somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উপলব্ধিঃ (সামাজিক সচেতনতা)

০৯ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


পৃথিবীর মানুষগুলো খুবই অদ্ভুদ। তারা খুব সুন্দর করে অন্যের সীমাবদ্ধতাগুলোর দিকে আলোকপাত করে, অবলীলায় হাসতে হাসতে। খুব ভালো হতো তারা যদি মানুষের খারাপ দিকগুলোর দিকে আলোকপাত করত, তাতে হয়তো কিছু মানুষ লজ্জা পেয়ে খারাপ কাজ হতে বিরত থাকতে পারত। কিন্তু তারা খুব সহজে মানুষের প্রকৃতি প্রদত্ত সীমাবদ্ধতাগুলো নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করে। বর্তমানে এটা বিনোদনের একটা সুন্দর মাধ্যম হিসেবে অনেকের মাঝে স্থান লাভ করেছে। আমরাও প্রায় প্রতিনিয়ত এই কাজ করে থাকি। হয়তো আমরা কোন প্রকার অভিপ্রায়ের কথা চিন্তা না করেই এই কাজটি করে থাকি শুধু মজা করার জন্য। কিন্তু যাকে উদ্দেশ্য করে এই কাজটি করা হচ্ছে আমরা কি একটি বারের জন্যও ভেবেছি যে, কথাটি সেই মানুষটিকে কতোখানি আলোড়িত করেছে? সেই মানুষটি কথাটি কিভাবে নিয়েছে?
মহান সৃষ্টিকর্তা প্রতিটি মানুষকে নিশ্চয় কোন কারণে তাঁর মনের মতো করে তৈরি করেছেন। তাঁর সকল সৃষ্টিই সুন্দর। হয়তো পৃথিবীর বুকে মানুষের মাঝে বিভাজন তৈরি করা কিছু শব্দ একজন মানুষকে অন্য কোন মানুষের চেয়ে বেশি মর্যাদা দিয়ে থাকে। একজন কালো মানুষ কি জানি এক অজানা কারণে একজন ফর্সা মানুষের পাশে গেলে নিজেকে অনেক ছোট মনে করে। কিংবা একজন বেঁটে মানুষ প্রায়ই কিছু লম্বা-সুন্দর মানুষ দ্বারা হেয় প্রতিপন্ন হয়। আমরা সমাজের বুকে কিছু মানুষ অন্য মানুষদের দৈহিক সীমাবদ্ধতা নিয়ে যে কটাক্ষ করি তা কতটুকু যুক্তি সম্পন্ন তা কি আমরা কোন দিন কল্পনা করেছি? আমার মনে হয় না যে আমরা কোন দিন এই বিষয় নিয়ে চিন্তা করেছি। আমরা কোন দিন সেই অসহায় মানুষের মনের অবস্থা নিয়েও চিন্তা করি নি। কিন্তু আমাদের উচিৎ এই সব বিষয় নিয়ে চিন্তা করা, অন্তত মানবিকতার দিক দিয়ে হলেও।
কোন মানুষ কালো, বেঁটে, লম্বা, ফর্সা, সুন্দর, অসুন্দর, মোটা, চিকন ইত্যাদি হওয়ার জন্য তাঁর নিজের কোন হাত থাকে না। সে একান্ত সৃষ্টিকর্তার হাতে তৈরি হয়ে মায়ের গর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হয়। আর আমাদের সমাজের কিছু মানুষ তাদের বিভিন্ন দলে ভাগ করে দেয়, সেই সাথে আনন্দ উপভোগ করে।
নিজের কৃতকর্মের জন্য লজ্জা পাওয়া যে কোন মানুষের জন্য অবশ্য প্রয়োজনীয়, কিন্তু যে কাজে মানুষের নিজের কোন কিছুই করার থাকে না সেই কাজে যদি কাউকে লজ্জিত হতে হয় তবে তা হবে মানবতার জন্য চরম অপমান। নিজের মানবিক গঠনের জন্য মানুষের নিজের হাত থাকে কিন্তু একজন মানুষ যখন পৃথিবীতে জন্ম গ্রহণ করে নিতান্ত একটি শিশু হিসেবে, তখন সেই অসহায় শিশু জানেই না যে সে দৈহিক ভাবে কেমন হবে। স্বাভাবিক নাকি প্রতিবন্ধী। তার চারপাশ তার সাথে কেমন আচরণ করবে। সে এসেই এই নতুন পৃথিবীতে একলা মনে করে সর্বশক্তি দিয়ে কেঁদে উঠে। তার চারপাশের মানুষ তাকে অভয় দেয়। সে শান্ত হয়ে যায়। কিন্তু সে কি করে জানবে তার শারীরিক সীমাবদ্ধতার কারণে তাকে একদিন গলা ছেড়ে কাঁদতে হবে নিভৃতে?
আমরা প্রতিনিয়ত যে সব মানুষের সাথে তাদের শারীরিক সীমাবদ্ধতা নিয়ে কটাক্ষ করে আনন্দ লাভ করে থাকি সেই সব মানুষের জায়গায় নিজেকে একবারও কি বসিয়ে দেখেছি? আসুন একটি বারের জন্য হলেও সেই সব মানুষের জায়গায় নিজেকে কল্পনা করি। কেউ আমাদের চার পাশে দাঁড়িয়ে আমাদের মটু, কালা, কিংবা অন্য কোন নাম ধরে ডাকছে। কেমন লাগবে আমাদের? কিংবা কেউ হরহামেশাই মজা করে চলছে, তখন কেমন লাগবে আমাদের? আমরা এই সব কথা কোন দিন ভাবি না, আবার ভাবলেও তা সাময়িক সময়ের জন্য। পরক্ষণেই আমরা সেই সব কথা ভুলে যাই।
সুন্দর মানুষের মূল্য আমাদের সমাজে অবশ্যই আছে, তবে তা কখনই অন্য কোন মানুষকে হেয় প্রতিপন্ন করে নয়।
আসুন এই বেঁটে, কালো, মোটা, অসুন্দর মানুষদের একটু ভালোবাসা দেই। তাদের চার পাশের যে সব মানুষ তাদের প্রতিনিয়ত কষ্ট দিয়ে চলেছে সেই কষ্ট কিছুটা হলেও লাঘব করার জন্য। অন্যকে ভালোবাসা কোন অপরাধ নয়, বরং অন্যকে ভালবাসলে নিজের সম্মান বৃদ্ধি পায়। আমাদের হৃদয় নিঃসৃত ভালোবাসায় সিক্ত হোক প্রতিটি মানুষ, ভালোবাসার স্থান হোক প্রতিটি হৃদয়ে।
সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত
(০৯ মে ২০১৬)
জিয়া হল(রুয়েট)
রাজশাহী

সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই মে, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৮
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাষ্ট্রদূত নিয়োগ নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তুঘলকি কান্ড !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:৪৪

৫ই নভেম্বর অন্তবর্তীকালীন সরকারের তিন মাস পূর্ণ হয়েছে। চারিদিকে আলোচনা চলছে এই সরকারের সময়ে কোন মন্ত্রণালয় কেমন পারফরম্যান্স করেছে তা নিয়ে। আলোচনা হচ্ছে অতি গুরুত্বপূর্ণ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিয়ে।পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকানরা ভীষণ কনজারভেটিভ

লিখেছেন মুনতাসির, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ১০:২৬

আমেরিকা নিয়ে মন্তব্য করার যোগ্যতা আমার নেই—এটা প্রথমেই বলে ফেলা ভালো। আমি শুধু আমার অভিজ্ঞতার কথা বলছি। আমেরিকা তথা উত্তর আমেরিকাতে আমার যাওয়া হয়েছে বেশ কিছুবার। সবগুলো ভ্রমণ যোগ করলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ফলাফলে বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তা নেই

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২১

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ফলাফলে বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তা নেই

ট্রাম্প হচ্ছে একজন আপাদমস্তক বিজনেসম্যান। কমলা হ্যা্রিস যেহেতু ইন্ডিয়ান বংশোদ্ভূত তাই ইন্ডিয়ান ভোটার টানার জন্য সে নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে টেনে জাস্ট... ...বাকিটুকু পড়ুন

চট্রগ্রামে যৌথবাহিনীর ওপর ইসকনের এসিড হামলা সাত পুলিশ আহত।

লিখেছেন তানভির জুমার, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:৪৩

এসিড নিক্ষেপে আহত পুলিশ সদস্য



চট্টগ্রামে পুলিশের ওপর ইসকন সমর্থকদের হামলা ও এসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় সাত পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসকন

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৬ ই নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৭


INTERNATIONAL SOCIETY FOR KRISHNA CONSCIOUSNESS যার সংক্ষিপ্ত রূপ হলো ISKCON এর বাংলা অর্থ হল আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ। যে সংঘের ঘোষিত উদ্দেশ্য হল মানুষকে কৃষ্ণভাবনাময় করে তোলার মাধ্যমে পৃথিবীতে প্রকৃত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×