১। মৃত্যুর ওপারে ঠিক কেমন আছেন জানিনা। তবে পৃথিবী থেকে যে ভালবাসা আর দোয়া নিয়ে বিদায় নিয়েছেন তাতে বিধাতার আপনাকে ভালোই রাখার কথা।
স্যার জানেন, পড়াশোনায় আমি কখনো খুব ভালো ছিলাম না। কিন্তু “হোটেল গ্রেভারইন”-এ আপনার শূণ্য থেকে একশ পাবার ঘটনা পড়ে আমি নিজেকে অনুপ্রাণিত করেছিলাম। অনেকবার ব্যর্থ হয়েছি, কিন্তু বারে বারে মনে হয়েছে, এই যে, আবারো শুরু করা যাবে।
২। আজ সকালে আমার খুব হিমু হবার ইচ্ছা করলো কিন্তু হলুদ কোনো পাঞ্জাবী না থাকায় আমি আজ হিমু হতে পারলাম না। ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বরের পরে আজ পর্যন্ত হুমায়ূন আহমেদের মত আর একজন সাহিত্যিক জন্মেনি আমাদের দেশে।
৩। যারা টিভিতে হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস নিয়ে নাটক তৈরি করেন- দয়া করে আপনারা স্যারের উপন্যাস নিয়ে আর নাটক বানাবেন না। আপনারা যা তৈরি করেন- তা পুরাটাই অতি অখাদ্য। খুব বিরক্ত লাগে। আমাদের মেজাজ খারাপ করে দেয়ার অধিকার আপনাদের নেই।
হুমায়ূন আহমেদের পরিচালনা করা নাটক গুলো বারবার দেখলেও একটুও বিরক্ত লাগে না বরং আনন্দের মাত্রা বেড়েই চলে কিন্তু আপনারা যারা স্যারের নাটক তৈরি করেন- তাদের উপর প্রচন্ড মেজাজ খারাপ হয়। ১০০ বছর চেষ্টা করলেও স্যারের মতন পারবেন না। দয়া করে সুন্দর একটা উপন্যাস- নাটক বানিয়ে আমাদের মেজাজ খারাপ করবেন না।
৪। হুমায়ূন আহমেদের একটা স্বপ্ন ছিলো। তা হলো একটি ক্যান্সার হাসপাতাল তৈরি করা। আমি অপেক্ষায় আছি কবে সেটার কাজ শুরু হবে..... কবে আমরা একটি ক্যান্সার হাসপাতাল দেখতে পারবো... স্যার নিজেও মনে হয় অপেক্ষায় আছেন। এক সময় কিছু ছেলে-পেলে কে দেখেছি ক্যান্সার হাসপাতাল করবে বলে অনেক চিৎকার চ্যাচামেচি করেছে। গত দুই তিন বছর ধরে তাদের কোনো খোজ খবর নেই। যতসব ভন্ডের দল।
৫। আমরা আপনাকে চিরদিন মনে রাখব
কেউ কেউ হারিয়ে যায়, দ্রুত হারিয়ে যায় রোগে শোকে ভূগে... বড় কষ্ট- এই চলে যাওয়া!
আপনার কাছে আমাদের অনেক ঋণ আছে কিন্তু হায় বেঁচে থাকে ঘুণপোকা, বেঁচে থাকে সাপ....
আর বেঁচে থাকে পা'চাটা কুকুর...
চোখ ভরতি জল নিয়ে আপনাকে বিদায় জানিয়েছিলাম- ভালোবাসা নিয়ে শ্রদ্ধায় মাথা নত করলাম।
প্রিয় লেখকেরা বোধহয় এভাবেই নিজের অজান্তে স্বজন হয়ে উঠেন সকলের!
হুমায়ূন আহমেদ আমরা কখনও আপনাকে ভূলবনা, এত তাড়াতাড়ি না গেলেও তো পারতেন
আপনার এক একটা বই পড়তাম আর সেই বইয়ের- ঘোর কাটাতে আমার অনেকদিন লাগতো।
বস্তুত আপনার কাছ থেকে যা পেয়েছি- তা পরিমাপ করার সামর্থ্যও কারো নেই!
এই বাংলায়, এত চমৎকার আর সাবলীলভাবে গল্প বলার আর কেউ রইলো না!
জীবনকে বোঝার জন্য- জীবনকে উপভোগ করার জন্য, হুমায়ুন আহমেদ
একটি প্রতিষ্ঠান-একটি আশ্রয়স্থল। এই দিনে মনটা খুব অস্থির হয়ে থাকে ...
কেমন এক অসহায় এক আকাশ শুন্যতা ভর করে বুকে।
কখনও হতে চাইনি- নজরুল অথবা আইনস্টাইন, হতে চেয়েছি সচেতনভাবে- হিমু।
স্যালুট হুমায়ূন আহমেদ আপনাকে, কোনদিনও আপনাকে ভুলতে পারব না।
আমি কোথায় পাব এই মহাপুরুষকে? পরম করুনাময় আমায় সেথা নিয়ে যাও, যেথা তাকে পাব।
আপনাকে মনে রাখতে হবে পাঠকদের আর এই বাংলার জোছনা, বৃষ্টি এবং কদম ফুল।
হে কীর্তিমান! তোমার কীর্তি গাঁথা বেঁচে থাকবে... থাকবেই।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুলাই, ২০১৭ সকাল ৯:৪৫