গত বিশ তারিখে আমার অফিসের কম্পিউটারটি ওপেন করে দেখি নেট লাইন নাই। আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। অযথাই চিৎকার চেচামেচি শুরু করলাম। নিজেই অনেকক্ষন তার গুলো নাড়াচাড়া দিলাম, কিন্তু কাজ হলো না। দৌড়ে আইটি ডিপার্টমেন্টে গেলাম। বললাম, আমার কম্পিউটারে নেট লাইন নাই। তাড়াতাড়ি ঠিক করে দেন। আইটির ছেলেটি বিরাট বদ। সারাদিন কোনো কাজ করে না। শুধু বসে বসে মুভি ডাউনলোড করে। সে বলল ব্যস্ত আছি। পরে সময় মতো দেখবো। তার সময় হলো বিকেলে। বলল নেট লাইন এর তার ইঁদুর কেটে ফেলেছে। আমি বললাম ঠিক আছে, ইঁদুর তার কেটেছে তার ঠিক করে দেন। সে বলল এই কাজ আমার না। এই কাজ করবে অরেঞ্জ বিডি।
বাসায় আমার ল্যাপটপটির খুব করুন অবস্থা। কাজ করে আরাম পাই না। আমার বাসায় দুইটা বাচ্চা আছে, তাদের প্রিয় খেলা আমার ল্যাপটপ নিয়ে আছাড় দেওয়া। বাচ্চাদের কঠিন করে ধমক দিতেও বুকে লাগে। অফিসে আমার কম্পিউটারটা একেবারে নতুন। অবশ্য এই নতুন কম্পিউটার পেতে আমাকে বেশ বেগ পেতে হয়েছে। এদিকে আমার খুব অস্থির লাগছে। মাথায় বেশ কয়েকটা লেখা জমে আছে। লিখতে পারছি না। কারো লেখা পড়তে পারছি না। হাত নিশপিশ করছে। আপনারা আবার ভাববেন না আমি অফিসে কোনো কাজ করি না। শুধু ব্লগ চালাই। আমার কাজ শেষে করে অথবা কাজের ফাঁকে ফাঁকে ব্লগ চালাই। কাজে ফাঁকি দেওয়ার অভ্যাস আমার নেই। অফিসে আমার কাজে কোনো গাফিলতি নেই। সবচেয়ে বড় কথা অফিসে নেট স্প্রীড বেশ ভালো।
কেমন লাগে আপনারাই বলুন(?) অফিসে সবার কম্পিউটারে নেট লাইন আছে, শুধু আমারটাতেই নাই। ইঁদুরের উপর খুব রাগ লাগল। ইঁদুর টাকে হাতের কাছে পেলে আছাড় দিয়ে মারতাম। মোবাইলে ব্লগ চালিয়ে কোনো আরাম পাই না। বরং বিরক্ত লাগে। যাই হোক, তিন দিন পর বিকেলের দিকে অরেঞ্জ বিডি থেকে লোক এসে নেট লাইন ঠিক করে দিল। সেদিন আর কম্পিউটারে বসা হলো না। পরের দিন সকালে অফিসে গিয়ে দেখি, ইঁদুর আবার আমার নেট লাইনের তার কুঁচি কুঁচি করে কেটে রেখেছে। HR এর কাছে গেলাম। বললাম, একটা পকাপাকি ব্যবস্থা করে দেন। আর ভালো লাগে না। HR বলে, যে পর্যন্ত আপনার কম্পিউটার ঠিক না হচ্ছে অন্য কম্পিউটারে বসে কাজ করেন। কিন্তু আমি নিজের কম্পিউটার ছাড়া অন্য কম্পিউটার ব্যবহার করা একেবারেই ভালো লাগে না। এরপর চারদিন পার হয়ে গেল। নেট লাইন আর ঠিক হয় না। অফিসের কয়জন আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসে। রাগে শরীরটা জ্বলে যায়।
HR কে বেশ কিছুক্ষন তেল দিলাম। অবশ্য তার সাথে আমার বন্ধুর মতো সম্পর্ক। আইটিকে নিয়ে হোটেলে গ্রীল চিকেন আর নান রুটি খাওয়ালাম। শেষে স্পেশাল চা। শেষ খবর হলো অরেঞ্জ বিডি সিডিউল দিতে পারছে না। তারা ভয়ানক ব্যস্ত। যাই হোক এখন পর্যন্ত কম্পিউটারটি ঠিক হয়নি। খুব রাগ লাগলো। শেষে CEO কে খুব ভদ্র ভাষায় একটা মোবাইলে ম্যাসেজ দিলাম। তিনি রেগে মেগে অস্থির। তার বক্তব্য এত সামান্য কাজের জন্য তাকে কেন ম্যাসেজ দিলাম। সে চিল্লাচিল্লি করলেও আইটিকে বলেছে ইমিডিয়েটলি রাজীব নূর খানের কম্পিউটার ঠিক করার ব্যবস্থা করো। তারপর অফিস কিছুটা নড়েচড়ে উঠেছে। এতক্ষন লিখলাম অপ্রয়জনীয় কথাবার্তা। এখন আমি আসল কথা বলব। যে জন্য এ পোষ্টটির অবতারনা
আমি ব্লগে আজ পর্যন্ত কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করি নাই। কাউকে খারাপ মন্তব্যও করি নাই। এগুলো করার অভ্যাস আমার একেবারেই নাই। আমার বাবা মা আমাকে এই শিক্ষা দেননি। ছোটবেলা থেকেই আমি একদম সহজ সরল জীবন যাপন করি। ব্লগে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে চেষ্টা করি। কোনো ঝামেলায় জড়াই না। কেউ কটু মন্তব্য করলেও এড়িয়ে যাই। না বুঝার ভান করি।
কিন্তু সেদিন আমার পোষ্টে এক ছাগল বেশ কয়েকটা অতি খারাপ মন্তব্য করেছে। অশালীন মন্তব্য করেছে। মিথ্যা মন্তব্য করেছে। মনগড়া, তিলকে তাল করে মন্তব্য করেছে। মেজাজটা অত্যাধিক খারাপ হয়েছে। মন্তব্য গুলো আমি মুছে দিয়েছি। তবে স্ক্রীনশর্ট নিয়ে রেখেছি। সামু ব্লগের কোনো ব্লগারকে আমি চিনি না। কোনোদিন কারো সাথে দেখা হয়নি। কে কোথায় থাকে? কে কি করে আমি কিছুই জানি না। কখনও জানতে চাইও নি। লেখা ভালো লাগলে পড়ি, মন্তব্য করি। সময় পেলে আমিও কিছু লিখতে চেষ্টা করি। ব্যস এই পর্যন্তই। মাঝে মাঝে লেখার সাথে ছবি ব্যবহার করি। এটা কি অন্যায়? আগে আমি লেখার সাথে ছবি দিতাম না। একদিন এক সিনিয়র ব্লগার বললেন লেখার সাথে ছবি দিবেন। তাহলে পাঠক বেশি পাবেন। তাই ছবি দেই। সব রকম ছবিই দেই। ছবি দেয়া যদি অন্যায়ই হতো তাহলে ব্লগ কর্তৃপক্ষ অবশ্যই আমাকে নোটিশ দিতেন। আর নোটিশ পেলে অবশ্যই আমি নিজেকে শুধরে নিতাম। আমি কখনও নোটিশ পাইনি। সহজ সরল সুন্দর আমার ব্লগ জীবন। ব্লগে যতক্ষন থাকি অবশ্যই এক আকাশ আনন্দ নিয়ে থাকি। নানান পদের লেখা পাই। যেদিন ভালো ভালো লেখা পাই মনটা খুশিতে ভরে যায়।
কিন্তু সেদিন এক ছাগল অকারণেই যা তা বলল, এক কথায় আমাকে অপমান অপদস্ত করার চেষ্টা করেছে। সবচেয়ে বড় কথা সুরভিকে নিয়েও বাজে কথা বলেছে। ওই বদকে সামনে পেলে হয়তো মাথায় হাত বুলিয়ে বুঝাতে চেষ্টা করতাম। দুষ্টলোকদের অবশ্যই শিক্ষা দেওয়া উচিত। আমি কাউকে কোনো দিন লাথথি দেইনি, তার মানে এই না যে আমি লাথথি দিতে জানি না। এই রকম বেশ কয়েকটা 'বদ' ব্লগের পরিবেশ নষ্ট করছে। আমার মনে হয় তারা কারো ইশারায় ইচ্ছা করেই এই কাজ গুলো করে। এদের জ্বালায় অতিষ্ট হয়ে অনেক ভালো ভালো ব্লগার ব্লগ থেকে বিদায় নিয়েছেন। আমার কথা হলো, সামু তাদের কান ধরে বের করে দেয় না কেন? সামুর উচিত এই ব্যাপারে কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়া। দুষ্ট গরুর চেয়ে শূন্য গোয়াল অনেক ভালো।
সভাই ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন। জয় বাংলা।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মার্চ, ২০১৮ রাত ৯:৪৭