১৪ই ফেব্রুয়ারী বা বিশ্ব ভালোবাসা দিবস বা Valentine’s Day নিয়ে কিছু কথা।
আমি ব্যক্তিগত ভাবে কোন দিবসের বিরুদ্ধে নই। উল্টা আমার কাছে ভালো লাগে এমন কোন বিশেষ দিন নিয়ে মাতামাতি করতে। যতই আমরা মুখে মুখে বলি এই দিন বা সেই দিন পালন করে লাভ কি, ভালোবাসা থাকলে সবদিনই এক। বাস্তবে কিন্তু তা নয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় আমরা প্রিয়জনের প্রতি আমাদের ভালোবাসা, মমতা বা টান প্রকাশ করতে পারিনা। এটা আমাদের দোষ না, আমাদের সমাজ – সংস্কৃতির কারনে এমন সংকোচ হয়ে আমাদের। পশ্চিমাদের মত আমরা হুট করে বলতে পারিনা “Love you mom বা Love you son”. ঠিক এই সংকোচ এবং চর্চার অভাবে আমাদের দেশের অনেক গ্রেজুয়েশান করা শিক্ষার্থী ইংরেজিতে কথা বলতে পারেনা। তাই এমন কোন বিশেষ দিনে আমরা ঐ দিনের উছিলায় হলেও আপনজনদের প্রতি নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করার সহজ মাধ্যম পাই।
আসুন আমরা কয়েকটা প্রশ্ন এবং উত্তর দেখিঃ
১৪ই ফেব্রুয়ারী কি দিবস?
উত্তরঃ ভালবাসা দিবস।
একটু লক্ষ করুন..........
জন্মদিনঃ Birthday.
বিবাহ বার্ষিকিঃ Marriage Day.
ভালোবাসা দিবসঃ Love Day.
ভালোবাসা দিবস হলে "Love Day" হওয়াটাই স্বাভাবিক ছিল।
কিন্তু Valentine's Day হল কেন, কেউ কি কখনও খেয়াল করেছেন?
এবার আসি মূল কথায়,
আমাদের আজকের এই Valentine’s Day এর আরো কয়েকটা নাম রয়েছে যেমন; Saint Valentine’s Day বা Feast of Saint Valentine। আনুমানিক ৪৯৬ খ্রিষ্টাব্দ থেকে প্রতি বছর ১৪ই ফেব্রুয়ারি পশ্চিমারা “খ্রিষ্টান ভোজের দিন” হিসেবে এই দিনটি পালন করা শুরু করে, আনুমানিক ২৭০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে শহিদ হওয়া Valentine নামের ধর্ম যাজক এর সম্মানে। সেই ধর্ম যাজকের ব্যাপারে অনেক মতামত রয়েছে, কেউ বলে Valentine রোমান সম্রাজ্জের বিরুদ্ধে খ্রিষ্টান ধর্ম প্রচার করার অপরাধে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়, আবার কথিত আছে তিনি খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী নির্যাতিত বন্ধিদের সেবা করার জন্য কারাগারে থাকতেন। তার চিকিৎসা এবং সেবায় এক অন্ধ মেয়ের দৃষ্টি ফিরে পেলে তিনি সবার প্রিয় হয়ে উঠে, অন্ধের পরিবার এবং আর অনেকে মিলে প্রায় ৪০ জন খ্রিষ্টান ধর্ম গ্রহন করে। তখন রোমান সম্রাট ক্লডিয়াস (দ্বিতীয়) তার কাজে প্রভাভিত হয়ে ব্যক্তিগত ভাবে তার সাথে আলোচনা করেন তাকে রোমান পৌত্তলিকতায় রূপান্তরিত করতে। ভ্যলেন্টাইন সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে সম্রাট ক্লডিয়াসকে খ্রিষ্টান ধর্ম অবলম্বন করতে প্রস্তাব দেয়, এই কারনে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। কথিত রয়েছে সেই অন্ধ মেয়েটি ছিল ঐ কারাগারের পরিদর্শকের যার সাথে পরবর্তীতে ভ্যলেন্টাইনের প্রনয় হয়। সেন্ট ভ্যলেন্টাইনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আগে তিনি ঐ মেয়েকে একটা চিঠি লিখেন, সেই চিঠিতে “your valentine” লিখে সাইন করেন। আমাদের এই ভালোবাসা দিবসটি সেই খ্রিষ্টান ধর্ম যাজকের সম্মানে শুরু করা ধর্মীয় ভোজনের দিনের আধুনিক রুপ।
আমি কাউকে ভালোবাসা প্রকাশ করতে না করছিনা, আপনার আপনজন এবং প্রিয়জনের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করুন। তবে কোন বিশেষ দিন পালন করলে সেটা সম্পরকে ভাল করে জেনে করা উচিৎ।
ও হ্যাঁ সবাইকে ফাল্গুনের প্রথম দিনে বসন্তের শুভেচ্ছা...
এই লেখার ক্রেডিট কিছুটা পাবে বন্ধু Abdur Rayhan এবং Wikipedia.
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৩১