মোটর বাইক চালায় প্রায় চার বছর ধরে।
অথচ, এখনো কোন কাগজপত্র রেডি হয়নাই।
এটা আমার জন্য অতিশয় সুখের সংবাদ হলেও কোন পুলিশ বাহিনীর চোখে মোটেও সুখকর কিছু নয়। অলিগলি দিয়ে বেশ কাঁপিয়ে বাইক টানি। হাইওয়ে তে বুঝে শুনে ঢুকি। ভাবছেন কাগজপত্র কেন করি না?
কয়েকবার নিয়ত করেছিলাম কাগজপত্র করার। কিন্তু যতবারই এই নিয়তে টাকা গুছিয়েছিলাম ততবারই অন্য কোন কাজে টাকা খরচ হয়ে গেছে।
আচ্ছা এসব বাদ দিলাম। একবারের ছোট্ট একটা ঘটনা বলি।
হাইওয়ে ধরে গাড়ি বাগিয়ে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ সামনে একজন যমদূতের দেখা পেয়ে গেলাম।
রোডের মাঝখানে এসে বেড় দিলো এক সার্জেন্ট পুলিশ!
কথপোকথনঃ
সেঃ আপনার হেলমেট কই?
আমিঃ ভুলে বাসায় রাইখা আইছি স্যার।
সেঃ লাইসেন্স দেখান?
আমিঃ নাই।
সেঃ গাড়ির কাগজপত্র?
আমিঃ নাই।
সেঃ ইন্স্যুরেন্স?
আমিঃ এটাও নাই স্যার।
সেঃ আপনাকে এখন কেস দিলে প্রায় তিন হাজার টাকা যাবে! সকাল সকাল কেস দিতে চাচ্ছি না। এক কাজ করেন। এক হাজার টাকা হাতে দিয়ে কেটে পড়েন।
আমিঃ স্যার, আপনার মেঝো ছেলেটার নাম কি যেন?
সেঃ সজিব!
আমিঃ হ্যাঁ হ্যাঁ ..সজিব। আমরা প্রাইমারী থেকে একসঙ্গে পড়েছি। আমার জানের দোস্ত ছিলো বলতে পারেন। কত ভালবাসতাম ওকে! কতবার আমাকে ও বাড়িতে নেবার চেষ্টা করলো, কিন্তু শেষ পর্যন্ত যাওয়া হলো না!
আচ্ছা সজিব এখন কোথায় পড়ছে?
সেঃ ওকে ওর মামার কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। ঢাকা থাকে। এমবিএ শেষ করেছে এবার।
আমিঃ ওকে আমার কথা বলিয়েন কিন্তু। খুব মিস করি ওকে!
তো আঙ্কেল, কত টাকা দেবো বললেন?
লজ্জায় আঙ্কেলের মুখটা লাল হয়ে গেছে দেখলাম। আমি পকেটে হাত দিতে যাবো ঠিক সেই মুহুর্তে উনি বলে উঠলেন,
সেঃ থাক বাবা! কিছু দেওয়ার দরকার নাই! তুমি চলে যাও। আর দ্রুত গাড়ির কাগজপত্র করিয়ে নিও।
আমিঃ আঙ্কেল, আগামী মাসেই "ইনশাআল্লাহ! করে ফেলবো। এর আগে যদি কেউ ডিস্টার্ব করে তাহলে কি করবো?
সেঃ তুমি শুধু বলবে, সেকেন্দার আলী আমার আঙ্কেল! আর কোন ভয় নাই!
আমি ছোট্ট করে একটা সেলাম ঠুকে কেটে পড়লাম। আঙ্কেল ইমোশনাল হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো।