এটি একটি মন্তব্য থেকে বিস্তৃত
হতাশ হবার মত খেলা তো খেলে নাই। খেলা মানেই বিনোদন। আর যেখানে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই না হবে সেখানে কিসের মজা! আমি বাংলাদেশী সর্মথক হয়েও অস্বীকার করব না যে ভারত বোলিং, ব্যাটিং, ফিল্ডিং ৩টি বিভাগেই উন্নত, তুলনায়। যা আপনি খেলাতেও দেখেছেন হয়ত কিন্তু গোড়া সমর্থক হবার বিধায় চোখে না পড়ারই কথা।
তবে ভারতের এই দলকে একেবারে ২য় সারির দল বলব না। কিছু অভিজ্ঞ খেলোয়াড়কে বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে। তারা থাকলে রান তিনগুন বা ৩০০ নিশ্চয়ই করত না বা বাংলাদেশকে ৫০ রানে বস্তা বন্দী করতে পারত না।
তারা নিয়মিত খেলে। তাদের আন্তর্জাতিক মানের খেলোয়াড় তুলনায় বেশি। তাদের বোলারও ব্যাটসম্যান বলা যায়।
সে তুলনায় বাংলাদেশ অনেক অনেক ভাল খেলেছে। আমাদের তরুণ খেলোয়াড়রা তেমন সব সময় ভাল করছে না। অভিজ্ঞদেরই অধিকাংশ সময় ভরসা করতে হয়।
আর আমার কাছে সৌম্যের বোলিং খারাপ লাগে নাই। যদি বোলিং রিপ্লে বিশ্লেষণ করুন তাহলে দেখতে পারবেন খারাপ করে নাই। ব্যাটসম্যান আদায় করে নিয়েছে। আর একটি ওভারে ১ বা ২টি বল বাজে হতে পারে আর তা ব্যাটসম্যান কাজে লাগায় বিচক্ষণভাবে ৫০ ওভার ম্যাচে। আর টি২০ ম্যাচ, যেখানে ভাল বলেও মেরে খেলতে হয় এবং খেলেও।
আর পেস বোলিংই হল গতি আর ভিন্নতার খেলা। সেখানে বাংলাদেশের নিয়মিত গতিমানব তাসকিনকেই দেখি কিন্তু তার ভিন্নতার অভাব আছে। সেখানে একটু কম গতির রুবেল তুলনায় ভাল ভিন্নতা আনতে পারে। কিন্তু সেরা আমি বলব মুস্তাফিজকে তবে ব্যথা পাওয়ার পর বোলিং করার ধরন পরিবর্তন করায় তার আগের ভিন্নতার একটু হলেও ঘাটতি আছে। কারণ তাকে এখন প্রতিপক্ষ ভালই পড়তে পারে। তাই এই নিদাহাস আয়োজনে সর্বোচ্চ খরুচে বোলার সে! তবে ফাইনালে সে ভাল করেছে।
আর স্পিন নিয়ে ত্যানা পেচাঁনো হচ্ছে সাকিব কেন করে না। সাকিবের হাতের আঘাত সম্পূর্ণ সেরে যায় নি বলেই হয়ত পূর্ণ স্পেল করে নাই। স্পিন বোলিং হল ঘোড়ানোর কাজ কিন্তু বাংলাদেশে সেরকম স্পিনার নাই। এটা আপনাকে স্বীকার করতেই হবে। সাকিব বা অমুক তমুক যেই করুক না কেন তাদের কাজই হল সঠিক জায়গায় বলটা পিচ করানো। ঠিক মত বোলিং করলে ব্যাটসম্যানকে আদায় করে নিতে হবে(৪,৬) না পারলে সীমানার কাছে আউট হবে নয়ত মাঝে মাঝে এলএলবি ড. পাবে এতটুকুই। কিন্তু আফগান বা জিম্বাবুয়েন ঐ সব স্পিনার এর মত আশা করা ঠিক হবে না।
সাকিব নিজেও যদি সৌম্যের জায়গায় করত আমার বিশ্বাস ভারতের কার্তিক প্রথম ৪ বলেই শেষ করত আর ২ বল বাকি থাকতেই জিতে যেত ভারত।
মিরাজও ভাল স্পিন পারে তবে সাকিবের মানের। সত্যিকারের স্পিনারের মানের নয়। হয়ত উন্নতি করবে। কিছু ব্যাপার থাকে ঈশ্বর প্রদত্ত আর কিছু আছে ঈশ্বর থেকে আদায় করে নিতে অধ্যাবসায়কে কেন্দ্র করে।
তাই সেরকম স্পিনার নাই সেখানে গতিই ভরসা যেখানে গতিতে/ভিন্নতায় খেই হারিয়ে ফেললেই ব্যাটসম্যান নিজের মূল্যাবান উইকেটটি হারাবেন। যেভাবে পেয়েছে মুস্তাফিজ মেডেন উইকেট।
রুবেল বা মুস্তাফিজের বোলিং স্পেল না থাকলে সৌম্য করেছে সে কারনেই। আর ভালই করেছে, সামর্থ্য অনুযায়ী।
আর ব্যাটসম্যান বোলার হলে ইতিবাচক দিক হিসেবে দেখা উচিত। সৌম্যকে পেস এ্যাটাকে দেখি নাই, তার গতির অভাব আছে, আরও গতি আনতে হবে আরও ভিন্নতা আনতে হবে সেই হবে পরবর্তী মাশরাফি আরও ভালভাবে হতে পারবে আমার বিশ্বাস যদি সে আগের ব্যাটিংশৈলীকে জাগিয়ে তুলতে পারে ও গতিময় পেস আমাদের উপহার দেয়। হয়ত তুলনায় ভাল খেলোয়াড় মাশরাফি হতে পারবে কিন্তু সে কাপ্তান মাশরাফি হতে পারবে না মনে হয়। পৃথিবীতে প্রত্যেকটা মানুষই ভিন্ন হয় বলে।
আক্ষেপ একটু থাকত যদি এটা বিশ্বকাপ হত। এশিয়া কাপ হলেও না। একটি খেলা খেলে মাত্র ৪টি দেশ এশিয়াতে আর এখন ২টি যোগ হয়েছে নতুন। নেপাল ও আফগানিস্তান মানে মোট ৬টি। পুরো এশিয়ার এতগুলি দেশ থেকে মাত্র ৬টি দেশের অংশগ্রহণ আমাকে তেমন নাড়া দেয় না। যেখানে ৪টি শক্তিশালী। আফগানদের আমি এখনও পূর্ণ শক্তির মনে করি না। হয়ত আগামীতে হবে তাতে সংখ্যা মাত্র ৫ এ যাবে। কিন্তু এদিক দিয়ে শ্রীলংকা আর পাকিস্তান আগের মত অসুরের মত খেলে না, সেটাতে ভারত ভাগ বসিয়েছে। সুতরাং শ্রীলংকা, পাকিস্তান, বাংলাদেশ একই ধাচেঁ খেলে। যাইহোক কার কতটুকু শক্তি সেটা যাচাই এর জন্য পোষ্ট নয়। শক্তির নহর একদিকে প্রবাহিত হয়না তাই আগের বাংলাদেশ আর এই বাংলাদেশে পার্থক্য আছে।
আগে সম্মানজনক হার আর এখন জয়ের জন্য খেলা। কালে ক্রমে জিতলেও আয়োজনের মূল পদক হাতছাড়া হয়ে যায়। এতে হতাশ হবার কিচ্ছু না। মুস্তাফিজ, তাসকিন দিয়ে দল জিতবে না, তারা সর্বদা ফর্মে থাকবে না, সব সময় দলে থাকবেওনা এদের মত আরও অনেককে প্রয়োজন।
সাকিব,তামিম,মাহমুদুল্লাহ,মুশফিক,মাশরাফি এরা না থাকলে হাল ধরবে কে? সুতরাং এদের মত আরও খেলোয়াড় দরকার। সেটাই বাংলাদেশ চেষ্টা করছে সাব্বির,সৌম্যকে,মিরাজ,লিটন ও অনেককে দিয়ে। তাই অনেকের ডেবুও হয়েছে। যদি কোন ঝলক পাওয়া যায় ইত্যাদি। কিন্তু হালে পানি আসছে না।
ভরসা রাখুন, যেদিন দেখবেন একাধিক তামিম,সাকিব আছে সেদিনই বাংলাদেশ জয়ের স্মারক বস্তুটি হাতের মুঠোয় ভরবে।
পোস্টটি করতাম না কিন্তু কিছু বল্গারদের ও মানুষের হতাশার রেশ পাচ্ছিলাম। তাদের সাথে বচসায় বা পোস্টে গিয়ে বক্তব্য জানানোর থেকে একেবারের জানিয়ে দিলাম কারণ এটি দীর্ঘ মন্তব্য হত। মনের ভাব প্রকাশও ঠিকমত হল। আমি সময়কে পড়াতে কাজে লাগাই, তবে প্রকাশ করা হয় না কিছু। সময় তুলনায় আগের থেকে কম তার উপর কিছু অভদ্র ব্লগারদের ব্যবহারে দূরে থাকি। পড়ি, এতটুকুই ভাল লাগে।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ৯:১৭