দোকানে কিছুক্ষণ বসে থেকে বোরিং হয়ে যাচ্ছিলাম। তাই একটু রিলাক্স পেতে মোড়ের পরে মোখলেসের চায়ের দোকানে গেলাম ওর দুই নম্বর পাতির রং চা খেতে!
চায়ের কাপে এক এক চুমুক দিচ্ছি আর সেই অতৃপ্তির স্বাদ আমার জিহ্বায় জড়াচ্ছে!
কোন কিছুতে আজকাল স্বাদ নেই। সব কিছুতেই ভ্যাজাল।
হঠাৎ এ কি হচ্ছে আমার সাথে?
ঠিক বুঝতে পারছি না। মাথায় চক্কর দিচ্ছে। চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে আসছে।
মোখলেছ শালা! নিশ্চিত চায়ের সাথে কিছু মিশিয়েছে। গতকাল একটা প্যান্টের দাম বেশী চাওয়ায় এভাবে প্রতিশোধ নিতে চাইছে?
আমি যদি মাথা ঘুরে পড়ে যায় তাহলে মোখলেছ নিশ্চিত আমার পকেট ছিনতাই করার চেষ্টা করবে। কিন্তু আমার পকেটে তো কোন
টাকা নাই। আমি তো আজকেও ওর দুই নম্বর পাতির চা বাকি খাইতে এসেছিলাম।
নাহ, তেমন কিছুই হয়নি। চা টা শেষ করে কাটিয়ে আসতে পেরেছি। কিন্তু মাথাটা ভন ভন করছে। চোখে ঝাপসা দেখছি সবকিছুই।
আমি ঠিক কোন দিকে আগাচ্ছি নিশ্চিত অবস্থান বলা মুশকিল। কোন গাড়ির তীব্র হেডলাইটের আলো এসে চোখ ধাঁধিয়ে দিচ্ছে।
মনে হচ্ছে গাড়িটা দ্রুত গতিতে আমার দিকেই তেড়ে আসছে।
সবকিছুই অন্ধকার। আমি কি চোখ বুজে আছি এখন? কানের কাছে আলতো স্বরে কোন কন্ঠস্বর ভেসে আসছে।
-এই যে শুনছেন? শুনছেন?
চোখ খুললাম। এতক্ষণ আমি ঘুমের ঘোরে ছিলাম। একি? আমি কোন একটা বাসে বসে আছি। বাস চলছে। আমার পাশে বসে আছে এক অপরুপ রুপবতী কন্যা! তাহলে সেই কি ডাকছিলো আমাকে!
-আপনি ঘুমাচ্ছেন? আপনি কি জানেন এই বাসটা ডাকাতি হয়েছে!
আমি নির্বাক হয়ে গেলাম মেয়েটির মুখের কথা শুনে! সামনে তাকিয়ে দেখলাম কিছু ডাকু বন্দুক ঘাড়ে নিয়ে হাটা চলা করছে।
কি করা যায় এই মুহূর্তে? ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না। হাইওয়ে ছেড়ে হঠাৎ করে বাসটা জঙ্গলের রাস্তা ধরলো। কিছুদূর যাওয়ার পর একটা জায়গাতে গিয়ে বাসটা দাড়ালো।
ডাকুর সর্দার সবাইকে নির্দেশ করলো সেখানে নেমে পড়তে। সিরিয়াল ধরে সবাই এক এক করে নামছে। ডাকুরা সব আগেই নেমে পড়েছে।
আমি এবং রুপবতী রুপবান ছিলাম একেবারে পেছনের দিকে। সামনে আগাতে গিয়ে নজরে
পড়লো মোখলেছ কে! কি ব্যপার?
মোখলেছ এখানে কেন? আমি মোখলেছের দিকে চোখ পাকিয়ে বললাম,
শালা! তোর জন্যই আজ এই বিপদে পড়লাম!
মোখলেছ আমাকে মুখ ভেংচি দিলো।
মাথাটাই গরম হয়ে গেলো ওর ভেংচি কাটা দেখে! দরজার খুব কাছাকাছি গিয়ে আমি মোখলেছের পাছায় এক লাথি মেরে নিচে ফেলে দিয়ে সুন্দরীরে পাশে বসাইয়া জলদি জলদি গাড়ি স্ট্রার্ট করে টান দিলাম!
মোখলেছ পিচ থেকে বলতে লাগলো,
ভাই আম্রে ফালাইয়া যাইস না!
আমি বললাম,
মর তুই। ডাকুদের তোর দুই নম্বর পাতির চা বানাইয়া খাওয়া।
একি! এটা কি হলো? আমার সারা শরীর রক্তে ভিজে উঠলো! গুলি লেগেছে আমার পিঠের দিকে। সুন্দ্রি কাঁদছে। চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে!
ঝাড়া মেরে লাফিয়ে উঠলাম। আমি হাঁপাচ্ছি।
রাত বাজে তিনটা। এতক্ষণ তাহলে স্বপ্ন দেখছিলাম! কয়েকবার চোখ বুজে স্বপ্ন টা পুরো করার চেষ্টা করলাম। কাজ হলো না! খামোখা
রাগ হচ্ছিলো মাঝরাতে মোখলেছের উপ্রে!