ঘূর্ণিঝড়ের রাত । রুকু, ডিকেন, রোমেল, নয়ন, রাসেল, নিপুনরা ঢাকার মেসে আড্ডা দিচ্ছিল - ঝড়টা বয়ে গেলো তাদের মন দিয়েও । অন্ধকারে বসেই সিদ্ধান্ত নিলো কিছু একটা করা দরকার । পরের দুটো দিনের সংবাদপত্রগুলোর ছবিগুলো যেনো তাদের সিদ্ধান্তের সম্মতি জানালো । ওরা তারপরের কয়েকদিন শ্যামলী, নিউমার্কেট, মিরপুর ঘুরলো - যার কাছে যা পাওয়া যায় । নিউমার্কেটের হকাররা যে যা পারলো কাপড় দিল । রুকু সদ্য পাশ করা ডাক্তার । কিছু ওষুধ আর স্যালাইনও জোগাড় হল । তারপর আমরা চললাম বড়্গুনার পথে একটা ট্রাকে করে । রওনা দিয়েছিলাম রাত ১১টায় । বরিশালের আগ থেকেই মনে হল, কে যেন একটা মুগুর দিয়ে সব গাছগুলোকে অবিরাম বাড়ি দিয়েছে । প্রতিটা গাছের একি অবস্থা । অনেক জায়গায় গাছ পড়ে বাড়িঘর ভেঙ্গে ফেলেছে । রাস্তাঘাট ক্ষতবিক্ষত । বড়্গুনায় পৌছলাম পরের দিন ১১ টায় । তারপর নদীর ঘাটে স্যালো নৌকা ঠিক করলাম ড্যামা চরে যাব । একঘন্টার পথ । ভাটার সময় বলে কাদা পেরিয়ে ১০ মিনিট পর গ্রাম । আমাদের মাঝিরও ২টা নৌকা ঝড়ে হারিয়ে গেছে । গ্রামে পৌছে একবেলার খাবার আর একাটা করে কাপড় বিলি করলাম । এখানে খাবার পানির অভাব । ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে প্রচুর । বিলি করে আমরা যখন ফিরে আসছি, তখনো অন্যকোন গ্রাম থেকে ছুটে আসছে মানুষ । যেতে অনেক ঝক্কি বলে এসব গ্রামে ত্রানও আসছে কম । সঙ্গে ডাক্তার ছিলো বলে অনেকে অনেক রোগের কথা বল্লো । রুকু অসহায়ের মত আমাদের দিকে তাকাচ্ছে – তার কাছে তো এত অসুধ নাই । আমরা যখন নৌকাতে উঠে গেছি, তখন দেখি কোমর পানি পেরিয়ে এক মা তার বাচচা নিয়ে দৌড়ে আসছে । প্রচন্ড জ্বর তার ছেলের । রুকু ছেলেটির গায়ে হাত দিয়ে দেখলো । আমরা নৌকা ছেড়ে দিলাম ।
চলবে...