রমজান এল গেল, ঈদও চলে গেল। দুয়ারে ফুটবল বিশ্বকাপের দৌড়াদৌড়ি চলছে। অনেকদিন কিছু প্রকাশ করা হয় না তবে পড়া হয়। পড়তে আমার ভাল লাগে, জানতে ভাল লাগে। সেই ভাল লাগা থেকেই নতুন কিছু অংশ আপনাদের মাঝে দিতে এসেছি। ঈদের দিন কাজ থাকায় শুভেচ্ছাটা দিলাম না। কর্মজীবনে প্রবেশ করার পর থেকে ঈদের আনন্দটা প্রকাশ সেভাবে করা সম্ভব হয় না। যেভাবে বাচ্চারা করে থাকে, যে সময়টাকে আমি খুব খুজেঁ ফিরি।
পুরো নাম দিয়েগো আরমানদো মারাদোনা ফ্রাঙ্কো, যে যেভাবে ডাকতে স্বাচ্ছন্দ্য অনুভব করুন। খেলার মাঠে অবস্থান বলতে গেলে মধ্যমাঠের খেলোয়াড়, তবে ধাচেঁ আক্রমণাত্নক।
অনেকে পরিসংখ্যান দিয়ে অনেক কিছু যাচাই করেন। সে চিন্তা করলে তো একাধিক আরব ইসরাঈল যুদ্ধে আরবের তো শুরু থেকেই জয় পাবার কথা! আপনি সংখ্যা, উপাত্ত দিয়ে বিশ্লেষণ করলে ধারণা পাবেন এর থেকে বেশি কিছু নয়। তেমনি গোল ও বিশ্বকাপ দিয়েই ব্যবচ্ছেদ করে, একেই সেরা মনে করা উচিত নয়। যদিও ইতিহাসে জয়ীকে নিয়েই স্তুতি প্রস্তুত হয়।
নাম না জানা কত খেলোয়াড় এসেছে, গিয়েছে। তার মধ্য থেকেই কয়েকটি তারা জ্বল জ্বল করে। মারাদোনার নাম তুললে একটি নক্ষত্র সর্বদাই পিছু আসে সেটা হল পেলে। মানুষ যে দল বা সংঘকে পচ্ছন্দ করবে; তারই গুনগান গাইবে। এটাই স্বাভাবিক। আমিও ব্যতিক্রম নই। তবে সঠিক পর্যালোচনা করাই উদ্দেশ্য।
প্রথমেই মারাদোনার কৈশর এর একটি ভিডিও, যারা ভক্ত তাদের জন্য
মারাদোনা শারীরিকভাবে খুব শক্তিশালী ছিল যে কোন ফাউল উপেক্ষা করে এগিয়ে যেতে পারত। ফাউল হলেও বড় কোন ইনজুরিতে বারবার পড়তে হয় নি। আর ড্রিবলিং ছিল অসাধারণ। বলকে নিয়ে কিভাবে খেলা যায় আর তা দিয়ে প্রতিপক্ষকে কিভাবে নাঁচাতাে হয় তা সে ভালভাবেই রপ্ত করেছিল। আর আরেকটা কথা হল ক্ষিপ্রতা। এগুলো মিশিয়ে গতিময় ফুটবল যদি একজনই বল ঠেলে এগিয়ে যেতে থাকলে তাকে আপনি কি বলবেন? যার কোন বারতি আক্রমণভাগের খেলোয়াড়কে দিতে হচ্ছে বলকে গোল দিতে। যদিও ১১*২ সদস্যের খেলা ফুটবল তবুও এই প্রতিভাকে শ্রেষ্ঠ রূপ দিতে সমস্যা কই?
আমার হাসি পায় সবচেয়ে বেশি একজন মধ্যমাঠের আক্রমণ ভাগের খেলোয়াড় এর সাথে শুধু আক্রমণভাগের খেলোয়াড় এর সাথে পরিসংখ্যান মিলিয়ে একটি ফলাফলে আসা। পেলের একা দল টানতে হয় নাই, আর তার মাঠে অবস্থাটাও সেরকম ছিল না কখনো। যেখানে মারাদোনা করে গিয়েছে। Mid মারাদোনা Attacking striker(Forward) এ পেলে যদি একটি দলে খেলতেন তাহলে আমার বিশ্বাস তারা প্রতিপক্ষকে কাপিঁয়ে ফেলতেন। মারাদোনাকে অনেকে playmaker উপাধি দেন, আমি বলব সে রিখুয়েলমে বা জিদান থেকে অনেক বেশি বলব। মেসিকেও অনেকে একজন playmaker বলে কিন্তু আমি মনে করি তার মাঠের অবস্থান এর সাথে এটি যায় না।
মারাদোনা অন্ধকার জীবনের একটি হল কোকেইন তবে অনেকে এটিকে শক্তি বৃদ্ধিকারী মাদক মনে করলেও করতে পারেন; যা ভুল। কোকেইল কোন কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিকারী ঔষধ বা মাদক নয়। এটি শুধুই একটি মাদক যা মানুষকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। এতে স্বল্প সময়ের জন্য মানুষ মাদকের নেশায় থাকে এর থেকে বেশী কিছু নয়।
আর শেষটুকু বলা যায় হাত দিয়ে গোল দেওয়া, এই একটি বিষয় যা ব্রাজিল ভক্তদের খুব প্রিয়। একটি মানুষের ১০০ গুন থাকলেও ১ দোষই যথেষ্ট চেপে ধরার।
একজন সফল খেলোয়াড় একজন সফল কোচ হবেন বা ব্যক্তি জীবনের অনুপ্রেরণা হবেন তার নিশ্চয়তা নেই। সুতরাং মারাদোনার খেলার শৈলী অপ্রতিরুদ্ধ।
আরও লেখার ইচ্ছা ছিল। সময় স্বল্পতার জন্য বিস্তৃতি ঘটল না।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুন, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৮