বাংলাদেশের খাবারের হোটেল গুলোতে খাবারের মান অতি নিম্ম। এবং ভয়াবহ নোংরা। কিন্তু দাম অত্যাধিক বেশি। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মানুষ হোটেলের খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। কিন্তু দেখার কেউ নেই। 'বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য' নামে সরকারের এই প্রতিষ্ঠানটি করে কি? সরকার যদি নিয়মিত হোটেল গুলোতে অভিয়ান চালায় তাহলে সাধারন জনগনের খুব উপকার হয়। কেউ'ই শখ করে হোটেলে খায় না। বাধ্য হয়েই খেতে হয়। অন্তত পক্ষে ভ্রাম্যমান আদালতও যদি এই সমস্ত হোটেল গুলোতে নিয়মিত যায় তদারকি করে তাহলে খাবারের মান অবশ্যই কিছুটা ভালো হওয়ার সম্ভবনা থাকে।
ঢাকা শহরের সব হোটেলের একই দশা। হোটেল মালিক অতি মুনাফা লাভের আশায় নিম্ম মানের খাবার কিনে আনেন। যেখানেই যাবেন, সবখানেই নোংরা এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার তৈরি সরবরাহ করা হচ্ছে। বাধ্য হয়েই ক্রেতাদের এসব খাবার খেতে হচ্ছে। খাবারের মূল্য বৃদ্ধি করা হয়। কিন্তু প্রতি বছরেই কমছে খাবারের মান। মরা মুরগি বিক্রির একটি সিন্ডিকেট রয়েছে রাজধানীতে। ঢাকার ফুটপাতে প্রতিদিন গড়ে প্রায় সাড়ে ৫ লাখ লোক ভাত খায়। এর জন্য রয়েছে প্রায় সাড়ে ৩ হাজারের মতো ঝুপড়ি ও মাঝারি হোটেল। বেশির ভাগ হোটেলের পানিতে কলিফর্ম জীবাণু থাকে। প্রতিনিয়ত প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হচ্ছে মানুষ; অফিস-আদালত, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, স্কুল-কলেজে যাচ্ছে। বেঁচে থাকার তাগিদে ঘরে বসে সময় কাটানোর সময় নেই কারও। কর্মের প্রয়োজনেই বাধ্য হয়ে বাইরের খাবার খেতে হচ্ছে অনেকের।
আমার নিজের চোখে দেখা, হোটেলের পেছনের দিকে যেখানে রান্না হয়- বাবুর্চির গায়ের ঘাম পড়ছে খাবারের ওপর। পাশেই একজন ওয়াসার পাইপলাইনের পানি দিয়ে গোসল করছে। আর শরীরের সাবানমাখা পানি ছিটকে পড়ছে খাবারে। গ্রিনরোড, ফার্মগেটের আশপাশ হোটেলের রান্নাঘরগুলোর দৃশ্য আরও ভয়াবহ। ময়লার আস্তর পড়া মেঝেতে রাখা হয়েছে সবজি। জুতা পায়ে কর্মচারীরা হাঁটার সময় কাদা ছিটকে পড়ছে ঢাকনাবিহীন খাবারের ওপর। রান্নার পানি রাখা হয়েছে শ্যাওলা পড়া হাউসে। আর এটিতে থালা-বাটি ও হাত-মুখ ধোয়া হচ্ছে। অথচ হোটেলটির সামনের ভাগে আছে টাইলস বসানো ও আকর্ষণীয় সাজসজ্জা। এমন নোংরা পরিবেশ ঢাকার প্রায় হোটেলেই রয়েছে। অফিসপাড়া বা প্রতিটা মহল্লার হোটেল গুলোরও একই অবস্থা। আসলে, এমন দৃশ্য রাজধানীসহ সারাদেশের প্রায় হোটেলেই। দেখার কেউ নাই।
নিরাপদ খাদ্য আইন পাস হয়েছে ২০১৩ সালে। সংবিধানের ১৫ অনুচ্ছেদে বলা আছে রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে হবে। আর এ দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে। এর ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালে নিরাপদ খাদ্য আইন তৈরি করে সরকার। ঢাকা শহরের হোটেল গুলোতে খাবারের মান ভালো করার জন্য সরকারের নিয়মতি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। রাজধানীর অন্যতম প্রাণকেন্দ্র টিএসসি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার এই অতি গুরুত্বপূর্ণ স্থানটিতে এত বছরেও পর্যাপ্তসংখ্যক মানসম্মত খাবারের দোকান গড়ে ওঠেনি।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৮ রাত ৯:৪৮