আর ২০/২৫ অথবা ৩০ বছর পর জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পৃথিবীর অনেক দেশ ভয়াবহ বিপদের মধ্যে পড়বে। অথচ সেই দেশ গুলোর সরকার জলবায়ু নিয়ে কোনো চিন্তা ভাবনা করছে না। মানুষসহ সমগ্র প্রাণী ও উদ্ভিদ জগতের বেঁচে থাকার জন্য প্রাকৃতিক ভারসাম্য একান্ত অপরিহার্য। পৃথিবীতে কোটি কোটি প্রাণীর বাস, একেই জীববৈচিত্র্য বলে। অথচ মানুষ সব ধ্বংস করে দিচ্ছে।
প্রতিটা মানুষের উচিৎ গাছ লাগানো। সারা দেশ গাছ দিয়ে ভরে ফেলতে হবে। পুরো দেশ হয়ে যাবে সবুজ। গাড় সবুজ। আর কয়েকদিদন পর বর্ষাকাল শুরু হবে। গাছ লাগানোর উপযুক্ত সময় হচ্ছে বর্ষাকাল। গাছ আমাদের সবচেয়ে বড় বন্ধু। প্রাকৃতিক যে কোনো বিপদ-আপদ থেকে আমাদের বাঁচাবে গাছ। অথচ আমাদের দেশে লোকজন পাগলের মতো গাছ কেটে চলেছে। বন উজাড় করে ফেলছে। পরিবেশ দূষণ রোধ করতে জীব মণ্ডলের সার্বিক সংরক্ষণ ও কার্যকারিতা বজায় রাখার কারণে জীববৈচিত্র্যর বিকল্প নেই। বন ও পরিবেশ মন্ত্রনালয় সারা বছর কি করে কে জানে! তাদের উচিৎ গত ৫ বছর তাঁরা কি কি কাজ করেছে সেসব তালিকা জাতির সামনে প্রকাশ করা।
একসময় গ্রামে নানান রকম পশু পাখি দেখা যেত। আজকাল সুন্দরবনেও পশু পাখি দেখা যায় না। কত প্রাণী বিলুপ্তির হয়েছে তার হিসাব নেই। মানুষ সব তছনছ করে দিচ্ছে। বন জঙ্গল ধ্বংস করে দিচ্ছে। এতে ক্ষতি হচ্ছে মূলত পৃথিবীর। আমরা যে পৃথিবীতে থাকি সেই পৃথিবীর ক্ষতি করে চলেছি ক্রমাগত! কিছু দিন আগে আগুন লাগলো আমাজান জঙ্গলে। সীমাহীন ক্ষতি হয়েছে পৃথিবীর। এই ক্ষতি কোনো কিছুর বিনিময়ে পোষানো যাবে না। মানুষ যত অন্যায় করবে প্রকৃতির উপর, প্রকৃতি মানুষকে ক্ষমা করবে না। কঠিন শাস্তি দিবে। জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ করা গেলেই কেবল পৃথিবী হবে মানুষের জন্য খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থানের দিক দিয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ।
প্রকৃতি ভালো থাকলে আমরা ভালো থাকবো। এজন্য এমন কিছু করা যাবে যে যাতে প্রকৃতির ক্ষতি হয়। পৃথিবীতে এমন দেশও আছে, যেখানে বিনা প্রয়োজনে একটা গাছ কাটলে জেল জরিমানা হয়। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের একটা বই আছে 'পার্থিব' নাম। সেই বইয়ে একটা চরিত্র আছে। সে গাছ ভালোবাসে। গাছ যে কত গুরুত্বপূর্ন সে কথা ভাবে আর যারা গাছ কাটে তাদের প্রতি রাগ করে। মানুষ তার খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, ওষুধপত্র প্রভৃতির জন্য সরাসরি প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল। যেকোনো দেশের জীববৈচিত্র্য সেই দেশের সম্পদ। বিভিন্ন প্রজাতির জীব, প্রকৃতিকে বৈচিত্র্যময় ও সুন্দর করে তোলে। সরকারের বহু প্রতিষ্ঠান মাস শেষে শুধু বেতন নেয়। কোনো কাজ করে না। শুধু বছরে একদিন তাঁরা খুব কাজ দেখায়। যদি সেদিন কোনো 'দিবস' থাকে।
প্রত্যেক জীবের এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকার পূর্ণ অধিকার আছে। পরিবেশে অক্সিজেনের সরবরাহ বজায় রাখতে, বৃষ্টিপাত ঘটাতে উদ্ভিদের ভূমিকার কথা আমরা সবাই জানি। নিরাপদ পৃথিবী রক্ষায় জীববৈচিত্র্যের ভূমিকা অপরিসীম। এই আধুনিক যুগে এসেও 'জীববৈচিত্র্যের সংরক্ষণ ও গুরুত্ব সম্বন্ধে' মানুষজনকে সচেতন করতে হয়। জীববৈচিত্র্যের বিলুপ্তিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হব আমরাই, মানবজাতি। আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থানের জোগানদার আমাদের পারিপার্শ্বিক জীবজগৎ। মানুষের লোভ মানুষের অধপতনের জন্য দায়ী। তাই আসুন সবাই এই বর্ষায় অন্তত দুইটি করে গাছ লাগাই।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জুন, ২০২২ রাত ১০:৪৬