একদম প্রতিদিনই ফেইসবুক, স্কাইপ ও মোবাইল ফোনে অনেকের সঙ্গে কথা হয় এবং অনেকেই অনেক কিছু জানতে চান। আগেই বলেছি ইংরেজি ও ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কেই মানুষ বেশি জানতে চায় তবে যেহেতু আমি ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশান অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) এর আমি সভাপতি তাই ই-কমার্স নিয়েও অনেক প্রশ্ন আসে। নিজে অনেক কষ্ট করে ক্যারিয়ার গড়েছি। যখন অতীতের দিকে তাকাই তখন মনে হয় যে কেউ যদি আমাকে একটু গাইড করতো বা উপদেশ দিত তাহলে আরও অনেক উন্নতি করতে পারতাম জীবনে। তাই যতটুকু পারি এই মহা ব্যস্ত সময়ের মধ্যেও চেষ্টা করি ১-২ মিনিটে অনেকের প্রশ্নের উত্তর দিতে এবং পরামর্শ দিতে।
আমার এই পোস্টে দুজন মানুষের উদাহরণ দিতে চাই। প্রথম জন হলেন নাজমুল ভাইঃ
তার অনুমতি নিয়েই আমাকে যে মেসেজ তিনি দিয়েছেন তার অংশ বিশেষ তুলে ধরলামঃ
“প্রথমেই আপনাদের ধন্যবাদ, e-cab নামক একটি প্লাটফর্ম তৈরি করার জন্য। যে প্লাটফর্মকে ভিত্তি করেই গড়ে উঠবে আমাদের E-Commerce Industry.
তো আমি E-Commerce Business শুরু করার ক্ষেত্রে একেবারে প্রাথমিক কিছু বিসয়ে জানতে চাচ্ছি, যেমন-
(১) E-Commerce Business শুরু করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের কি কোন নির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন আছে? থাকলে সেগুলো কি কি?
(২) তারপর Trade License, Vat Registration ও TIN এগুলো কি করতে হবে? যদি করতে হয় তবে সেটা কি Website তৈরি করার পরে করতে হবে নাকি পূর্বেই করতে হবে?
(৩) দয়াকরে, যদি Trade License, Vat Registration ও TIN বিষয়ে একটু বিস্তারিত বলেন, যেমনঃ কখন, কোথায়, কিভাবে কি করতে হবে তাহলে হয়তো আমার মতো যারা যারা নতুন করতে চাচ্ছে তারা অনেক দ্রুত এগোতে পারবে।
এ বিষয়গুলোতে পরিষ্কার ধারণা না থাকায় অনেকেই হয়তো প্রবল ইচ্ছে ও আগ্রহ থাকা সত্ত্বেও শুরুই করতে পাড়ছে না, এর বড় ভুক্তভুগী আমি নিজেই।
-বিনীত
মোঃ নাজমুল হুদা
বিবিএ,
সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটি”
এ মেসেজ পেয়ে খুবই ভাল লেগেছে। ই-ক্যাব তো এজন্যই আমরা সবাই মিলে দাড় করিয়েছি। নতুন যারা তারা জেনে শুনে বুঝে পড়ে তারপর আসুক। নাজমুল ভাইকে আমরা ই-ক্যাব অফিসে দাওয়াত দিয়েছি। এবং আশা করি হয়তো আরও কেউ কেউ আসবেন- বিশেষ করে যারা জানতে চান। নাজমুল ভাইয়ের মত অনেকেই ই-কমার্স নিয়ে জানতে চান তবে নাজমুল ভাইয়ের উদাহরণ এখানে দিলাম কারন তাকে আমার খুব সিরিয়াস মনে হয়েছে। আশা করি তিনি সফল হবেন। আমরা নাজমুল ভাইদের মত হবু উদ্যোক্তাদের জন্য দিন ব্যপি ওয়ার্কশপ করার প্ল্যান করছি।
যারা বিভিন্ন বিষয়ে অনার্স লেভেলে ফোর্থ ইয়ারে পড়ছেন মানে লেখাপড়া শেষের দিকে তাদের অনেকেরই চিন্তা থাকে যে এরপর কিছু একটা করে জীবিকা নির্বাহ করতে হবে। এক্ষেত্রে অনেকেই ই-কমার্স এর ব্যপারে আগ্রহী হবেন। কিন্তু আমরা কোন হুজুগ বা ক্রেজ সৃষ্টি করতে চাই না। বরং যারাই এদিকে আসুন না কেন তারা ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা করে আসুন। ব্যবসা মানেই ঝুকি- লাভ ও লোকসান দুইই হতে পারে। লোকসানের ঝুকি কমানোর সবচেয়ে ভাল উপায় হচ্ছে যে বিষয়ে আপনি ব্যবসা করতে চান তার সম্পর্কে জানুন এবং সময় দিন। তাহলে লস না হয়ে লাভের সম্ভাবনাই বাড়বে। আমরা এজন্য সেমিনার ওয়ার্কশপ, ব্লগে লেখা, ইউটিউব ভিডিও সবই করবো আপনাদের জন্য। কিন্তু দয়া করে শেয়ার বাজার বা এমএলএম এর মত না জেনে হুজুগে পা বাড়াবেন না।
দ্বিতীয় যে ব্যক্তির কথা উল্লেখ করতে চাই তিনি হলেন ময়মনসিংহের আরিফ হুসাইন। তিনি আইটি নিয়ে আগ্রহী এবং ময়মনসিংহের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে কম্পিউটার ও ইন্টারনেট নিয়ে প্রচারণা চালান। তার সঙ্গে ফেইসবুকেই পরিচয়। তার খুব ইচ্ছা যে ময়মনসিংহে একটি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান দাড় করাবেন। তিনি সাহস পাচ্ছিলেন না। প্রায়ই আমার সঙ্গে কথা হয়। তাকে অবশ্য খুব বেশি পরামর্শ দেবার কিছু নেই। শুধু তার অগ্রগতির খবর জানতে পারি প্রতিদিন। কি পন্য নিয়ে নামা উচিত, ডোমেইন নাম কি হওয়া উচিত, ঢাকায় কোন পার্টনার নিলে ভাল হবে নাকি একাই ময়মনসিংহ থেকে তার ব্যবসা চালাবেন- এমনই নানাবিধ প্রশ্ন।
আরিফ ভাইকে ভাল লেগেছে এজন্য যে তার মধ্যে তাড়া হুড়া নেই। তিনি আগে মার্কেট জরীপ করে নিচ্ছেন, যে প্রোডাক্ট ওয়েবসাইটে দিবেন তার সাপ্লাইতে সমস্যা হবে কিনা, পন্য কত ঘণ্টার মধ্যে ঢাকায় ক্রেতার হাতে যাবে- এমন সব জিনিস নিয়ে তিনি ভাবেন এবং আমার সঙ্গে আলোচনা করেন। এভাবেই তিনি এখন ই-কমার্স ব্যবসা শুরু করার প্রায় দ্বারপ্রান্তে। আমি জানি তিনি সফল হবেন কারণ তার মত এমন সিরিয়াস ভাবে চিন্তা করে প্রতিটি ধাপ এগুতে আমি খুব কম লোককেই দেখেছি। আশা করি
সত্যি বলতে কি আমার মনে হয় যে আরিফ ভাই ও নাজমুল ভাইদের থেকেই আগামি দিনের সফল উদ্যোক্তাদের জন্ম হবে। তাদের জন্য আমরা ই-ক্যাব (http://www.e-cab.net/ ) প্রতিষ্ঠা করেছি। তারা অনেক সফল হন এবং তাদের কোম্পানিতে শত শত লোকের চাকুরি হোক এই কামনা করি।