সম্প্রতি কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোট উপজেলার রায়কোট ইউনিয়নে স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন মজনু বাবার অনুসারী-ভক্তবৃন্দ। স্থানীয় একটি স্বার্থান্বেষী চক্র নিরীহ অসহায় মজনু বাবার ভক্তদের পিছনে উঠে পড়ে লেগেছে। মিথ্যা মামলা জুড়ে দিয়ে আধ্যাত্মিক ধারায় চলা সুফি-সাধকদের এই সম্প্রদায়কে বিনা দোষে অন্যায়-অত্যাচার করে নানা অজুহাতে প্রশাসনের কাছে দোষী সব্যস্ত করা হচ্ছে। এই ধারায় বিশ্বাসী অনুসারীদেকে নানা ভাবে অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে তারা।মাহিনী বাজারের নিরীহ কর্মকার উত্তম কুমারকে বিনা কারণে মারধর করে তার দোকানের আলমারি ও জিনিসপত্র ভাংচুড় করে দিয়েছে স্থানীয় ওই মহলটি। মজনু বাবার অনুসারী আমরুল ইসলাম নামের এক যুবককের বিরোদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে পুলিশে ধরিয়ে দিয়েছে প্রভাবশালী ওই চক্রটি। নিজেরা মটরবাইকে আগুন ধরিয়ে নিরীহ আমরুলের উপর চাপিয়ে দিয়ে তাকে পুলিশ ডেকে থানা হাজতে পাঠিয়েছে। জানা গেছে – যুবকটিকে পুলিশের আওতায় নিয়ে বেধড়ক মারধর করে মিথ্যা স্বীকারোক্তি গ্রহণ চেষ্ট চালানো হচ্ছে। মজনু বাবার অন্যান্য অনুসারীদেরকেও পুলিশে খুঁজে বেড়াচ্ছে এলাকা। কারণ, অজ্ঞাত নাম দিয়ে মামলা দায়ের করেছে স্বার্থান্বেষী ওই মহলটি
সত্য বল সুপথে চল ওরে আমার মন...এই কথাটি বলাই ছিলো তাদের অপরাধ। যারা ঘর-বাড়ি, মায়ার সংসার ত্যাগ করে একমাত্র আল্লাহ ও তার রাসুলের অনুসারী হয়ে সুফিবাদকে বুকে ধারন করে ওলি-আউলিয়াদেরকে ভালোবেসে নিজেরকে এই অশান্ত মায়ার কানন থেকে লোভ, লালসা, হিংসা, নিন্দা তথা ষড়রীপুর তাড়না থেকে নিজেকে মুক্ত রেখে আত্মশুদ্ধির সাধনায় সর্বক্ষণ নিয়োজিত । যারা আত্মসংশোধন ও নিজকে চেনা-জানার জন্য লোক-সমাজের অন্তরালে কঠুর সাধনায় লিপ্ত তারা আজ লাঞ্ছিত হচ্ছে আমাদের এই সমাজেরই এক শ্রেণীর স্বার্থান্বেষি মানুষের অত্যাচারের পৃষ্টকলে। বন্ধুগন,আমি তাদের নিয়েই কিছু কথা আপনাদের সামনে তুলে ধরতে চাই ধারাবাহিকভাবে। প্রশাসন এবং সাংবাদিক ভাইদের বিনীত দৃষ্টি আকর্ষণ করছি – আপনারা শান্তি ও আত্মশুদ্ধির সুবিন্যাস্ত পথ ও মত সুফিবাদকে সমাজের স্তরে স্তরে প্রচার-প্রসারে এবং দেশ ও জাতির কলংকময় অধ্যায় জঙ্গীবাদ তথা উগ্রবাদকে নির্মূল করার লক্ষ্যে আসুন সত্যকে তুলে ধরি সবার মাঝে। নির্দোষ অসহায় মজনু বাবার অনুসারীদেরকে স্বার্থান্বেষী মহলের নির্যাতন, অত্যাচার ও ষড়যন্ত্রের হাত থেকে বাঁচাতে আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদের ঝড় তুলে সামনে দাঁড়াই। আমি আপনাদেরকে এই সম্প্রদায় তথা মজনু বাবা ও তার ভক্তদের বিষয়ে ধারাবাহিক ভাবে অবগত করতে চাই আমার নিজ দেখা বাস্তবতার আলোকে। এরপর আপনাকের মাঝেই ছেড়ে দেবো তাদের দোষ-গুনের বিচারভার।
নানান রঙের পোষাক পরিধান করে ঘুরে বেড়ান শাহ মো. জাহাঙ্গীর আলম মজুমদার (বিএসএস) হালে মজনু বাবা। তাকে ভক্তগন দয়াল নামেও ডাকেন। কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলাধীন রায়কোট ইউনিয়নের কুকুরীখিল গ্রামে তার জন্ম এবং বাসস্থান। তার বাবার নাম আব্দুল বারেক বিএসসি দাদার নাম সিদ্দিক মাস্টার। তার নানা ছিলেন পীরে কামেল আলহাজ্ব মাওলানা বশীর উল্লাহ পাটোয়ারী। যার মাজার শরীফ হোমনায় অবস্থিত। শাহ মো. জাহাঙ্গীর আলম মজুমদার তথা দয়াল হলেন দুই কূলের ধনে ধনী এবং নিজ সাধনাগুনে আধ্যাত্মিক জগতের কিংবদন্তি সাধক। তিনি একদিকে বাবা মজনু শাহ্ এর একমাত্র শীষ্য এবং অন্যদিকে নানা বশীর উল্লাহর আধ্যাত্মিক শিক্ষায় উত্তীর্ণ। তার উপরে আপন মুর্শিদ মজনু শাহ-এর হাল লক্ষ্য করা যায়। তাই তাকে হালে মজনু বাবা বলে ডাকেন তার ভক্তবৃন্দ।
চলা ফেরার সময় কখনো তার হাতে থাকে চাঁদ-তারকার লৌহদণ্ড অথবা পাক পাঞ্জাতন। খুব কাছ থেকে তাকে দেখার জন্য দুবাই থেকে কুমিল্লা> নাঙ্গলকোট >রায়কোট>ঝাটিয়াপাড়ায় উপস্থিত হয়েছিলাম। দীর্ঘ ১৮ দিন ঘুরে বেড়িয়েছি তার সংগে। শত শত মানুষের শত সহস্র ভাব-ভঙ্গির সাথে পরিচিত হতে পেরেছিলাম ওই ১৮টি দিনে। কুমিল্লার ৩/৪টি উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে ঘুরে বেরিয়েছি সকাল-সন্ধ্যা-গভীর রাত অবধি।
ঘুরেছি-বেল্টা,ঝাটিয়াপাড়া,পশ্চিম বামপাড়া,পূর্ব বামপাড়া,নাঙ্গলকোট,লাকসাম,নূরনগর, বিরুলী, বুলয়াপাড়া, কুকুরীখিল, মাহিনী বাজার, শান্তির বাজার, মনতলী, বাংগড্ডা, তুলাতুলি, হোমনা, ওপারচর, শ্রীফলীয়া, একতারবাজার, তিলিপ, আলীপুর, চৌদ্দগ্রাম, লক্ষ্মীপদুয়া,রাজেশপুর, কেশতলা,বুলুয়া পাড়া আরো অনেক নাম না জানা গ্রাম-গঞ্জ ও শহর-শহরতলী।
(চলবে)
লেখকঃ মো. ফারুক হোসেন
দুবাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত।
hossaifaruque@yahoo.com
২২/০৮/২০১৭ইং
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ১১:২০