somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ECONO DX বলপেনটি কেন হারিয়ে গেল ?? পড়ুন বিস্তারিত ঃ-

২৫ শে জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


আচ্ছা আপনাকে যদি প্রশ্ন করা হয় ছোট বেলা আপনি যে কলমটি দিয়ে লিখেছিলেন সেটি মনে আছে কিনা?
ECONO DX ECONO DX ECONO DX.

বলা যায় ৮০ থেকে নব্বই দশকের যারা আছেন। তারা সবাই ECONO DX কলম দিয়েই লেখা শুরু করেছেন। এটি শুধু আপনাদের ছোট বেলার পছন্দের বলপেনই ছিল না বরং বাংলাদেশের বলপেন ইন্ডাস্ট্রির শীর্ষ ব্রান্ড হিসেবে ও পরিচিত ছিল। কিন্তু সময়ের সাথে তারা পিছিয়ে পড়ে। এবং একটা সময় তারা মার্কেট প্রায় হারিয়ে যায়। কিন্তু এর পিছনে কি কারণ ছিল?সেটি নিচে দেওয়া হলোঃ

ECONO বলপেন এর প্রতিষ্ঠাতা GQ গ্রুপ ১৯৮১ সালে যাত্রা শুরু করে। কোম্পানিটি ১৯৮৮ সালে প্রথম বলপেন প্রস্থুত করা শুরু করে। তাদের প্রথম বলপেনটি ECONO DX নামে ব্রান্ডিং করা হয়। সে সময় বলপেনটির দাম ধরা হয়েছিল ৩ টাকা। বলপেনটির দাম খুব রিজেনেবল হওয়ায়। সবার চাহিদার শীর্ষে ছিল ECONO DX। খুব অল্প সময়ের মধ্যে স্কুল কলেজ ও অফিস সহ প্রায় সব জায়গায় বলপেনটি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করে।

শহর থেকে শুরু করে গ্রাম অঞ্চলেও বাড়তে থাকে ইকোনোর সেল। বলপেনটির সাফল্যের মাত্র ৫ বছরের মধ্যেই GQ এর রেভিনিউ প্রায় দ্বিগুনের বেশি হয়ে যায় ।১৯৯৩ সালে GQ এর রেভিনিউ ছিল ২৫ কোটি টাকা ।ইকোনোর বিপুল পরিমাণ সেলের পিছনে কারণ ছিল ? তারা খুব সাশ্রয়ী মূল্যে বলপেনটি পৌছাতে পারছিলো।১৯৯৭ ছিল GQ এর সব চাইতে ভালো সময়। সে বছর তাদের রেভিনিউ ছিল প্রায় ৪০ কোটি টাকা। এভাবেই বেশ কিছু দিন মার্কেটে নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখতে সক্ষম ছিল ECONO DX.সে পর্যন্ত এর সব কিছু ভালই যাচ্ছিল তাদের জন্য।

তারপর ১৯৯৮ সালে বাজারে আসে মেটাডোর। মেটাডোর এর বলপেনের সাথে ইকোনো ডি এক্স এর বলপেনের বেশ তফাত ছিল। মেটাডোর এর বলপেন গুলো রাবার ফিনিশিং হওয়ায় লিখতে খুব কমফোর্টেবল হতো। তাছাড়া মেটাডোর এর গ্রিপ গুলো অতন্ত্য সুক্ষ হওয়ায় খুব স্মোথলী লেখা যেত। অপর দিকে ECONO DX কলম গুলোতে কোন প্রকার গ্রীপ ছিল না।প্লাস্টিক মেটারিয়াল দিয়ে তৈরী স্বরভূজ আকৃতির ডিজাইন ছিল ইকোনোতে।যার ফলে এই বলপেনটি দিয়ে লিখতে খুব একটা কমফোর্টেবল হতো না।

অনেক সময় পকেটে রাখলেও কালি বেরিয়ে যেত।কিন্তু মেটাডোর এর বলপেন টিতে ছোট একটি পিন দেওয়া থাকার কারণে কলি জমে বা বের হয়ে যেত না । সকল কারণে মেটাডোর বলপেনটির দাম কিছুটা বেশী হওয়া পর ও সবাই মেটাডোর এর প্রতি আকৃষ্ট হতে থাকে
।তাছাড়া এভাবেই তিলে তিলে মেটাডোর ইকনো ডি এক্স এর মার্কেট শেয়ার কেড়ে নিতে থাকে।১৯৯৭ সালে ৪০ কোটি থেকে ২০০৩ সালে GQ এর রেভিনিউ কমে ২২.৫ কোটিতে নেমে যায়।

২০০৪ সালে GQ ০.৫ মিলিমিটার এর নিপ সম্ভলিত ইকোনো ডি এক্স বলপেটি বাজার জাত করে। কিন্তু ততোদিনে মেটাডোর অনেকাংশে মার্কেট ডমিনেট করে ফেলে।তাছাড়া মেরিট এবং অলিম্পিক এর মত কোম্পানী গুলো তাদের বলপেন বাজারজাত করার ফলে ইকোনো ডি এক্স আরো পিছিয়ে পড়ে।এবং তাদের হারানো মার্কেট শেয়ার আর ফিরে পায়নি।

২০০৭ সালে GQ এর রেভিনিউ কমে ১৭ কোটিতে নেমে যায়। ২০০৮ সালে তারা সেল বাড়ানোর লক্ষে ইকোনোর বেশ কিছু মডেল এর বলপেন বাজারে লন্চ করে। কিন্তু মেটাডোর এবং অনান্য বলপেন কোম্পানি গুলোর তুলনায় তাদের মার্কেটিং এর প্রচারনা ছিল খুবই অনুন্নত। এর ফলশ্রুতিতে বলতে গেলে ইকোনো প্রায় মার্কেট থেকে হারিয়ে যায়।

[তবে আপনাদের কাছে কি মনে হয় ইকোনো ডি এক্স এর ব্যার্থতার আর কি কারণ হতে পারে?]


[ বিজনেজ ইনসপেকশন বিডি ইউটিউব চ্যানেল থেকে শেয়ার করেছি]
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুন, ২০২০ রাত ১০:৪৮
১৯টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

Dull Friday !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ২:৩৭


ইদের ছুটি শেষ হতে চলেছে। বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ ঈদের ছুটিতে ঢাকা থেকে বাড়িতে যায়। আমার ক্ষেত্রে বরবার উলটো ঘটনা ঘটে। কুমিল্লা থেকে ঢাকায় এসেছি ঈদের ছুটিতে এবার।... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিটিংয়ের জন্য কেন এত তোড়জোড়?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ০৫ ই এপ্রিল, ২০২৫ ভোর ৫:১২



অর্থাৎ চীনের সহায়তায় লালমনিরহাটের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের এয়ার বেইস চালুর চেষ্টা, তিস্তা মহাপরিকল্পনা চীনকে নিয়ে বাস্তবায়নের পরিকল্পনা ও চীনে গিয়ে ডক্টর ইউনূসের সেভেন সিস্টার্স সম্পর্কিত বক্তব্য ভারতের ভালো লাগেনি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

কানাডার প্রধানমন্ত্রী ঈদের শুভেচ্ছা এবং বাংলাদেশে এর প্রতিফলন

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ০৫ ই এপ্রিল, ২০২৫ ভোর ৬:১৮



গত বছরের মতো এবছর আর কানাডার প্রধানমন্ত্রী ঈদের শুভেচ্ছা জানাননি। রোজার শুরুতেও “রামাদান করিম” শুভেচ্ছাবচনটি কেউ পাঠায়নি। আগে যখন ট্রুডো ঈদের ঠিক আগে আগে সরকারি দপ্তর থেকে কানাডার মুসলিম... ...বাকিটুকু পড়ুন

অকুতোভয় বাসচালক মো. সোহেলকে পুরষ্কৃত করা হোক

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৯:১৭

অকুতোভয় বাসচালক মো. সোহেলকে পুরষ্কৃত করা হোক

ছবিসহ মিনি পোস্টারটি এআই দিয়ে তৈরিকৃত।

থেঁতলানো চোয়াল, ভেঙ্গে গেছে দাঁত, রক্তাক্ত অবয়ব—তবু ৪০ কিমি বাস চালিয়ে যাত্রীদের বাঁচালেন! এই সাহসী চালকই বাংলাদেশের নায়ক... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর পর যা হবে!

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৫ ই এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১০:৪২



বেহেশত বেশ বোরিং হওয়ার কথা।
হাজার হাজার বছর পার করা সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে। দিনের পর দিন একই রুটিন। এরচেয়ে দোজক অন্য রকম। চ্যালেঞ্জ আছে। টেনশন আছে। ভয় আছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×