রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) খোলার পর আবারো আন্দোলনে নেমেছে ছাত্রলীগ। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্লাসে যেতে বাধা দেওয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আন্দোলনের মুখে ১৬ দিন ছুটির পর রোববার বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়া হলে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করে ছাত্রলীগ কর্মীরা আবাসিক হলগুলোতে তালা ঝুলিয়ে দেয়।
পরে উপাচার্য অধ্যাপক ড. সিরাজুল করিম চৌধুরীর উপস্থিতিতে ওইসব হলের তালা খুলে দেওয়া হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রুয়েটের একাধিক শিক্ষার্থী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "ক্লাসে না যাওয়ার জন্য ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করেছে।"
তারা অভিযোগ করেন, শিক্ষক ও পরিবহন সংকটসহ বেশ কিছু দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ আন্দোলন শুরু করলেও এখন শুধু ছাত্রলীগই নিজেদের স্বার্থে এ আন্দোলন করছে।
প্রশাসনের কাছ থেকে টেন্ডারবাজি ও অন্যান্য বিষয়ে সুবিধা আদায় না করতে পেরে তারা উপাচার্যের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছে বলেও অভিযোগ শিক্ষার্থীদের।
শিক্ষক সংকট নিরসন, হলে ইন্টানেট সংযোগ, পূর্ণাঙ্গ শহীদ মিনার স্থাপন, শেখ হাসিনার নামে ছাত্রী হলের নামকরণ, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ, ক্রীড়া শিক্ষক নিয়োগ ও খেলার মাঠ সংস্কার, হলে ডাইনিংয়ে খাবারের মান উন্নত করা ও লোডশেডিং কমানো, আধুনিক মিলনায়তন ও নতুন হল নির্মাণ, শিক্ষার্থীদের জন্য দুটি বাস ক্রয়, রুয়েট ক্যাম্পাসে শিবিরের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের বিচার দাবি করে প্রায় ছয়মাস ধরে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে আসছেন।
গত ১৭ জানুয়ারি এ আন্দোলনের সঙ্গে ছাত্রলীগ একাত্মতা ঘোষণা করে। দাবি বাস্তবায়নে প্রশাসনিক ব্যর্থতার অভিযোগ এনে ১৮ জানুয়ারি থেকে লাগাতার ধর্মঘট শুরু করে ছাত্রলীগ।
গত ২০ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভায় ২১ জানুয়ারি থেকে ৫ ফেব্র"য়ারি পর্যন্ত শীতকালীন ছুটি ঘোষণা করে।
অচলাবস্থা নিরসনে গত ২৩ জানুয়ারি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে রুয়েট প্রশাসনের বৈঠক হয়। বৈঠকে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দাবি পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়নের প্রতিশ্র"তি দিলে শিক্ষার্থীরা তা মেনে নেন।
ওই বৈঠকে রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়ারুজ্জামান লিটন, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম ঠাণ্ডু, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল মান্নানসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উপাচার্য অধ্যাপক সিরাজুল করিম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "সমঝোতা বৈঠকের পরও ছাত্ররা কেন আন্দোলন করছে তা তিনি জানেন না। আন্দোলনকারীরা এ নিয়ে আমার সঙ্গে কথা বলেনি।"
তিনি জানান, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্লাসে যেতে বাধা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে।
সুত্রঃ Click This Link