১। লিখলেই তো লেখক হওয়া যায়। কিন্তু সাহিত্যিক হতে হলে ভিন্ন একটা কিছু থাকা লাগে। কিছু মানুষ প্রেম ভালোবাসা উপন্যাসকেও ইসলামী করণ করে ফেলেছে। যে কারণে, তারা হুমায়ুন, আনিসুল হক, ইমদাদুল হক মিলনদের উপন্যাসের চেয়ে বেশী হালাল মনে করে কাসেম বিন আবু বকরের উপন্যাসকে!! এক শ্রেণীর মুসলমান সব কিছুতে ইসলামী লেভেল থাকলে পুলকিত হয়ে থাকেন। যেমন- কিছু লোকদের বলতে শোনা যায় ইরানী ছবি দেখা যেতে পারে। কেন ভাই? ইরানী ছবিতে নায়ক নায়িকা হাত ধরে না।
২। কিছু কিছু শব্দের উপর আমার খুব ঘৃণা জমেছে। যেমন 'কঠোর হুশিয়ারি', মন্ত্রীরা প্রায়ই কঠোর হুশিয়ারী দিয়ে থাকেন। ফলাফল শূণ্য। টিভি চ্যানেল দেখলেই মন্ত্রীরা 'কঠোর হুশিয়ারী' শব্দটা খুব বেশি বলেন। দ্রব্য মূল্যের দাম বৃদ্ধি অথবা ট্রেনের টিকিট কালো বাজারি হলে মন্ত্রীরা 'কঠোর হুশিয়ারি' দিয়ে থাকেন। আরেকটা শব্দ 'তদন্ত কমিটি'। আসলে, 'তদন্ত কমিটি' হলো, মানুষকে ধোকা দেয়ার একটি উন্নতমানের পথ! আজ পর্যন্ত কোন তদন্ত কমিটি তদন্ত করে মানুষের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটিয়েছে?....তদন্ত কমিটি করা হয় হত্যাকারীকে কিভাবে বাঁচানো হবে তার পথ বের করার জন্য, তদন্ত কমিটি করা হয় কোনভাবে রাজনৈতিক ফায়দা নেয়া যায় কি না সেই পথ বের করার জন্য, তদন্ত কমিটি করা হয় ঘটনাকে সাজিয়ে গুছিয়ে অন্যদিকে প্রবাহিত করার জন্য। তদন্ত কমিটি নয় তদন্ত কমেডি ।
৩। বালিশে মাথা রাখা মাত্র ঘুমিয়ে পড়ার সৌভাগ্য আমার না। আমাকে অনেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকতে হয়।
৪। আমাদের নবীজি (স.) মাছের গন্ধ সহ্য করতে পারতেন না। তিনি কখনো মাছ খান নি। একবার ইয়েমেনে তাকে মাছ খেতে দেয়া হয়েছিল। দুর্গন্ধ বলে তিনি সরিয়ে রেখেছিলেন।
৫। অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে নিজের বক্তব্য তুলে ধরার ক্ষেত্রে বিশ্বের সর্বোৎকৃষ্ট উদাহরণ হল চার্লি চ্যাপলিন।
৬। কাল রাতে হুট করে খুব ভয় পেলাম, খুব। ভয়ে আমার হাত পা কাঁপছে। ঘামে সারা শরীর ভিজে গেছে। পাশে সুরভি গভীর ঘুম। উঠে যে ওয়াশ রুমে যাবো, সেই সাহসও পাচ্ছি না। সুরভিকেও ডাকতে পারছি না। বেচারা আমাকে দেখে ভরসা পায়। এখন যদি দেখে আমার এই অবস্থা, তাহলে তাকে ভরসা কে দিবে? কেন ভয় পাচ্ছি? নিজেকে বার বার বুঝাতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলাম। মনে হচ্ছে ঘরে কেউ আছে, হাটছে, ফিস ফিস করে কথা বলছে। মনে হলো যেন তাদের নিঃশ্বাসের শব্দও পাচ্ছি। প্রচন্ড ভয়ে আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে।
নিজেকে নিজেই বারবার বুঝাচ্ছি- ভয় পাওয়ার কিচ্ছু নেই, ভূত বলতে কিছু নেই, মন আমার বুঝ মানছে না। ঠিক এই সময় রান্না ঘরে বেসিনের কল ছাড়ার স্পষ্ট শব্দ শুনলাম। মনে হচ্ছে আজ আমি মরেই যাবো। ঘর অন্ধকার করে ঘুমানোর অভ্যাস আমার। ঘরের লাইট বন্ধ। কিন্তু আমি খুব গভীর ভাবে তাদের অস্তিত্ব টের পাচ্ছি। বাধ্য হয়ে সুরভিকে ডেকে তুললাম। সুরভি লাইট অন করে প্রচন্ড অবাক হলো। আমাকে জড়িয়ে ধরলো। বলল, কোনো ভয় নেই। ভয়ের কি আছে? এই যে আমি! ছোট বাচ্চারা ভয় পেলে বড়রা যেভাবে জড়িয়ে ধরে ভয় দূর করে ঠিক সেভাবে সুরভি আমাকে আগলে রাখলো। অনেকক্ষন পর ভয় কমলো। দুই মগ ঠান্ডা পানি খেলাম।
ভয়টা কেন পেলাম? ভয় পেয়েছি কারন রাতে ঘুমানোর আগে ভূতের বই পড়েছি। নাম 'দ্য থিং ইন দ্য ক্লজিট' কোলকাতার একজন অনুবাদ করেছে। সেই বইয়ে খুন খারাবি, মানুষ কাটাকাটি, মৃত মানুষ, কবরস্থান, রক্ত সবই ছিল। এর মধ্যে গতকাল মানে শুক্রবার পর পর দুইটা ভূতের মূভি দেখেছি। একটা হলো 'Drag Me To Hell' আরেকটার নাম 'জুলিয়া’স আইজ'।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৮ রাত ১০:৪১