কলেজের বেতন, পরীক্ষার ফি'সহ বিভিন্ন খরচ যোগাতে ছাত্রদের অভিভাবকের কাছে হাত পাততে হয় কিংবা প্রাইভেট টিউশনি বা অন্য কোনো কাজ করে নিজের লেখাপড়ার খরচ চালাতে হয়- সাধারণভাবে এমনটাই আমরা জানি। কিন্তু কখনও কি শুনেছেন, কোনো শিক্ষার্থী তার কলেজের বেতন যোগাড় করতে ব্যাংক ডাকাতির মতো জঘন্য অপরাধ করে বসেছে অথবা বাবা-মার কাছ থেকে কলেজের বেতন আদায় করতে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন রাজ্যে ঘটে যাওয়া এমনই কিছু বিচিত্র কাহিনী তুলে ধরা হলো—
লেখাপড়ার খরচ না দেয়ায় বাবা-মা'র বিরুদ্ধে মামলা!
বামদিকের ছবির এই অষ্টাদশী সুন্দরীর নাম র্যাচেল ক্যানিং। বসবাস নিউ জার্সির লিংকন পার্ক এলাকায়। কলেজের বকেয়া বেতন, যাতায়াত ভাড়া আর পকেট খরচ বন্ধ করে দেয়ায় বাবা-মা'র বিরুদ্ধে মামলা করে বসে এই মেয়েটি। শেষ পর্যন্ত বাবা-মা মেয়ের সব খরচ মিটিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে মামলা তুলে নেয় র্যাচেল। পরবর্তী সময়ে বছরে ৫৬ হাজার ডলার স্কলারশিপে ওয়েস্টার্ন নিউ ইংল্যান্ড ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনার সুযোগ পায় সে।
লাইব্রেরিতেই ৮ মাস
২০০৪ সালে নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ঘটনা। হোস্টেল খরচ দেয়ার সামর্থ্য না থাকায় গোপনে ভার্সিটির লাইব্রেরিতেই রাত কাটাতো ২০ বছরের তরুণ স্টিভ স্ট্যানজ্যাক। সঙ্গে রাখা ব্যাগে থাকতো ল্যাপটপ কম্পিউটার, বই ও কিছু কাপড়-চোপড়। অন্যান্য জিনিসপত্র রাখতো লকারে। এভাবেই কর্তৃপক্ষের চোখকে ফাঁকি দিয়ে সে কাটিয়ে দেয় আটটি মাস। তবে ভার্সিটির অনলাইন জার্নালে লাইব্রেরিতে নিজের রাত কাটানোর অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে ধরা পড়ে যায় স্টিভ। তবে দয়ালু কর্তৃপক্ষ স্টিভকে বের করে না দিয়ে তাকে ভার্সিটিরই একটি কক্ষে অল্প খরচে থাকার ব্যবস্থা করে দেয়।
খাবার খেয়ে লেখাপড়ার
খরচ যোগাড়
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিন-এর কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ছাত্র এরিখ দাহল (ডাক নাম সিলো) খাবার খেয়ে তার লেখাপড়ার খরচ মেটাচ্ছে। কিভাবে? তাহলে শুনুন সে কাহিনী। পরিবারের আর্থিক টানাপোড়েন সত্ত্বেও মেধাবী সিলো এ লেভেল পর্যন্ত লেখাপড়া কোনোমতে চালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। মুশকিলটা হয় ভার্সিটিতে পড়তে গিয়ে। এত ব্যয়বহুল লেখাপড়ার খরচ মেটাতে হিমসিম খায় সিলো। এক পর্যায়ে তার লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। সেই সময়ে সিলোর সহপাঠিরা আবিষ্কার করে সিলো বেশ ভোজনরসিক, পেটুকই বলা যায়। তাদের পরামর্শে খাওয়া-দাওয়ার প্রতিযোগিতায় নাম লেখায় সিলো। আর যায় কোথায়। পেটুক সিলো এক সময়ে নিজেকে একজন শীর্ষস্থানীয় খাদক হিসাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়। একের পর এক খাবারের প্রতিযোগিতায় জিততে থাকে সে। দ্রুত আয় করে ফেলে ১৮ হাজার ডলারেরও বেশি অর্থ যা সে তার লেখাপড়ার খরচ মেটাতে ব্যয় করে। কিন্তু সিলোর খাবার খাওয়া আর থেমে থাকেনি। বর্তমানে পৃথিবীর দ্রুততম খাদক হিসাবে তার স্থান তৃতীয়।
শেষ পর্যন্ত ব্যাংক ডাকাতি
২০০৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও রাজ্যে দুই ভার্সিটি ছাত্র ব্যাংক ডাকাতির মতো গুরুতর অপরাধ করে বসে। পরে অবশ্য ধরা পড়ে যায় ক্রিস্টোফার এভেরি ও অ্যান্ড্রিউ বাটলার নামে এই ছাত্রদ্বয়। তাদের দাবি ছিল ভার্সিটির খরচ যোগাড় করতেই তারা এই অপকর্ম করে বসে। কিন্তু এ কথা বলে বিজ্ঞ বিচারকের মন গলাতে পারেনি তারা। বিচারক বলেন, ব্যাংক থেকে যে বিপুল পরিমাণ অর্থ তোমরা ডাকাতি করেছিলে ভার্সিটির টিউশন ফি দিতে এত ডলার লাগে না। আর কি! ব্যাংক ডাকাতির দায়ে দুই গুণধর ছাত্রের ২০ বছরের সাজা হয়ে যায়।
চার্চ ফান্ড থেকে চুরি
যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো রাজ্যের এপিসকোপাল চার্চে ঘটেছিল এই অভিনব ঘটনাটি। গরীব, এতিম শিশুদের লেখাপড়ার জন্য সৃষ্ট চার্চ ফান্ড থেকে অর্থ আত্মসাতের দায়ে রেভারেন্ড ডোনাল্ড আর্মস্ট্রং-এর ৪ বছর জেল হয়ে যায়। দু'ছেলে-মেয়ের কলেজের খরচ মেটাতে চার্চ ফান্ড থেকে ডলার সরিয়েছিলেন তিনি। কতো ডলার জানেন- ৯৯ হাজার।
রাস্তায় ডিস্কো ড্যান্স
যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান এভিনিউ- এর রাস্তায় এক সময় ডিস্কো নাচ নেচে মানুষকে মাতিয়ে রাখতো জেসন হপকিন্স নামে এক হাইস্কুল স্টুডেন্ট। এভাবে তিন বছরে সে আয় করেছিল প্রায় ৩০ হাজার ডলার যার পুরোটাই নিজের লেখাপড়ার খরচ মেটাতে ব্যয় করে এই ডিস্কো ড্যান্সার। মজার ব্যাপার হলো জেসনের ডিস্কো ড্যান্সের উপর কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছিল না। তার গুরু ছিলেন জন ট্রাভোল্টা। তবে সরাসরি নয়, ১৯৭০ দশকের সাড়া জাগানো ছবি 'স্যাটার্ডে নাইট ফিভার' ছবির মাধ্যমে। ছবির নায়ক ট্রাভোল্টার চমত্কার ডিস্কো ড্যান্স জেসনকে প্রবলভাবে আকর্ষণ করে। সে ট্রাভোল্টার সব ছবি যোগাড় করে ডিস্কো ড্যান্স প্র্যাকটিস করতে শুরু করে।
১. ০২ রা জুন, ২০১৪ দুপুর ১:৪৮ ০
আমাদের দেশেও এমন অনেক উদাহরণ আছে। রিকশা চালিয়ে ইন্টার পাশ করা এমন অনেক ছেলেকেই আমি দেখেছি।
এদের নিয়ে যদি কেউ এমন একটা পোস্ট লিখত!