুজন ছাড়া আর কেউ ছিল না। তাহলে ছবিগুলো কে তুলেছিল। এত গুল ছবি নিশ্চয় অটো ক্লিক দিয়ে তুলিনি। চোখ কুচকে আমি ছবিগুল আবার ভাল করে দেখলাম। আমাদের একটা যুগল ছবিতে আমি পেছনের আয়নায় আরেকটি মানুষের ছায়া আবিস্কার করলাম। নিশ্চয় যে ব্যক্তি ছবিটি তুলেছে তারই প্রতিচ্ছবি পেছনের আয়নায় ধরা পরেছে। মানুষটির চেহারা বুঝা যাচ্ছে না। ছবিটা জুম করে আবার দেখলাম।

এবার আয়নার প্রতিচ্ছবিটিকে চিনতে পারলাম।

আয়নায় প্রতিচ্ছবিটি সেই মেয়েটির।

**
আমার স্ত্রি ঘুমিয়ে ছিল। দুই হাতে ঝাকিয়ে তাকে ঘুম থেকে জাগালাম। সে ধরমর করে জেগে উঠে বলল, “কে কে, কি হয়েছে?”

“মিতু তুমি কি এই মেয়েটিকে চিনতে পারছ?” আমি হাতের আই প্যাডে ছবিটি মিতুকে দেখালাম।
মিতু ছবিটা একবার দেখল। তারপর এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে রইল।

“কি হল? এভাবে চেয়ে আছ কেন? মেয়েটি কি আমাদের পরিচিত?” আমি অধৈর্য হয়ে উঠলাম।

“তুমি সত্যি ওকে চিনতে পারছ না?”

“না”

“তোমার ইন্সমনিয়াটা খুব বেরেছে তাই না?”

“হবে হয়ত, এ কথা কেন জিজ্ঞেস করছ?”

“ওর নাম জরি। দু মাস আগেও আমাদের বাসায় কাজ করত। তোমার মনে নেই?”

“নাহ”

“সত্যি তুমি মনে করতে পারছ না?’

একদম না

“ও কিভাবে মারা গিয়েছে সেটাও নিশ্চয় তুমি ভুলে গেছ?”

“মেয়েটা মরে গেছে?”

“হু”

“কিভাবে?”

“তুমি সত্যি জানতে চাও? ভুলে গেলে আর মনে করার দরকার নেই।“

“আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি। আমাকে জানতেই হবে কি হয়েছিল ওর।“

“ওকে খুন করা হয়েছিল।“ মিতু শিতল কণ্ঠে বলে।

“সেকি!!”

“তোমার এখনো কিছু মনে পরছে না?”

“নাহ। কিভাবে খুন হয়েছিল?“

“ওকে প্রথমে রেপ করা হয়েছিল। তারপর গলা টিপে হত্তা করা হয়।“

“কি সর্বনাশ, আমি তখন কোথায় ছিলাম?”

“তুমি বাড়িতেই ছিলে।“

“আশ্চর্য, তাহলে আমি কেন কিছু মনে করতে পারছি না?”

“আমার মনে হয় তুমি সেই ঘটনাগুলো মনে করতে চাও না। তাই তোমার অবচেতন মন জোর করে সেই সৃতিগুলো মুছে ফেলেছে।“

“কি বলছ এসব? আমি কেন মনে করতে চাইব না?”

“জানি না। হয়ত অপরাধ বোধ থেকে। তিব্র অপরাধ বোধ থেকে এমনটা হতে পারে। জানইতো আমি মনবিজ্ঞানের ছাত্রি ছিলাম।“

“আমার কেন অপরাধ বোধ হবে?”

“তোমার কি মনে হয়?” মিতু তিব্র কণ্ঠে জিজ্ঞেস করে।

“আমি জানি না।“ আমি অনিশ্চিত কণ্ঠে উত্তর দেই।

“তুমি জানতে চাও?”

আমার কণ্ঠে কোন কথা যোগায় না। কিসের যেন ভীষণ একটা আশংকা হতে থাকে।

মিতু নিজেই উত্তর দেয়, “ওকে তুমি খুন করেছিলে।“

আমি স্থানুর মত বসে থাকি। আমার মাথায় ভীষণ যন্ত্রনা হচ্ছে। মনে হচ্ছে কেউ আমার মস্তিষ্কের ভেতর দিয়ে গরম ছুরি ঢুকিয়ে দিচ্ছে।

একটু একটু করে আমার কাছে সব কিছু পরিষ্কার হয়ে আসে। প্রথম থেকেই জরি মাকে ভীষণ আকর্ষণ করত। পনের ষোল বছরের একটা হাসিখুশি মেয়ে বাসার মধ্যে দাপিয়ে বেরাচ্ছে। এক সময় আমি তাকে নিয়ে মনের অজান্তেই ফ্যান্টাসাইজ করতে শুরু করি।

এক রাতে আমি আর নিজের উপর নিয়ন্ত্রন রাখতে পারলাম না।
জরি কিছুতেই চিৎকার বন্ধ করতে চাইছিল না।
আমি ওর গলা চেপে ধরলাম।
মেয়েটা কখন মরে গেল!

এরপর আমি ঠাণ্ডা মাথায় কাজ করলাম। দ্রুত জরির মৃত দেহ একটা বস্তায় ভরে ফেললাম। বস্তাটা নিয়ে গেলাম আমাদের বাড়ি থেকে বহু দূরে। জংলা মত একটা জায়গা দেখে বস্তাটা ফেলে দিলাম ডোবার ভেতর।

এরপর থেকেই আমার ইন্সমনিয়া দেখা দিতে শুরু করে। ঘুম চির কালের মত আমার চোখ থেকে বিদায় নেয়। সেই সাথে দেখা দেয় সৃতি বিভ্রম আর হেলুসিনেসন। আমি অতীত আর বর্তমান গুলিয়ে ফেলতে শুরু করি। কোনটা বর্তমানে ঘটছে, আর কোনটা আমার অতীত সৃতি আমি আলাদা করতে পারি না। অতীত সৃতিগুলো ও আমার কাছে বর্তমানে ঘটছে বলে মনে হয়।

“তুমি এখন মনে করতে পারছ?”

আমি মাথা নাড়ি।

“তুমি ভীষণ অসুস্থ”

আমি যন্ত্রের মত উঠে দারাই।

মিতু বলে, “তোমার কাছ থেকে আমি কিছু বিষয় গপন করে গেছি। এগুল আমার গপন করা উচিত হয়নি। আমার খাটের নিচে ছোট একটা বক্সে কিছু জিনিস রাখা আছে। সময় করে খুলে দেখ।“

আমি কোন কথা বলি না। বিছানা থেকে একটা বালিশ তুলে নেই। তারপর সেতা নিয়ে এগিয়ে যাই মিতুর মাথার কাছে।

“তু...তুমি কি করছ?” মিতু ভয় পাওয়া গলায় জিজ্ঞেস করে।

“আমি স্যরি মিতু”

বালিশটা আমি মিতুর মুখে চেপে ধরি। মিতু দুর্বল হাতে বাধা দেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু রোগ ভোগা শরিরে আমার সাথে পেরে উঠে না। কিছুক্ষণের মধ্যেই মিতুর শরীর নিথর হয়ে যায়।

চেয়ারে বসে আমি কপালের ঘাম মুছি। বড় বড় করে নিঃশ্বাস নেই। বুকটা এখনো ধক ধক করছে। নিজেকে শান্ত হয়ার জন্য আমি সময় দেই। উতলা হয়ার কিছু নেই। মিতু সব কিছু জানত। ওকে কিছুতেই বেচে থাকতে দেয়া সম্ভব ছিল না। কেউ আমাকে সন্দেহ করবে না। মিতু দীর্ঘ দিন ধরেই অসুস্থ। শ্বাস কষ্টে তার মারা যাওয়া অদ্ভুত কিছু নয়।

ধিরে ধিরে আমি স্বাভাবিক হয়ে আসি।

বিছানায় মিতুর মৃত দেহটি শুয়ে আছে। চোখ খোলা। আমি কি ওর চোখটা বন্ধ করে দেব? থাক, এখন আর ওকে স্পর্শ করতে ইচ্ছে করছে না।
আচ্ছা মিতু আমার কাছে কি গোপন করে গেছে বলছিল?
বিছানার নিচে আমি মিতুর কথা মত একটা ছোট বাক্স খুঁজে পেলাম।
বাক্সের ভেতর কিছু নেই, শুধু একটা পুরনো চিঠি। চিঠিটা আমার এক দুসম্পর্কের চাচা গ্রাম থেকে আমাকে লিখেছিলেন। মজার ব্যপার এই চাচার সাথে বহুদিন আমার কোন যোগাযগ নেই। তিনি কেন আমাকে চিঠি লিখতে যাবেন? আর মিতুই বা কেন সেই চিঠি আমার কাছ থেকে লুকিয়ে ফেলবে?

আমি চিঠিটা পরতে শুরু করি।

স্নেহের আজিজ,
আশা করি পরম করুণাময়ের দয়ায় স্ত্রীকে লইয়া ভালই আছ। তোমার স্ত্রির শরীর এখন কেমন? তাহার জন্যে মাঝে মাঝে বড় দুঃখ হয়। এমন ফুলের মত একটা মেয়ে, অথচ কি তার অসুখ। আল্লাহতায়ালা কেন তাহার দিকে মুখ তুলিয়া তাকায় না তাহা আমার চিন্তার অতীত। আমরা সকলে ভাল আছি। তুমি তো এখন আর আমাদের বিশেষ খোজ খবর রাখ না।

যাহাই হউক, যে কারনে তোমার কাছে এই পত্র লিখতে বসিয়াছি। তোমার নিশ্চয় জুবাইরার কথা স্মরন আছে? আমি জানি তার কথা তোমার নিকট বলা ঠিক নয়। তোমার এখন নিজের স্ত্রি সংসার হইয়াছে। এইসব পুরনো কথায় তোমার বিপদ হইতে পারে। তথাপি বিশেষ পরিস্থিতির কারনে বাধ্য হুইতেছি।

তুমি আর জুবাইরা অল্প বয়সে ঘর হইতে পলায়ন করিলে। কিন্তু তাহাতে লাভ হইল না। তোমার ধনবান পিতা লোক লাগাইয়া অল্প দিনের মধ্যেই তোমাকে ধরিয়া আনিল। ভাইজান তোমাকে শহরে পরাশনা করতে পাঠাইয়া দিলেন। তুমি আর জুবাইরার কোন খোজ রাখিলে না। শহরেই বিবাহ করিয়া সংসার পাতিলে। জুবাইরা তোমার সহিত যোগাযোগের বহু প্রচেষ্টা করিয়াছে। কিন্তু তোমার পিতার কারনে সফল হয় নাই।

এক রাতে জরিনাকে তার পিতা মাতা আপন গৃহ হইতে বিতাড়িত করে। আর কোন উপায় না দেখিয়া সে আমার বাড়িতে উপস্থিত হয়। আমি জানিতে পারিলাম সে অন্তসত্ত্বা। আমি ভাইজানের আপত্তি সত্ত্যেও জুবাইরাকে আপন গৃহে আশ্রয় দেই। সন্তান জন্ম দিবার কালে সে মারা যায়। মৃত্যুর আগে সে একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেয়। আমার উপর তোমার পিতার করা নির্দেশ ছিল কখনো ভুলেও যেন এই কন্যা সন্তানটির কথা তোমাকে জানতে না দেই। আমি তাহার নির্দেশ পালন করি। মেয়েটি আমার নিকট থাকিয়াই বাড়িয়া উঠে।

এখন তোমার পিতা বেহেস্তগামি হইয়াছেন। আমিও তাহার লৌহ শৃঙ্খল হইতে মুক্ত হইয়াছি। এখন আর তোমায় সত্য জানাইতে আর বাধা নাই। এই মেয়েটিকে লইয়া আমি নিদারুন অর্থ কষ্টে পরিয়াছি। ভাইজান বাচিয়া থাকিতে তিনি মাঝে মাঝে অর্থ সাহাজ্য করিতেন। এখন সেটাও বন্ধ। আর তাছাড়া যত বড় হইতেছে মেয়েটি ততই সুন্দর হইয়া উঠিতেছে। তাহাকে গ্রামের আর দশ্তা বদ পুরুষের নজর হইতে রক্ষা করিতে গিয়া আমি বিশেষ পেরেশান হইয়াছি। অতপর উপায়ন্তর না দেখিয়া মেয়েটিকে তোমার নিকট পাঠাইয়া দেয়াই মনস্থির করিয়াছি।

সে এখন জানে না তাহার পিতা কে। তাহাকে কিভাবে তুমি সত্যটা জানাইবে তাহা তোমার বিবেচনা। তোমার সহিত বহুবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করিয়াছি, সফল হই নাই। অতপর তোমার স্ত্রির সহিত কথা বলিয়াছি। সে ভিতরের খবর কিছু জানে না। তাহাকে জানানো হইয়াছে ঘরের কাজে সাহাজ্য করিবার উদ্দেশ্যে এক খানা লোক পাঠানো হইতেছে। তাহাকে সত্যি ঘটনা জানানোর দায়িত্ব ও তোমার উপরই রইল।

তোমার সাথে বিশদ আলাপ না করিয়াই মেয়েটিকে পাঠাইয়া দিলাম। তুমি মনক্ষুন্য হইয়ো না। এছারা আমার আর কোন উপায় ছিল না।
ও আচ্ছা, আমি তাহার নাম রাখিয়াছি জরি। তাহার মায়ের সাথে মিলাইয়া নাম। আশা করি তুমি অখুশি হইবে না। মেয়েটি অতিশয় লক্ষ্মী কিন্তু বড় দুখী। এইবার আপন পিতার নিকট গিয়া সে হয়ত জীবনে দুই দণ্ড শান্তি খুজিয়া পাইবে এই প্রার্থনাই করি।

তোমরা সকলে ভাল থাক।

ইতি

তোমার কাকা আজমল হাওলাদার

সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে অক্টোবর, ২০১১ রাত ১২:৪৩
৪০টি মন্তব্য ৩৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×