১. সাভার ট্রাজেডির মেগা ছবি ব্লগ-১
লাশের মিছিলঃ
সেনাবাহিনীর উদ্ধার তৎপরতায় লাশের মিছিল
ধসে পড়ার কিছুক্ষনের মাঝে শুরু হয় লাশের মিছিল
অধরচন্দ্র স্কুল প্রাঙ্গনে লাশের সাড়ি
কখন আর তারা ফিরবে না
সময় যত গড়াচ্ছে লাশের মিছিল বাড়ছে পাল্লা দিয়ে
আকাশ বাতাস ভাড়ী করে শোকের মাতম তুলছে এ লাশগুলো
তাদের সকালটা কতই না সুন্দর হয়ে শুরু হয়েছিলো কিন্তু
এ মিছিলে লোক বাড়ছেই
স্বজনের খোজে স্বজনেরা
এ যেন এ মৃতপুরী
সেনাবাহিনী সদস্যরা লাশ বয়ে নিয়ে যাচ্ছেন
চিরতরে হারিয়ে গিয়েছে এসকল স্বজনেরা
কোন এক মমতাময়ী মা খুজছেন তার আদরের ধনকে
প্রিয়জন খুজছেন প্রিয়জন
এ পা গুলো আর পৃথিবীর মাটি স্পর্শ করবে না
এতো লাশ কোথায় রাখবো?
বেড়েই চলছে লাশের বহর
কোথায় আছে আমার স্বজন?
একে একে লাশ নিয়ে আসছেন উদ্ধার কর্মীরা
আরো একটি লাশ চিরতরে শায়িত
এভাবে মৃত্যু কেউ চায় না
শুধু লাশ আর লাশ
কোথায় খুজবো প্রিয়জন?
অধরচন্দ্র স্কুলে আকাশ বাতাস লাশের গন্ধ
এতো লাশের ভার কিভাবে বহন করবে দেশের মানুষ। অকাতরে আজ জীবন দিতে হচ্ছে সাধারণ মানুষ। কিছুদিন আগে তাজনীন গার্মেন্টসে যে লাশের মিছিল তৈরী হয়েছিলো সে মিছিলে আরো যোগ দিয়েছে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৫০ জন । হয়তো আরো অনেক যোগ দিবে এ মিছিলে.......... কবে শেষ হবে এ মিছিল??????????????
প্রশিক্ষিত বাহিনীর উদ্ধার অভিযান, ১ম ধাপঃ
সুরঙ্গ করে উদ্ধার কাজে ফায়ার সার্ভিস
যেখানে মাথা তুলে দাড়ানোর জায়গায় নেই সেখানে চলছে উদ্ধার
ফ্লোরে সুরঙ্গ করার কাজ চলছে
ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের প্রাণপন চেষ্টা
রয়েছে জীবনের ঝুকি তবুও চলছে উদ্ধার
সাধারণ মানুষকে সাথে নিয়ে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার কর্মীরা
অবিরাম উদ্ধারের সাথে কিছুটা বিশ্রাম
দিন রাত অবিরাম পরিশ্রম
ঝুকি নিয়ে চলে যাচ্ছেন ধসে পড়া ভবনের ভিতরে
উদ্ধার করে নিয়ে আসা হচ্ছে আরেকজনকে
এভাবে ভবনের বিভিন্ন স্থানে তৈর করা হয় সুরঙ্গ
একজন ফারার কর্মী
পুনরায় ধসে পড়া ঠেকানোর জন্য ইট দিয়ে অস্থায়ী পিলার তৈরী করা হয়েছে
আছে প্রচন্ড ঝুকি কিন্তু উদ্ধার করতে হবে প্রতিটি মানুষকে

সাধারণ জনগনর কাধে কাধ মিলিয়ে উদ্ধার করছে সেনা সদস্য
প্রাণের স্পন্দন খুজে পাওয়ার চেষ্টা
অক্সিজেন সাপ্লাই দেয়া চেষ্টা চলছে
প্রশিক্ষিত সেনা সদস্যরা চেষ্টা করে যাচ্ছেন প্রানন্তকর
উদ্ধার করে নিয়ে যাচ্ছেন আমাদের গর্বের সেনা সদস্যরা
উদ্ধার তৎপরতার ব্রিফিং করছেন ৯ম পদাতিকের সিওসি হাসান সরওয়ারর্দী
কোন বাহিনীর তৎপরতা থেমে নেই
৯ তলা ভবনের একের পর এক ফ্লোর কেটে ভিতরে যাচ্ছেন উদ্ধার কর্মীরা
ধ্বংসস্তুপ থেকে একজন নারী শ্রমিককে তুলে আনছেন
স্বেচ্ছাসেবীদের সহায়তায় সেনারা
উদ্ধার তৎপরতায় মাইক হাতে এক সেনা সদস্য
দীর্ঘ ৫ দিন বেচে থাকা শাহীনাকে উদ্ধার করতে না পারায় কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন সেনা সদস্য আশরাফ
আহতদের উদ্ধার করে সেনা এ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে
ধ্বংসস্তুপের নিরাপত্তায় আরেক সদস্য
ভবনের মাঝে অক্সিজেন দেয়ার চেষ্টা চলছে
আমরাও মানুষ , আমাদেরও হৃদয় রয়েছে, আপনজন রয়েছে
যে কোন সময় ঘটে যেতে পারে বড় দুর্ঘটনা তবু থেমে নেই উদ্ধার
উদ্ধার কাজে এগিয়ে এসেছে রেড ক্রিসেন্ট
কালবৈশাখী আর বৃষ্টির মাঝে তাবু টানিয়ে অবিরাম চেষ্টা
প্রশিক্ষিত বাহিনীর পাশাপাশি দিন রাত তৎপর রেড ক্রিসেন্ট
কোন ঘন্টা হিসেবে চলনি উদ্ধার
সংগঠিত শক্তিতে
ভেঙ্গে পড়া ভবনের খাজে খাজে খোজা হচ্ছে আহত নিহতদের
জনতাকে সাথে নিয়ে নিরলস ভাবে প্রানন্তকর প্রচেষ্টা চালায় সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস, রেড ক্রিসেন্টসহ অন্যান্য প্রশিক্ষিত বাহিনী। তাদের উদ্ধার তৎপরতায় কোন দিন ঘন্টা হিসেব করে হয়নি । উদ্ধার শেষ হওয়া পর্যন্ত চলবে। গর্ব করি সে সকল ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের জন্য যারা জীবনের ঝুকি নিয়েও চেষ্টা করেছেন উদ্ধারে। গর্ব করি সে সকল সেনা সদস্যদের জন্য যার উদ্ধার করেছন আবার উদ্ধার করতে না পারায় কখনো প্রকাশ্যে কখনো নিরবে চোখে পানি ফেলেছেন।
স্বজনের খোঁজে ভারি আকাশ বাতাসঃ
স্বজনের নিখোজের সংবাদটি দিচ্ছেন হয়তো
আটকে পড়া স্বজনের খোজ নিচ্ছেন নাকি স্বজন হারানোর সংবাদা পৌছে দিচ্ছেন
খুজে পাওয়া যাবে কি তাকে?
উৎকন্ঠিত, ভারাক্রান্ত সকলেই
আমার আগে তো তুই যাওয়ার কথা না
ভালো সংবাদটি পৌছে দিতে পেরেছিলেন?
আর্তনাদ কি থেমেছিলো?
তারই কো সখি হয়তো ভিতরে আটকে আছে এখনো
গড়িয়ে পড়া অশ্রুর মূল্য কি কেউ দিতে পারবে?
হে প্রভু....... আমার মানিককে ফিরিয়ে দাও
স্বান্তনা দেয়ার ভাষা নেই
শোকের সাগরে ভাসছে স্বজন
যার যায় সেই জানে কি ব্যথা
এ বুক খালি হয়ে গেলো
বুক ফাঁটা আর্তনাদ
আমি কি হারালাম
এর কোন ভাষা নেই
হে মনিব........... তোমার কাছে প্রর্থানা ছাড়া কিছুই করার নেই
বাড়ীর গ্রিল ধরে আদরের সন্তানের অপেক্ষার প্রথর থাকবে চিরদিন
মা তোমার মুখটি কি আর দেখবো না?
হারানোর বেদনা
হয়তো মা , নয়তো বোন, অথবা বাবা বা ভাই/......... কার খোঁজে
বুকটা খালি হয়ে গেলো
অপেক্ষার প্রহর কি শেষ হয়েছিলো?
এ আর্তনাদ কে থামাবে?
আমার আগে তো তোর যাওয়ার কথা নয়
বুক ফেটে যায় , কিন্তু কে তাতে জোড়া লাগাবে
বিপদ মানুষকে ফিরিয়ে নেয় প্রভুর কাছে
তার মোনাজাত কি কবুল হয়েছিলো?
কে কাকে স্বান্তনা দিবে,
একটা সময় চোখের জলও শুকিয়ে যায়
এ বৃদ্ধ বয়সে স্বজন হারানোর বেদনা কি সহ্য করা যায়?
কয়েক হাজার মানুষ আটকে পড়েছিলো রানা প্লাজাতে। প্রতিটি মানুষের রয়েছে স্বজন। নাড়ীর টানে ছুটে এসেছে তারই স্বজনকে। খোজার চেষ্টা করেছে দিনে পর পর। কেউ পেয়েছে , কেউবা চিরতরে হারিয়েছে। এ সব স্বজনেরা নিজেরা কেঁদেছে, কাঁদিয়েছে সকলকে, ভারি করে দিয়েছে আকাশ বাতাসকে...................
ব্যথাতুর মন তবুও ব্যথিত হৃদয়ে । আগামী পর্বের অপেক্ষা থাকার আহবান।