অনেক দিন ব্লগ এ লেখা ছাপানো হয়নি। তবে সর্বদা নজর ছিল ও থাকবে। দেশি-বিদেশী পত্রিকার পাশাপাশি ব্লগিং জগৎ চোখ বুলিয়ে যাই।
বাংলাদেশে এই কোভিড-১৯ সংক্রামিত হবার আগে কিছু তথ্য হাতে ছিল, দেওয়া হয়নি। ব্যাপারটা জনগুরুত্বপূর্ণ ছিল তবুও আতংক ছড়ানোর ইচ্ছা ছিল না্। তার উপর সরকারি তীক্ষ্ণ নজরদারিতে পরারও বিন্দুমাত্র ইচ্ছা নাই। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অবৈধ প্রয়োগ হতে পারত। ধারা ২৫। আক্রমণাত্মক, মিথ্যা বা ভীতি প্রদর্শক, তথ্য-উপাত্ত প্রেরণ, প্রকাশ ইত্যাদি।—(১) যদি কোনো ব্যক্তি ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ডিজিটাল মাধ্যমে।—(খ) রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি বা সুনাম ক্ষুণ্ন করিবার, বা বিভ্রান্তি ছড়াইবার, বা তদুদ্দেশ্যে অপপ্রচার বা মিথ্যা বলিয়া জ্ঞাত থাকা সত্ত্বেও, কোনো তথ্য সম্পূর্ণ বা আংশিক বিকৃত আকারে প্রকাশ, বা প্রচার করেন বা করিতে সহায়তা করেন,
তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য্য হইবে একটি অপরাধ।
তবে এখন যা হবার হয়ে গিয়েছে।
বাংলাদেশে সংক্রামিত হবার আগে অনেক বাংলাদেশী বিমান ব্ন্দর ত্যাগ করেছেন,কোন পরীক্ষা-জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়া। কিন্তু তখনও পৃথক্করণ(Quarantine) চালু ছিল। এমনকি নির্দিষ্ট অঞ্চল বা দেশ থেকে আশার কারনে সাময়িক পৃথক্করণ শিবির(আশকোনা) নেবার পরও অর্থের(ঘুষ) বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এই তথ্যটা বিশ্বাসযোগ্য সূত্র থেকে পেয়েছি। যারা এই ঘুষের সুবিধা পেয়েছে তারা খুবই খুশি! তাদের খুশিতে আমরা খুশি না হলেও, যথেষ্ট কারণ আছে তাদের পক্ষে। তাদের ভয় ছিল যে পৃথক্করণ প্রক্রিয়াটা স্বচ্ছ হত কিনা। ব্যাপারটা সত্য যে হজ্ব শিবির বিশ্বেষায়িত কোন পৃথক্করণ শিবির নয়। এটা পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পেরেছি। তাদের ভয়টা সত্য ছিল। এতে সংক্রামিত হয়েছে ১ জনও থাকলে সবাইকে বা আরও কয়েকজনকে নিয়েই বনভোজনের মত করে আক্রান্ত হত বা হয়েছে! এখন আসছি ঘোষখোরদের কাছে, বিমানের কর্মী থেকে আইন প্রয়োগকারী লোকজনের উপর। ধরে নিলাম আশকোনা হজ্ব শিবির নয় বরং একটি পৃথক্করণ(Quarantine) শিবির বা হাসপাতাল। তখনও যারা সামান্য কিছু অর্থের বিনিময়ে আইন বা নিয়ম অমান্য করছে, ঘুষ নিচ্ছে বা ঘুষ দিতে বাধ্য করছে। তারা তো অর্থের বিনিময়ে নিজের দেশকে বিক্রি করে দিবে, নিজের মা কেও বিক্রি করতে দ্বিধা বোধ করবে না। স্বাধীনতার রূপকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবতো ঠিকই বলেছেন, ''দেশ স্বাধীন করলে সবাই পায় সোনার খনি আর আমি পেয়েছি চোরের খনি!
আমার ডানে চোর, বাঁয়ে চোর, সামনে চোর, পিছনে চোর, চোর আর চোর!''। এখন দেশ উন্নত তাই চোর আর চোর নাই, এখন ডাকাত। প্রবাসীদের হজ্ব শিবিরে এনে কৃত্তিমভাবে প্রলুব্ধ করা হয়েছে ঘুষ দেবার জন্য। সেখানে খাদ্য, চিকিৎসা, বাসযোগ্য পরিবেশ ইত্যাদির কৃত্তিম সংকট তৈরী করে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করা। যাতে ঘুষ কিছু পাওয়া যায়! একজন সাময়িক পৃথক্করণ শিবিরে অবস্থানের সময় রাজনৈতিক ব্যক্তির মত প্রতিবাদ করছেন, তিনি অর্থ প্রেরণকারী যোদ্ধা (remittance warrior) ইত্যাদি। তার প্রতিবাদের ভাষা ভিন্ন হতে পারত, তিনি বিদেশ যাচ্ছেন নিজ ও পরিাবরের সুখের আশায় কিন্তু রাষ্ট্রের সুখের আশায় নয়। এভাবে বলা যেত যে, তার পরিবার ও তিনি এই রাষ্ট্রের অংশ। জনতা স্বাচ্ছন্দ্যে থাকলে রাষ্ট্র সুখে থাকবে, রাষ্ট্রের উন্নতিতে সহযোগীতা করতে পারবে, কর ও ইত্যাদির মাধ্যমে উন্নতিতে অংশীদার হবে। সে মোতাবাকে তাদের পূর্ণ অধিকার আছে, সঠিক ও সুন্দর সেবা পাবার। কিন্তু আতংকে ও কৃত্তিমভাবে সংকট-ভয় তৈরী করানোতে সব তালগোল পাকানো হয়েছে। এই হিসিবে এখানে শিক্ষিত/অর্ধশিক্ষিত/অশিক্ষিত ফালতু উপাধি কাজ করবে না, যেটা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা বিনোদনমাধ্যমে দেওয়া হচ্ছে। যেমন facebook ও youtube -এ দেওয়া হচ্ছে। অর্থ প্রেরণকারী যোদ্ধা (remittance warrior) ব্যাপারটায় সম্পূর্ণ একমত নই। বৈদেশিক মুদ্রা প্রেরণকারীরা দেশের অর্থনীতিতে সহযোগিতা করছে তবে যোদ্ধা আখ্যা দিতে চাই না। মূল বিষয় হল শিক্ষিত ও অশিক্ষিত সবাই আতংকে আতংকিত হয়। এটা নিয়ে মজা করা উচিত নয়। অনেকেই গুছিয়ে বলতে পারে না বা অনেকেরটা সুন্দর হয়।
সংবাদ মাধ্যমে জানতে পারলাম অনেকে সংক্রামিত রোগের লক্ষণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আর ভয়ে হাসপাতাল রোগী শূন্য তো হয়েছেই হয়েছে, সাথে সাথে সংক্রামিত লক্ষণের রোগীও পালিয়ে গিয়েছে। এটা আতংকে ও ভয়ের কারনে হয়। যেখানে চিকিৎসা কেন্দ্রই তার একমাত্র পথ সুস্থ হবার, যদি সংক্রামিত হয়ে থাকে। কেউ নিশ্চয়ই বিনা চিকিৎসায় মরতে চায় না। ভয়ে হিতাহিতা জ্ঞান সম্ভবত হারিয়ে ফেলেছে। সংক্রামিত হয়ে থাকলে, এখন এটা ছড়িয়ে যাবে।
১৭-১৮ গুরুত্বপূর্ণ দিন। মানুষ রটাচ্ছে ১৮ তারিখ সব প্রকাশ হবে। যা ঘটে তার কিছুনা কিছু রটে। তা প্রকাশ পেয়েছে ১৮ তারিখই তবে তা আগে থেকেই জানা ছিল শুধু ১৭ তারিখটা পার হবার অপেক্ষায়। আচ্ছা বঙ্গবন্ধু আজ যদি আমাদের মাঝে থাকতেন তাহলে কি এটা করতেন? এটা আওয়ামীপন্থী বলেন আর ভিন্নমত বলেন, সবার কাছে প্রশ্ন। নিজের মনকেই প্রশ্ন করুন। আক্রান্ত প্রথম যে হবে তার জন্য বিশেষ কোন দিনের অপেক্ষায় না থেকে সাথে সাথে গণমাধ্যমে প্রকাশ পাবারই কথা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একজন ছিলেন আর তিনি একজনই। তিনি আর কেউ হতে পারবে না। সর্বোচ্চ তার নাম ভেঙ্গে খেতে পারবে।
এরকম দুর্নীতি সমাজের ধমনীতে ও শিরায় প্রবাহিত হচ্ছে। সব দেশেই আছে কোথাও কম, কোথাও বেশি আর কোথাও অতিরিক্ত লাগামছাড়া।
কি রকম দেশ হলে, নিজ দেশের প্রধানমন্ত্রী বা প্রেসিডেন্ট অসুস্থ হলে বা রোগ যাচাই এর জন্য বিদেশে চিকিৎসা নিতে যায়। আর মন্ত্রী, আমলা-কামলা, জনগন আর সবার কথা বাদই দিলাম। ব্যাপারটা রাষ্ট্রের জন্য দুঃখজনক, বিব্রতীকর, অপমানজনক। অনেক খেতাবেই ভূষিত করা সম্ভব। স্বাধীনতার এত দিন পরও নিজ দেশের উপর ভরসা নাই, সেবা-দক্ষতার অভাব। মধ্য আয়ের দেশ হিসেবে নিজেকে নিয়ে মনে করা ইত্যাদি চিন্তায় আমরা উন্নয়নের মহাসড়কে আছি। পদ্মা সেতু থেকে ১টি দক্ষজনবল সমৃদ্ধ হাসপাতাল স্থাপন বা পরিচালনা জরুরী ছিল। আমাদের প্রধানমন্ত্রী চোখের ছানির অপারেশন হয়। যেটা বাহিরের বিদেশে হয়েছে। পরবর্তীতে তিনি দেশে check up করিয়েছেন। চোখের অপারেশনের অনেক আগেই তিনি মায়ের নামে নির্মিত হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়েছেন। তার উপর বলেছিলেন, ‘বিদেশে নেবেন না, আমি দেশেই চিকিৎসা নেব’। পুরনো পত্রিকাতে ঢু দিলে পাবেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এমন একজন পাঠকের মন্তব্য ছিল ''ভবিষ্যৎই বলে দিবে এটা কথার কথা কি না।''
শেষ পর্যন্ত পাঠকের তথ্যই সঠিক হয়েছে। বছর, সাল তারিখ দিয়ে দেওয়া অপ্রয়োজন মনে করছি, আরও বিস্তারিত জানতে চাইলে নিজে খুজে নেন। আমার বাবারও চোখের ছানির চিকিৎসা হয়েছে/অপারেশনও হয়েছে, বাংলাদেশেই হয়েছে।
তবে একজন প্রধানমন্ত্রী দেশকে প্রতিনিধিত্ব করে থাকেন। তার থেকে একমুখে দুই কথা মানায় না। কষ্ট হয়। বঙ্গবন্ধু এটা করতে না, তিনি ছিলেন স্পষ্টভাষী।
আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনেক ভাল কিছু করতে চাচ্ছেন এবং করছেনও। কিন্তু কিছু ভুল সিদ্ধান্ত সব সঠিক কাজকেও ঢেকে দিচ্ছে। আমি মনে প্রাণে চাচ্ছি উনি যেন বঙ্গবন্ধু হতে না পারলেও তার ভাল চিন্তাটা মনে আরও প্রবলভাবে বিশ্বাস করেন। জাতি তাকে ঠিক তার পিতার কন্যা বা আওয়ামী সভাপতি বা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয় বরং একজন সফল দেশনেত্রী হিসেবে মনে রাখবে।
আর অতিমুনাফালোভী দেশের সরকারি/বেসরকারি হাসপাতাল ও প্রতিষ্ঠানের syndicate আছে। যেখানে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হয়। সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থের দুর্নীতিতো রয়েছেই। যেখানে বিদেশে সে তুলনায় কম হয়। প্রশ্নফাসঁ প্রজন্ম থেকে অদক্ষ জনবল চিকিৎসা বিভাগে থাকতেই পারে!
এদিকে বাজারে চলছে মজুতের মহোৎসব। জাতির বিবেক তলানিতে। এই মজুত সংস্কৃতি আজকের মহামারী(epidemic) থেকে নয়। মনে হচ্ছে গোলা ভরা ধান থেকে হাজার বছরের সংস্কৃতি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ, রোজা, ঈদ, উৎসব সব সময়ই অতি মুনাফার একটা প্রচন্ড আকাঙ্খা। এটা ক্রীড়া সংগঠনের জুয়া থেকে ভয়ংকর। সমস্যায় আমরা একে অপরের সাথে সম্পৃক্ত-সহযোগীতায় না গিয়ে চাপ বাড়িয়ে দিচ্ছি।
shut down or lock down যে down up যাই বাংলাদেশে করা হোক। ধাল নেই তলোয়াড় নেই, নিধিরাম সর্দার। ব্যাপারটা এরকম বুলি হবে। বাংলাদেশ সেটা সামাল দেওয়ার মত যোগ্য নয়। তবে সেটা ছাড়া অন্য পথ খোলাও নাই। ছাত্রছাত্রীদের অনলাইনে পড়াশুনা করানোর মত সামর্থ্য নাই। পরীক্ষা তো দূরের কতা। অনেক দেশে জরুরী সেবা ছাড়াও জরুরী App চালু করেছে। ছাত্র ছাত্রীরা App দিয়ে পড়াশুনা করছে(শিক্ষক/শিক্ষিকা থেকে পড়ার দিক নির্দেশনা পাচ্ছে)। খাদ্য সহ অনেক কিছু দূরবর্তী নিয়ন্ত্রণে কাছে পাচ্ছে। রাস্তাঘাট এই ঘরঅবরুদ্ধ অবস্থায় জীবানুমুক্ত করা হচ্ছে। বাংলাদেশ সেই অবস্থায় নাই। সব কিছুরই সংকট। কোটি কোটি টাকা দিয়ে হেনতেন হচ্ছে। কিন্তু জরুরী কিছুরই প্রস্তুতি নেই। যাও আছে, তাও দুর্নীতিতে শতক হাকানোতে।
অনেকে বলে দেশে অরাজকতা বিরাজ করছে। কিন্তু তার মধ্যেই আশার বাণী। বিশ্বব্যাপী মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া নতুন করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ পরীক্ষার সহজ ও স্বল্পমূল্যের পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী আজ বুধবার দ্য ডেইলি স্টার অনলাইনকে বলেন, ‘এটা সত্যি ঘটনা। এটা ভিন্ন পদ্ধতি। এর নাম হলো: র্যাপিড ডট ব্লট।’ড. বিজন কুমার শীলের নেতৃত্বে ড. নিহাদ আদনান, ড. মোহাম্মদ রাঈদ জমিরউদ্দিন ও ড. ফিরোজ আহমেদ এই পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন। তবে পরীক্ষা করার পর যেন রক্ত নমুনাগুলি সঠিক পদ্ধতিতে ধ্বংস বা dispose করা হয়। যেহেতু এটা সহজলভ্য হবে তাই অনেক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পাঠানে হতে পারে। তা না হলে হিতে বিপরীত হতে পারে। বাংলাদেশ তো আবার ডাক্তারদের ব্যবহার করা হাতমোজা ইত্যাদি ময়লার ঝুড়ি থেকে সংগ্রহ করে সাবান/শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে আবার বিক্রয় করে!
অনেকে স্বপ্নে দেখে এই ভাইরাস কথা বলে!
.... থাক আর দীর্ঘ করতে চাই না।
সব সম্ভবের দেশ বাংলাদেশ।
(তথ্য বা বক্তব্যে ভুল থাকলে সংশোধন করা হবে)
শিরোনাম ছবিস্বত্ব: Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে মার্চ, ২০২০ রাত ৮:০৫