আমাদের টাকায় পদ্মা সেতু নাকি পদ্মাসেতুর জন্য আমাদের টাকা,সময়,শ্রম,এবং মিথ্যা আবেগ? নাকি আবেগ কে পূঁজি করে অন্য কারোর সুবিধা?
একটা কথা খুব করে উঠেছিলো,আমাদের এই পদ্মা সেতু নাকি আগরতলার জন্য,যেখানে কেবল আমরা সাত থেকে আট ঘন্টায় পৌঁছাতে পারব। এই কথাটার ভেতরে অনেক রহস্য লুকিয়ে থাকলেও এই রহস্য উন্মোচনের জন্য এইটুকুই যথেষ্ট।
আমরা এখনো অনেকে জানি এবং বিশ্বাস করি যে,এই পদ্মা সেতু আমাদের টাকায় বানানো। অথচ আপনি আবার এটাও জানেন যে এই পদ্মা সেতু নির্মানের জন্য এখনো আমরা ঋণ পরিশোধ করে যাচ্ছি। একটা সময় মোবাইল অপারেটর থেকে শুরু করে মানুষের বেতন এবং কি সকল ধরনের ব্যাপার থেকে এই পদ্মা সেতু নির্মানের জন্য টাকা চার্জ করা হয়েছিলো। অথচ আমরা এখন এই সেতুর জন্য ঋন পরিশোধ করছি। আচ্ছা এটার হয়ত অনেক ব্যখ্যা থাকতে পারে অনেকের কাছে,কিন্তু এভাবে মানুষের টাকা নিয়ে সেই নির্মান কিংবা অন্যদিকে নির্মানের জন্য অন্য কোন বিদেশি কোম্পানিকে ঋণ পরিশোধের বিষয়টা কিন্তু জটিল একটা হিসেবের মধ্যে পড়ে গেলেও বাঙালি জাতি সন্তুষ্ট আছে এই ভেবে যে,যাক আমি তো দৃশ্যমান একটা সেতু দেখতে পারছি,কত আর? মাসে ১০ টাকা দিয়েছে আমার থেকে? অথবা ৫০ টাকা? ১৮/২০ কোটি দেশের মানুষের থেকে যদি এক টাকা করে নেয়া হয় তবে তার হিসেব দাড়ায় ১৮/২০ কোটি টাকা।
কিন্তু ব্যাপারটা এই অব্দি থাকলে হয়ত বা ভালো হত,কতই বা খেয়ে,কয়েকশো কোটি? তাতে কি,আমরা তো সেতু পেয়েছি,ব্যাপার না। কিন্তু এটা এখানেই শেষ হয়নি,ইতিমধ্যে ইন্ডিয়ার সঙ্গে আমাদের যোগসূত্র আরো বেড়েছে,আমাদের রাষ্ট্রের বুকের উপর দিয়ে একটা ট্রেন সংযোগ করা হবে,তাও আবার কোন প্রকার নিজেদের স্বার্থ ছাড়াই আমরা তা দিয়ে দিচ্ছি। যদি স্বার্থ নিয়েও নিই তবে কি এটা আদৌ ঠিক? একদিকে পদ্মাসেতু হয়ে আগরতলা,অন্যদিকে ট্রেন সংযোগ। তবে কি দেশ এভাবেই বিক্রি হয়? নাহ,দেশ তো দেশের জায়গায় রয়ে যায়,দেশ কখনো বিক্রি হয়না। আপনার জমি যেমন কখনো বিক্রি হয়না,কেবল মালিকানা পরিবর্তন হয় ঠিক রাষ্ট্রের ব্যাপারটাও একই রকম।
এরকম একটা পূর্বপরিকল্পিত প্ল্যানই কি তবে পদ্মাসেতুর জন্য এত কিছু? শেষবার আফগানিস্তান থেকে ইন্ডিয়া বিতাড়িত হয়েছিলো,তাদের সকল ধরণের ইনভেস্ট হারিয়ে সেখান থেকে ত্যাগ করতে হয়েছে তাদেরকে,কিন্তু আমাদের দেশের ব্যাপারটা ভিন্ন,আপনার দেশে এরকম কোন সংগঠন নেই যে কাউকে বিতাড়িত করতে পারবে। আপনার দেশ মেধা শূন্য,আপনার দেশের মানুষদের প্রতিভা শুধু সোশ্যাল মিডিয়াতে নাচানাচি,খাও দাও ঘুমাও আর টয়লেট করো। আর যে সমস্ত মেধাবিরা আছে তাদের ৯৭/৯৮% ই ধুর ছাই এই দেশে থাকবোনা বলে দেশ ত্যাগ করেছে।
ওহ আপনার দেশের আবরার ফাহাদ তো এই দেশপ্রেম নিয়ে কথা বলেই হত্যার স্বীকার হয়েছে তার নিজ দেশে,আলোচিত ফেলানি হত্যা,গরু চোর কিংবা কখনো কখনো কোন কারণ না দেখিয়েও বর্ডারে নির্বিচারে মানুষ হত্যা চলছেই,এর কি কোন সুরাহ,প্রতিবাদ কিংবা প্রকার বিচার হয়েছে? বর্ডারে এখন এই ধরণের সমস্যা নিয়ে কয়টা ফ্ল্যাগ মিটিং হয়? ফলাফল কি?
একটা সময় এই দেশর অনেক মানুষ দেশ বিক্রির অভিযোগ তুললেও এইটাকে হাস্যকর হিসেবে প্রথম সারির মিডিয়া দ্বারা সস্তা ট্রল হিসেবে প্রচলিত করে ফেলেছে,এটা এখন শ্রেফ একটা হাস্যকর মিথ। কিন্তু একবার ও কি ভেবে দেখেছেন?
আচ্ছা ইউরোপে তো দেশ বিক্রি হয়না তাইনা? ইউরোপে তো কাটাতার নেই,নেই কাটাতারে ঝুলানো ফেলানির লাশ,নেই গরুচোর। এখানে মানুষের জীবন ব্যবস্থা তার শ্বাসের চেয়েও কঠিন,বাজার লাগবে,এই শব্দটা শুনলেই এখন মানুষের শ্বাস ভারী হয়ে আসে। বছরের পর বছর মেইন স্ট্রিম মিডিয়ার বুলি আউড়ানো সেই দূর্নীতি র্যাংকিং এর গালগল্প শুনলেও বাস্তবে দুর্নীতির আতুড়ঘরে পরিণত হয়ে আছে সকল ধরণের টেবিল থেকে শুরু করে সেই টেবিল মুছে দেয়া কিংবা গেটের দারোয়ানের পকেট। কিন্তু দেশ বিক্রি হয়নি,কারণ ইউরোপে দেশ বিক্রি হয়না।
আমাদের এই ভূখণ্ডে একটা জেনারেশন বেড়ে উঠেছে এরা এইসব দেখতে পায়না,এদেরকে যে গল্প শোনানো হয়,যে ভিডিও ক্লিপ,কিংবা যা দেখানো হয় সে সবের উপরই এরা খুশিতে গদগদ হয়ে পড়ে। এরাই আবার নিজেদেরকে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান দাবী করে দাম্ভিকতা করে বেড়ায়,সুযোগ খুজে বেড়ায় এই পরিচয় বহন করে রাষ্ট্রের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে,রাস্তায়,ইভেন ধর্মীয় উপসানালয়েও। অথচ এই সমস্ত বিষয়ে এদের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই,আশ্চর্য।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১:৪৪