ভয়াবহ ব্যস্ততার মাঝে দিনটি পার করলাম। সারাদিনে একবারও ব্লগে আসার সময় পাইনি। এখনও বাসা ভরতি মেহমান। এতটাই ব্যস্ত ছিলাম যে বৈশাখ উপলক্ষে কেনা পাঞ্জাবী আর শার্ট পরার সময় পাইনি। সুরভিও খুব বেশি ব্যস্ত ছিল। সে তার বৈশাখ উপলক্ষ্যে কেনা শাড়ি পরতে পারেনি। সুরভি তার শাড়ির সাথে মেচিং করে আমার জন্য শার্ট ও পাঞ্জাবী কিনেছে। খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠেছি আজ। সুরভি আর আমার ভাবী গতকাল রাত থেকেই রান্না নিয়ে ভীষন ব্যস্ত। এমন কিছু নাই যে রান্না করেনি। ভাত, পোলাউ, রোস্ট, শুটকী মাছ, আলু ভর্তা, বেগুন ভর্তা, গরুর মাংস, ইলিশ মাছ ভাজা, সবজি। পায়েস, পুডিং, পিঠা তিন রকমের, নুডুলস, বেলের সরবত, পিজা। আরও বেশ কিছু আইটেম।
এদিকে গত কয়েকদিন ধরে আমার শরীরটা ভালো নেই। প্রচন্ড মাথা ব্যাথা আর জ্বর। সকালে দুইটা নাপা, রাতে দুইটা নাপা খেয়ে টিকে আছি। জ্বর নিয়েই বেশ কয়েকবার বাজারে গিয়েছি। নানান রকম ফল কিনেছি। বড় তরমুজ কিনেছি তিনটা। যেমন মিষ্টি, তেমন লাল! দই, মিষ্টি, ছানা, চমচম, লাড্ডু, গুজিপেয়ারা- হাতের কাছে যা যা পেয়েছি সবই কিনেছি। সুরভি'র বাবা, বড় ভাই, ছোট ভাই এবং বড় ভাইয়ের নতুন বউ তারা সবাই এসেছেন। আমার বড় ভাইয়ের শ্বশুর বাড়ির লোকজন এসেছে। বড় ভাইয়ের বন্ধুরা এসেছে। বাড়ি ভরতি মানুষ। এর মধ্যে একগাদা বাচ্চা কাচ্চা দৌড়ঝাপ শুরু করেছে। ঘরের মধ্যেই ফুটবল খেলছে, সাইকেল চালাচ্ছে। কোনো বাচ্চা চিৎকার করে কাঁদছে। ভয়াবহ অবস্থা।
এদিকে পরী বায়না ধরেছে সে হাতে মেহেদি দিবে। দিবেই। আমি তাকে নিয়ে গেলাম দোকানে- টিউব মেহেদি কিনে দিলাম। তারপর সে বায়না ধরলো 'কিন্ডার জয়' (বাচ্চাদের একরকম চকলেট) কিনে দিতে হবে। আবার তাকে নিয়ে দোকানে গেলাম। ছয় তলা, দুই তলা করতে করতে আমার পা ব্যাথা করতে শুরু করেছে। ছোট ভাইয়ের ছেলে আরিশ অসুস্থ। গতকাল বাসায় ফিরেছে হাসপাতাল থেকে পনের দিন পরে। সে সারাক্ষন ঘ্যান ঘ্যান করে কেঁদেই চলেছে। আমি কাউকে আপেল কেটে দিচ্ছি, কাউকে আঙ্গুর ধুয়ে দিচ্ছি আবার কাউকে মালটা বা তরমুজ কেটে দিচ্ছি। সব কিছু মিলিয়ে আমার ভালো লাগছে না। ইচ্ছা করছিল ঘর অন্ধকার করে শুয়ে থাকি।
নিজের মাথা ব্যথা গোপন রেখেই সবার সাথে কথা বলছি হাসি মুখে। দুপুরে খাইনি। খাবার পরিবেশন করে-করে খাবারের গন্ধে মাথা ঘুরছে। বিশেষ করে ইলিশ মাছের গন্ধ, পোলাউ এর গন্ধ, আর শুটকী মাছের গন্ধে আমার দম যেন বন্ধ হয়ে আসছিল। আজ আমি কোনো ছবিই তুলিনি। গতকাল রাতেই ক্যামেরা ফুল চার্জ দিয়ে রেখেছিলাম। তবুও কেউ কেউ হয়তো তুলে থাকবে। ইচ্ছা থাকা সর্তেও ছবি ব্লগে দিতে পারছি না। ছবি দিলেই কেউ কেউ বলবেন, 'ব্লগটাকে কি নিজের বেড রুম মনে করেন?' তাই ছবি দেওয়া থেকে বিরত থাকলাম। যাই হোক, হাসি আড্ডা আর খাওয়া-দাওয়া নিয়ে বৈশাখের প্রথম দিনটি শেষ হয়ে গেল। আপনাদের কেমন কাটলো বৈশাখ? কে কি লিখেছেন ব্লগে এখন পড়তে শুরু করবো।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৮:২৩