দেশে শিক্ষা নিয়ে আর কত বাণিজ্য হলে বাঙালি জাতির টনক নড়বে? একটা বিষয় খুবই সুস্পষ্ট, সেটি হল, দেশের সাধারণ মানুষের ছেলেমেয়েরা ভালোভাবে শিক্ষাগ্রহন করুক, এটা স্বাধীনতা পরবর্তী কোনো শাসক ভালোভাবে চায়নি। শাসকদের ছেলেমেয়েরা বিদেশে ভালো ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষা নিয়ে দেশে ফিরে শাসন করার মত বিদ্যাবুদ্ধি নিয়ে হাজির হয়! স্বাধীনতার পর থেকে আমাদের মন্ত্রী বাহাদুরদের সন্তানরা, এমপি বাহাদুরদের সন্তানরা, তাদের পোষ্য লুটপাটকারীদের সুযোগ্য সন্তানরা কেবল এই উচ্চ শিক্ষা পাবার যোগ্যতা অর্জন করেছে। এছাড়া ব্যক্তিগতভাবে কেউ কেউ দেশের বাইরে সন্তানদের উচ্চ শিক্ষার জন্য পাঠান। এরাও কোনো না কোনো ভাবে শাসকদের কোনো না কোনো সুনজরের কল্যানে সেই সোনার হরিণ লাভ করেন। আর যারা দেশের সাধারণ নাগরিক, তাদের সন্তানদের জন্য দেশের মধ্যে নিজেদের যে শিক্ষালয় আছে, সেখানেই শিক্ষা গ্রহন করার নিয়ম। নিয়মটা কারা করল? শাসক মহাশয়গণ।
তো দেশের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চিত্রটা কেমন? এক কথায় ভয়াবহ। এখানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতির নামে শাসকরা তাদের শিক্ষা থেকে দূরে রাখার যে কৌশলটি প্রয়োগ করে আসছে, তা গত ৪২ বছরে এখন পর্যন্ত সফল। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষা হোক বা না হোক, শাসক দলের লেজুড়বৃত্তি করতে পারলেই কর্নজীবন তাদের জন্য ফকফকা। বাকিরা কোথায় যাবে? সেই প্রশ্নের কোনো জবাব আমাদের শাসকদের কাছে নেই। সেই সুযোগে শিক্ষকরা কনসালটেন্সি নিয়ে ব্যস্ত, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে বাড়তি ইনকামের নেশায় মত্ত, আর বছর শেষে দলীয় ছাত্রদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বারোটা অনেক আগেই বেজেছে। বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয় মানে এখন সাদা আর নীল দল। ওখানে পড়াশুনা শিক্ষকরাও করেন না, ছাত্রদের তো পড়ার সময় নেই। বরং শাসক দলের অনুসারী ছাত্র হলে তাদের অনেক দলীয় কাজকাম থাকে, টেন্ডার জমার কাজ থাকে, তোরণ নির্মাণের কাজ থাকে, মিটিং মিছিলের কাজ থাকে। আর দেশের মেধাবী ছাত্রদের এভাবে রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে দিয়ে শাসকরা আড়ালে ভারী হাসাহাসি করেন। তারা বলেন, ওষুধে নাকি কাম হচ্ছে!!
দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর যখন এমন চরম দশা, তখনো কিন্তু আমাদের একটি নপুংশক বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন আছে। যেটি বছরে বছরে কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পয়দা করেন। কিন্তু সেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষার নামে আসলে কী হচ্ছে, তা নিয়ে এই কমিশন মোটেও চিন্তিত নন। কারণ, এই কমিশন চলে শাসকদের ইসারা-আসকারায়।
এখন দেশে চলছে শিক্ষার নতুন ভেলকি গোল্ডেন পাস। এবার এইচএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন এ পেয়েছে সত্তর হাজারের বেশি ছাত্রছাত্রী। কি ধরনের প্রশ্নপত্রে, কি কি লিখে, কে কিভাবে গোল্ডেন পেল, তা না হয় নাইবা কলাম। কিন্তু এই ৭০ হাজার ছাত্রছাত্রী এখন উচ্চ শিক্ষার জন্য কোথায় ভর্তি হবে? আমাদের শাসকদের কিন্তু তা নিয়ে কোনোই মাথা ব্যথা নেই। তাহলে, মাথা ব্যথা যাদের, মানে এসব ছাত্রছাত্রীদের মা-বাবাদের, তাদের এখন চোখে শর্ষে ফুল দেখার মত অবস্থা। কারণ কি? ৭০ হাজার গোল্ডেন এ পাওয়া ছেলেমেয়েদের বাবামাদের এখন এতো দুশ্চিন্তা কেন?
কারণ, দেশে উচ্চ শিক্ষার জন্য যে ভাঙাচোরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আছে, সেখানে আর কয়জন টিকবে? মেডিকেল, বুয়েট, কৃষি, টেকনিক্যাল মিলিয়ে ৭০ হাজার গোল্ডেন এ'র সামনে এখন এক মহাযুদ্ধের ডাক। সেই যুদ্ধে যারা বিজয়ী হবে, তারা তো শাসকদের পাতানো সেই পুরানো মডেলের মধ্যে অনায়াসে ঢুকে যাবে। আর বাকিরা? বাকিরা কিছু প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবে। কেউ কেউ বিদেশে যাবার চেষ্টা করবে। তারপরের বাকিরা? তারা স্থানীয় কলেজগুলোতে পড়বে, ব্যাস ল্যাঠা চুকে গেল! ল্যাঠা কি আসলে চুকলো? কয়েক বছর পর এরা যখন আবার উচ্চ শিক্ষা শেষ করে বের হবে, বলবে আমাদের শিক্ষাজীবন শেষ, এবার কাজ দাও, তখন? তখনকার শাসকরা ওটা একটা রফা করবে বলে উড়িয়ে দেবার আদৌ কি কোনো সুযোগ আছে??
কিন্তু এই মুহূর্তে দেশের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের যেে চিত্রটি আছে, সেটা কিন্তু ভয়ংকর। আজকের দৈনিক যুগান্তর পত্রিকার সম্পাদকীয় পড়লেই বিষয়টা একটু আন্দাজ করা যাবে। যুগান্তর লিখেছে,
''অনুসন্ধানে জানা গেছে, দেশের অন্তত ২০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হচ্ছে অবৈধভাবে। সারা দেশে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শতাধিক ক্যাম্পাসও চলছে প্রতাপের সঙ্গে। সবচেয়ে বড় কথা, এসব ক্যাম্পাসে যেসব কোর্স ও প্রোগ্রাম পাঠ্য ও অনুশীলনযোগ্য হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে, সেগুলোর সরকারি কোনো অনুমোদন নেই। বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিচ্ছে যারা, তাদেরও সরকারি অনুমোদন নেই। অর্থাৎ এসব প্রতিষ্ঠানে তথাকথিত শিক্ষা শেষে যে সনদপত্র পাবে শিক্ষার্থীরা, বাস্তব জীবনে তার কোনো কার্যকারিতা থাকবে না। অবস্থা এমন পর্যায়ে রয়েছে যে, এই প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে সাবধান থাকার জন্য সরকারের পক্ষ থেকেও সাবধানবাণী উচ্চারণ করা হয়েছে। প্রশ্ন উঠতে পারে, সাবধানবাণী কেন, সরকার ইচ্ছা করলে তো এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাই নিতে পারে। শুভংকরের ফাঁকিটি এখানেই। ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয়কে কালো তালিকাভুক্ত করার পরও সেগুলোর কার্যক্রম বন্ধ হচ্ছে না, কারণ আদালতের কাছ থেকে স্থিতাদেশ নিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো। শিক্ষামন্ত্রী অবশ্য বলেছেন, মামলাগুলো একক আদালতে এনে শিগগিরই সেগুলোর নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করা হবে।
সরকারি আইন-কানুন না মেনে যেসব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে, অচিরেই সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সঙ্গে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতে ছাত্রছাত্রীরা ভর্তি না হয়, তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রয়োজনে গণমাধ্যমে পৌনঃপুনিক বিজ্ঞাপনের ব্যবস্থা করতে হবে। দেখা যায়, বেআইনি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চটকদার বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে। বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পড়ে অভিভাবকরা ঢালেন লাখ লাখ টাকা, বিনিময়ে কিছুই পান না। কথা হচ্ছে, অনুপযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কর্তৃপক্ষ যদি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রী ভর্তি করানোর চেষ্টা নিতে পারে, তাহলে সরকার তথা শিক্ষা মন্ত্রণালয় কেন বিজ্ঞাপন দিয়ে সেগুলোয় ভর্তি হওয়া থেকে ছাত্রছাত্রীদের নিবৃত্ত করতে পারবে না? ছাত্রছাত্রী ও তাদের অভিভাবকদের এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। সবচেয়ে জরুরি যা, তা হল ভর্তির আগে বিশ্ববিদ্যালয়টি সম্পর্কে যথেষ্ট খোঁজখবর নিতে হবে। ক্যাম্পাস, শিক্ষকদের যোগ্যতা, পাঠ্যসূচি, সরকারি অনুমোদন ইত্যাদি বিষয়ে খোঁজখবর না নিয়ে সেখানে ভর্তি হওয়া যে চরম বোকামি হবে, তা উপলব্ধি করতে হবে ছাত্রছাত্রী ও তাদের অভিভাবকদের।
দেশের শিক্ষা খাতে এখন চলছে চরম নৈরাজ্য। শিক্ষাকে পণ্য করে ফেলেছেন এক শ্রেণীর স্বার্থান্ধ মানুষ। এ অবস্থা একদিনে তৈরি হয়নি। সরকার তথা শিক্ষা মন্ত্রণালয় যদি প্রথম থেকে শিক্ষাক্ষেত্রে শৃংখলা বজায় রাখার চেষ্টা করত, তাহলে পরিস্থিতি বর্তমান পর্যায়ে নামত না। বাছবিচার না করে অনুমোদন দেয়া ও নিয়মিত তদারকির অভাবে পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। ইউজিসিও কাক্সিক্ষত ভূমিকা পালন করতে পারেনি বলেই আমরা মনে করি। যা হোক, সময় এখনও ফুরিয়ে যায়নি। কথায় বলে, ইট ইজ নেভার টু লেট টু স্টার্ট এনিথিং- কোনো কিছু শুরু করতে কখনোই খুব বেশি দেরি হয়ে যায় না। শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জোর তৎপরতার সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ঝুলে থাকা মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য আইনগত যা যা করা দরকার, সেগুলোও করতে হবে দ্রুততার সঙ্গে। দেশে উচ্চশিক্ষা লাভে ভর্তিচ্ছু লাখ লাখ ছাত্রছাত্রীর সঙ্গে প্রতারণা কোনোভাবেই কাম্য নয়। - See more শি
অনুসন্ধানে জানা গেছে, দেশের অন্তত ২০টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হচ্ছে অবৈধভাবে। সারা দেশে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শতাধিক ক্যাম্পাসও চলছে প্রতাপের সঙ্গে। সবচেয়ে বড় কথা, এসব ক্যাম্পাসে যেসব কোর্স ও প্রোগ্রাম পাঠ্য ও অনুশীলনযোগ্য হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে, সেগুলোর সরকারি কোনো অনুমোদন নেই। বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিচ্ছে যারা, তাদেরও সরকারি অনুমোদন নেই। অর্থাৎ এসব প্রতিষ্ঠানে তথাকথিত শিক্ষা শেষে যে সনদপত্র পাবে শিক্ষার্থীরা, বাস্তব জীবনে তার কোনো কার্যকারিতা থাকবে না। অবস্থা এমন পর্যায়ে রয়েছে যে, এই প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে সাবধান থাকার জন্য সরকারের পক্ষ থেকেও সাবধানবাণী উচ্চারণ করা হয়েছে। প্রশ্ন উঠতে পারে, সাবধানবাণী কেন, সরকার ইচ্ছা করলে তো এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাই নিতে পারে। শুভংকরের ফাঁকিটি এখানেই। ১৫টি বিশ্ববিদ্যালয়কে কালো তালিকাভুক্ত করার পরও সেগুলোর কার্যক্রম বন্ধ হচ্ছে না, কারণ আদালতের কাছ থেকে স্থিতাদেশ নিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো। শিক্ষামন্ত্রী অবশ্য বলেছেন, মামলাগুলো একক আদালতে এনে শিগগিরই সেগুলোর নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করা হবে।
সরকারি আইন-কানুন না মেনে যেসব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে, অচিরেই সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সঙ্গে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতে ছাত্রছাত্রীরা ভর্তি না হয়, তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রয়োজনে গণমাধ্যমে পৌনঃপুনিক বিজ্ঞাপনের ব্যবস্থা করতে হবে। দেখা যায়, বেআইনি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চটকদার বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে। বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পড়ে অভিভাবকরা ঢালেন লাখ লাখ টাকা, বিনিময়ে কিছুই পান না। কথা হচ্ছে, অনুপযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কর্তৃপক্ষ যদি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রী ভর্তি করানোর চেষ্টা নিতে পারে, তাহলে সরকার তথা শিক্ষা মন্ত্রণালয় কেন বিজ্ঞাপন দিয়ে সেগুলোয় ভর্তি হওয়া থেকে ছাত্রছাত্রীদের নিবৃত্ত করতে পারবে না? ছাত্রছাত্রী ও তাদের অভিভাবকদের এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। সবচেয়ে জরুরি যা, তা হল ভর্তির আগে বিশ্ববিদ্যালয়টি সম্পর্কে যথেষ্ট খোঁজখবর নিতে হবে। ক্যাম্পাস, শিক্ষকদের যোগ্যতা, পাঠ্যসূচি, সরকারি অনুমোদন ইত্যাদি বিষয়ে খোঁজখবর না নিয়ে সেখানে ভর্তি হওয়া যে চরম বোকামি হবে, তা উপলব্ধি করতে হবে ছাত্রছাত্রী ও তাদের অভিভাবকদের।
দেশের শিক্ষা খাতে এখন চলছে চরম নৈরাজ্য। শিক্ষাকে পণ্য করে ফেলেছেন এক শ্রেণীর স্বার্থান্ধ মানুষ। এ অবস্থা একদিনে তৈরি হয়নি। সরকার তথা শিক্ষা মন্ত্রণালয় যদি প্রথম থেকে শিক্ষাক্ষেত্রে শৃংখলা বজায় রাখার চেষ্টা করত, তাহলে পরিস্থিতি বর্তমান পর্যায়ে নামত না। বাছবিচার না করে অনুমোদন দেয়া ও নিয়মিত তদারকির অভাবে পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। ইউজিসিও কাক্সিক্ষত ভূমিকা পালন করতে পারেনি বলেই আমরা মনে করি। যা হোক, সময় এখনও ফুরিয়ে যায়নি। কথায় বলে, ইট ইজ নেভার টু লেট টু স্টার্ট এনিথিং- কোনো কিছু শুরু করতে কখনোই খুব বেশি দেরি হয়ে যায় না। শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জোর তৎপরতার সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ঝুলে থাকা মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য আইনগত যা যা করা দরকার, সেগুলোও করতে হবে দ্রুততার সঙ্গে। দেশে উচ্চশিক্ষা লাভে ভর্তিচ্ছু লাখ লাখ ছাত্রছাত্রীর সঙ্গে প্রতারণা কোনোভাবেই কাম্য নয়।''
যুগান্তরের এই খবরটি কিন্তু সত্যিই আতকে ওঠার মত। আমরা বিগত ৪২ বছর ধরে স্বাধীনতা, চেতনা, শিক্ষা, ইত্যাদি বিক্রি করে অনেক ব্যবসা করেছি। এই ব্যবসাটি এখনো দেশে সগরিমায় বেশ দাপটের সঙ্গেই চলছে। এটা দেখার যেনো কেউ নেই। মিডিয়া যখন যা নিয়ে কথা বলে, এই জাতি কয়েক দিন সেই বিষয়ে একটু চোখ কান খোলা রাখে তারপর আবার সব সহ্য করে নেয়। আমাদের সহ্য করার সকল ক্ষমতা আমাদের মহান শাসকরা দান করেছেন। আর এভাবে আমাদের শিক্ষার নামে যে অপশিক্ষার ব্যবস্থা রাষ্ট্রীয়ভাবে করা হয়েছে, এক কথায় একটা জাতি ধ্বংস করার জন্য ইহাই যথেষ্ট।
দেশ এভাবে ৪২ বছরে ধ্বংসের যেখানে এসে দাঁড়িয়েছে, এটা আগামীতে আরো ভয়াবহ হবে, এটা এখনই বলা যায়। উচ্চ শিক্ষার নামে এখন যে ভর্তি বাণিজ্য হবে, এটাতেও শাসকদের কিছু পোষ্যদের ভাগ্য ফেরানোর ইঙ্গিত থাকে। আর এভাবেই দেশ ধ্বংস করছে আমাদের মতলববাজ শাসকগোষ্ঠী। খোঁজ নিলেই জানা যায় যে, অমুক কলেজ তমুকের বা তমুকের পোষ্যদের। এরা সবাই শাসকদের পোষ্য বা আত্মীয়। এরাই আবার উচ্চ শিক্ষার নামে ভর্তি বাণিজ্যটা করবে। এই নিয়ে মিডিয়া কয়েক দিন হাহুতাস করবে। তারপর আবার পুরানো নিয়মে দেশ উন্নয়নের জোয়ারে ডুবে যাবে। হায়রে দেশ, তোর জন্য ভারী মায়া হয়। তোর ললাটে যে কি আছে, স্বয়ং ভগবানও হয়তো জানেন না। মিস্টার হেনরি কিসিঞ্জার সাহেব সেই ১৯৭২ সালে মন্তব্য করেছিলেন, বাংলাদেশ একটি তলাবিহীন ঝুড়ি। সেই কথাটি প্রমাণ করার জন্য আমাদের শাসকগোষ্ঠী গত ৪২ বছর ধরে অনেক অগ্রগতি করেছেন। হয়তো শিঘ্রই শাসকদের সেই স্বপ্ন পূরণ হবে। কারণ, আমাদের শাসকদের কিন্তু এখন বিদেশের নানান জায়গায় সেকেন্ড হোম আছে। মাগার ফার্স্ট হোমের কপালে যা থাকে থাকুক, সেকেন্ড হোম নিরাপদ হলেই পগার পার!
দেশে শিক্ষা একটি অতি উৎকৃষ্ট বাণিজ্য, যা ৪২ বছর ধরেই শাসকদের তত্ত্বাবধানে চলে আসছে। ফেলো কড়ি মাখো তেল...দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার লা জবাব...