১। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেনঃ লালন ফকির নামে একজন বাউল সাধক হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, জৈন ধর্মের সমন্বয় করে কী যেন একটা বলতে চেয়েছেন - আমাদের সবারই সেদিকে মনোযোগ দেওয়া উচিৎ। আরেকটি গানে লালন বলেছেন“ সব লোকে কয়, লালন ফকির হিন্দু কি যবন ।/ লালন বলে, আমার আমি না জানি সন্ধান।
কৈশোরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর "ভানুসিংহ ঠাকুর" ছদ্মনামে কয়েকটি কবিতা রচনা করেছিলেন। আধুনিক লেখক মণিশংকর মুখোপাধ্যায় তাঁর শংকর ছদ্মনামেই সর্বাধিক পরিচিত। সত্যজিৎ রায়ের ফেলুদা সিরিজের বিখ্যাত চরিত্র লালমোহন গাঙ্গুলি "জটায়ু" ছদ্মনামে পরিচিত ছিলেন।
ছদ্মনাম ব্যবহারের প্রধান উদ্দেশ্য কোনো ব্যক্তির প্রকৃত পরিচয় গোপন রাখা।
২। পশু পশুত্ব নিয়ে জন্মায় এবং সারাজীবন পশুই থাকে । কিন্তু মানুষ মনুষ্যত্ম নিয়ে জন্মায়না তাকে মনুষ্যত্ম অর্জন করতে হয় । ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ব্যাকটেরিয়া থেকে শুরু করে অনেক প্রাণী আছে যারা জন্ম থেকেই আত্মনির্ভরশীল হয়, কিন্তু মানব শিশু তা পারেনা । মানুষ জন্ম হয় পরনির্ভরশীল হয়ে পরে সে আত্মনির্ভরতা অর্জন করে । সকল প্রাণী আহার করে, বিশ্রাম করে, ভোগ করে, যৌন তারনা অনুভব করে, ক্ষুধার তীব্রতা বুঝতে পারে, মানুষও এসব পারে । মানুষ আরো অনেক কিছু পারে যা অপর কোন সৃষ্টি পারেনা।
৩। পবিত্র কোরআনে আছে, একটি ভালো কথা এমন একটি ভালো গাছের মতো, যার শেকড় রয়েছে মাটির গভীরে আর শাখা-প্রশাখার বিস্তার দিগন্তব্যাপী, যা সারা বছর ফল দিয়ে যায়।
প্রতিটি ভালো কাজই মানুষের মন জয় করে করতে হয়। আর মানুষের মন জয় করার একটি অব্যর্থ অস্ত্র হলো সুন্দর কথা।
৪। শার্লক হোমস একজন গোয়েন্দা, আর প্রফেসর শঙ্কু একজন পাগলাটে টাইপের বিজ্ঞানী। মিসির আলি সম্পূর্ণ অন্য রকম। গোয়েন্দাও নয়, আর পাগলাটে টাইপের বিজ্ঞানীও নয়।
মিসির আলি অত্যন্ত ঠাণ্ডা মাথার একজন যুক্তিবাদী মানুষ, যার জীবনের পথচলার সম্বল হলো লজিক। প্রফেসর শঙ্কুর জীবনের চালিকাশক্তি হলো বিজ্ঞান। মিসির আলির চালিকাশক্তি লজিক। তিনি লজিক দিয়ে সব কিছু ব্যাখ্যা করতে চান। কিন্তু কোনো কোনো সময় থমকেও যান, যখন দেখেন এমন বিষয় বা পরিস্থিতির তিনি মুখোমুখি হচ্ছেন, যা তিনি লজিক দিয়ে ব্যাখ্যা করতে পারছেন না।
৫। অন্যের কথা মতো নিজের জীবনকে না গড়ে, অন্যের ইচ্ছা মতো নিজেকে পরিচালিত বা ব্যবহৃত না হয়ে নিজের মধ্যের গুপ্ত সম্পদের আহোরণই আপনাকে প্রকৃত মানুষ হতে সহায়তা করবে।বিখ্যাত হওয়ার চেয়ে ভাল মানুষ হওয়া বেশি কঠিন।
৬। কবি ঢোল বাজানোর কাজ পায় এক মেয়ের দলে। সেই মেয়ে দিনে গান গেয়ে নেচে জীবন চালাতো আর রাতে দেহ বেঁচে। দলে বেহালা, হারমোনিয়া, বাঁশি বাজানোর লোকও ছিল। ওলাওঠাতে সেই মেয়ের মৃত্যু হয়। কাওকে না পেয়ে কবি একাই লাশ দাহ করে। কিন্তু এমন পাপিকে আগুন ছোঁয়ানো ছিল মস্ত পাপ। সবাই কবিকে বলে, তুমি এটা কি করলে? ভগবান যখন প্রশ্ন করবে তখন কি জবাব দেবে? কবি বলেছিল- কোন জবাব দিব না, মাথাটা নীচু করে চুপচাপ দাড়ায়া থাকবো। কবির কাছে আমিও শিখলাম নিরব বিদ্রোহ। যা আজো আমার পথ চলার পাথেও।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মার্চ, ২০১৮ সকাল ৯:১৬