নাস্তিকের ধর্মকথা নামে এক ব্লগার হাস্যকর হলেও সত্য যে, ইসলামের দুর্বলতা দেখানোর চেষ্টা করছেন। অন্যদের থেকে তিনি কমেন্ট আদায় করছেন যে, ইসলাম কত বেশি অশ্লীল। তার এ কাজে আমার কোন আপত্তি ছিল না যদি তিনি ঠিকঠাকমত আয়াতগুলো তুলে ধরতেন। যেমন তিনি তারএই পোস্টেলিখেছেন....
আয়াত ২৪: সকল সধবা নারীদের তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে, কিন্তু তোমাদের স্বত্বাধীন যেসব দাসী রয়েছে তাদের হারাম করা হয়নি। এ হল তোমাদের জন্য আল্লাহর বিধান। এদের ছাড়া অন্য সব নারীকে তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে এ শর্তে যে, তোমরা তাদের কামনা করবে অর্থের বিনিময়ে বিয়ে করার জন্য, ব্যভিচারের জন্য নয়। বিয়ের মাধ্যমে যে নারীদের তোমরা সম্ভোগ করেছ তাদের দিয়ে দিবে তাদের নির্ধারিত মহর। আর তোমাদের কোন গুনাহ হবে না যদি মহর নির্ধারণের পর তোমরা কোন বিষয়ে পরষ্পর সম্মত হও। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ, হেকমতওয়ালা।..........
আগের পিছের আয়াত ছাড়া যা খুবই বেমানান দেখাচ্ছিল। অনুবাদটাও ঠিকমত দিয়েছেন বলে মনে হচ্ছে না। এই আয়াতটি ঠিক আগের আয়াতের সাথে খুবই সঙ্গতিপূর্ণ। কার সাথে বিয়ে জায়েজ আর কার সাথে তা নাজায়েজ এ ব্যাপারে আয়াত দুটিতে বর্ণিত হয়েছে বিস্তারিতভাবে।
" তোমাদের উপর হারাম করে দেয়া হয়েছে তোমাদের মা, তোমাদের মেয়ে, ভগ্নি, ফুফু, খালা, ভাইঝি, ভাগ্নী এবং তোমাদের সেইসব দুধমা। আর তোমাদের দুধবোন, তোমাদের স্ত্রীদের মা, তোমাদের স্ত্রীদের মেয়েরা যারা তোমাদের ক্রোড়ে লালিতা পালিতা হয়েছে.... সেইসব স্ত্রীর মেয়েরা যাদের সাথে (সেইসব স্ত্রী) তোমাদের স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে। কিন্তু যদি স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক স্থাপিত না হয়ে থাকে, তবে তোমাদের কোন দোষ হবে না। আর তোমাদের ঔরসজাত স্ত্রীদের পুত্রগণ এবং একই সঙ্গে দুইবোনকে বিবাহ করা তোমাদের প্রতি হারাম করা হয়েছে। কিন্তু পূর্বে যা হয়েছে, তাতো হয়েই গিয়েছে। বস্তুত, আল্লাহ ক্ষমাশীল ও অনুগ্রহকারী।" (নিসা, আয়াতঃ ২৩)
"সেইসব মেয়েলোকও তোমাদের জন্য হারাম যারা অন্য কারও বিবাহাধীন রয়েছে; অবশ্য সেইসব স্ত্রী লোক এর বাইরে যারা যুদ্ধে তোমাদের হস্তগত হবে। এটা আল্লাহর তরফ থেকে প্রদত্ত আইন যা মেনে চলা তোমাদের জন্য কর্তব্য করে দেয়া হয়েছে। এতদ্ব্যতীত আর যত মেয়েলোক রয়েছে তাদেরকে নিজেদের মাল-সম্পদের বিনিময়ে (মোহরানা) হাসিল করা তোমাদের জন্য হালাল করে দেয়া হয়েছে, যদি বিবাহের দুর্গে তাদেরকে সুরক্ষিত কর এবং স্বাধীন-মুক্ত যৌন-স্পৃহা পূরণে উদ্যত না হও। কাজেই, দাম্পত্য জীবনের যে মধু তাদের দ্বারা তোমরা লাভ কর, তার বিনিময়ে তাদের মোহরানা ফরয হিসাবে আদায় কর। অবশ্য মোহরানার প্রস্তাব হওয়ার পর পারস্পরিক রেযামন্দী সহকারে যদি তোমাদের মধ্যে সমঝোতা হয়ে যায়, তবে তাতে কোন দোষ নেই, আল্লাহ সর্বজ্ঞ-জ্ঞানী।" (নিসা, আয়াতঃ ২৩)
লক্ষনীয় ব্যপার হলো, দুনিয়ার মানুষকে তাঁর বিধান জানিয়ে দিতে আল্লাহপাক লজ্জাবোধ করেন না। আরও মজার ব্যাপার হচ্ছে, বিয়ে হচ্ছে সুরক্ষিত দুর্গ, স্বাধীন-মুক্ত যৌনস্পৃহা (ব্যভিচার) নিষিদ্ধ। মোহরানা নারীদের অধিকার, তবে স্বামী চাইলে সমঝোতা করতে পারে, যেখানে জোর-জবরদস্তী নেই।
উক্ত ব্লগারের ব্যাপারে আমরা সতর্ক থাকি। তাঁর উদ্ধৃত কোরআনের আয়াত যাচাই বাছাই ছাড়াই যেন গ্রহণ না করি।