১. স্পষ্টবাদী হয়ে উঠছে মানুষ। এখনকার পোলাপানরা সোজাসুজি কথা বলতেই বেশি পছন্দ করছে। তা এক হিসেবে ভালোই, তবে সমস্যা হচ্ছে কথার সাথে বিনয় মেশানো থাকছে পরিমাণে কম। আসলে সেলফোনে পয়সা পুড়িয়ে যোগাযোগ করতে গিয়ে, বিনয় দেখানোর মতো সময় খরচ করা এবং ধৈর্য ধরায় কারো পোষাচ্ছেনা। তবে, বিনয়ের বিনিময়মূল্য অনেক।
২. শর্টকাটে না হলে আর বড়লোক হওয়া যাবে না – এ ধারণা এখনো প্রায় সত-অসত সবার মনে বধ্যমূল, এবং তা বোধহয় সঠিকও বটে, কারণ আমাদের দেশে আর অন্যকোনো রাস্তা বানানো নাই। শর্টকাট মানেই সাকসেস- সফলতা। বাজারে এখন শর্টকাটে’র কাটতি। তিনঘন্টার মুভির বক্তব্য উঠে আসছে তিরিশ সেকেন্ডের টিকটকে।
৩. ড্রাইভিং ক্লাসে ভর্তি হয়েছি। প্রশিক্ষক সাহেব আমার বর্তমান পেশা জানতে চাইলে বলেছি গার্মেন্সে চাকরি করি এবং ড্রাইভিং শিখে বিদেশ যেতে চাই । মিথ্যার আশ্রয় নেয়ার কারণ উনি যাতে আর কোনো প্রশ্ন না করেন্। আমার ধারণা সত্যি হয়েছে, গার্মেন্সকর্মীদের নিয়ে কেউ উতসাহী হবেনা এটাই স্বাভাবিক। উনি আমাকে টুকটাক আরবীও শিখাতে চেয়েছেন যাতে মধ্যাপ্রাচ্যে গিয়ে কাজ চালাতে পারি। এখন পর্যন্ত একটামাত্র আরবী শদ্ব শিখিয়েছেন, তা হচ্ছে, হিয়া-মাজুনন, মানে, সে পাগল।
৪. এখনো বাংগালরা নিজেদের গরীব বলে পরিচয় দেয় এবং দিতে গর্ববোধ করে। ভোটের পোস্টারে লেখা থাকে- “মেহনতি মানুষের কন্ঠস্বর, গরীবের বন্ধু আদম_ ভাই কে ভোট দিন”। গরিবী আছে আমাদের চলনে-বলনে, সাহিত্যে, সিনেমায়, গানে, মনে-প্রাণে, সওওওব খানে।
৫. যারা শ্রমিক তাদের উর্পাজিত পয়সা বোধহয় শতভাগ হালাল, সবার মতো, আমারো এমনটাই ধারণা ছিলো। আদতে কাহিনি ভিন্ন, তারা কাজে ফাকি দেয়, মালিককে নানা ছল চাতুরিতে ঠকায় এবং তাদের দায়িত্বগ্যানহীনতা প্রশ্নাতীত। তাদের ইনকাম মন্দ নয় এবং সবাই মাইক্রোক্রেডিটের মেম্বার। লোনের সাপ্তাহিক কিস্তি তাদের লাইফের সব’চে বড় চ্যালেন্জ।
৬. মানুষ যতো বুড়ো হয়, ততোই তাদের লাজ-লজ্জা এবং সংকোচবোধ ও বুদ্ধি-শুদ্ধি কমতে থাকে। তারা চায় সবাই তাদের কথা শুনুক, তাদের মান্য করুক। বুড়োদের সব কথা যে শুনতে নেই তার প্রমাণ জুলাই মাসের ছাত্র আন্দোলনের সফলতা।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৯:৩০