রাষ্ট্রের ইতিহাস ঘেটে দেখা যায় যখন কোন একটি রাষ্ট্র ব্যার্থতার চুড়ান্ত পর্যায়ে চলে গেছে সেখানে গুম, গুপ্ত হত্যার ঘটনা বহু গুন বেড়ে যায়।নাগরীকের নিরাপত্তা বলে কিছু থাকে না, আইন আদালত সব অকেজো হয়ে যায়।গত কয়েক শতকের বিশ্বে বড় বড় বিপ্লবের আগে ফ্রান্স, রাশিয়া, চায়নাতেও তাই হয়েছিল।ইউরোপ, আমেরিকা, আফ্রিকা, এশিয়ার বিভিন্ন দেশে গৃহ যুদ্ধের বা স্বাধীনতা যুদ্ধের আগেও এমন পরিস্তিতি দেখা গেছে, একটি রাষ্ট্র ভেঙ্গ পরার আগে সেখানে গুপ্ত হত্যা বেড়ে গেছে।সপ্রতী আরব বিশ্বের বহু বছরের রাজতন্ত্র ভেঙে পরার আগেও তাই দেখা গেছে।সিরিয়ায় গত এক বছর কি পরিমান গুম হয়েছে তার হিসাব বিশ্বের কারও কাছে নাই।অন্যভাবে বললে, একটা দেশে যখন নাগরীকের উপর রাষ্ট্রের সকল শাসন, শোষন, অন্যায়, অত্যাচার, অনিয়ম, অবিচার, অরাজকতা, লুটপাট, দুর্নীতি, দখল, সন্ত্রাস, খুন, ধর্ষন, রাহাজানি, সিন্ডিকেট, প্রতারনা, চোরাচালান, রাজনীতিক দুর্বিত্তায়ন, স্বজনপ্রীতি, পরিবারতন্ত্র, অনগ্রসরতা, চরমপন্থিতা, কুসংস্কার, বেকারত্ব, দারিদ্র সহ সকল নরকের চরম মাত্রায় উপস্থিত হয় তখ গুম, গুপ্ত হত্যা, প্রকাশ্য জবাই বড়ে যায়।নাগরীক কোথাও নিরাপদ থাকে না, ঘরে বাইরে দেশে এমনকি অন্য দেশেও নিরাপদ না।রাষ্ট্র আর নাগরীকের সম্পর্কের/বন্ধনের মৌলিক উপাদান, ব্যাক্তির জীবনের নিরাপত্তা হীন এহেন রাজ্যকে মঘেরমুলুকও বলা যায়।সেখানে মানুষের আচরনে শ্বাপদ পশুও লজ্বা পায়।সে নগর জঙ্গলে পরিনত হয়। চলুন বাংলাদেশটি ভেঙ্গে পরার আগের কয়েকটি বছরের ঘটে যাওয়া কিছু গুম, গুপ্ত হত্যার শিরোনাম, পরিনাম, মানুষের জীবনের দাম, এবং এসবের নায়কের/ভিলেনের নামের নিউজ ফ্লাসব্যাকে দেখে নেই।
*তারা জানান, যত্রতত্র লাশ পড়ে থাকে। এগুলো মাটিচাপা দেয়া হয়। অনেক সময় টোকাইরা পশুর হাড় মনে করে বিক্রির জন্য মানুষের হাড় কুড়িয়ে নিয়ে যায়।
*মাঝে-মধ্যেই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তরুণ-যুবকদের ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।এদের কারও লাশ পাওয়া যাচ্ছে, কেউ বা নিখোঁজই থেকে যাচ্ছে।
*তিনজনেরই হাত-পা গামছা দিয়ে বাঁধা ছিল। তিনজনকেই গুলি করে হত্যা করা হয়।
*ভাইয়ের লাশ পাওয়ায় তাঁরা সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞ।
*গাজীপুরের দক্ষিণ শালনা এলাকায় গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় লাশ উদ্ধার করা হয়।
*লাশ পাওয়া যাচ্ছে নদী, খাল, ডোবায়। মুন্সীগঞ্জের ধলেশ্বরী নদী থেকে গত মঙ্গলবার তিন জনের পচা লাশ পাওয়া যায়।
*ওয়ালিউল্লাহর পরিবার এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে যে, তাদের ছেলেদের আইনশৃক্মখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অপহরণ করেছে। কিন্তু' র্যাব বাংলাদেশের পত্রিকায় বিবৃতি দিয়ে এই দুইজনকে আটকের অভিযোগ অস্বীকার করে।
*রাজনৈতিক কারণে বেশির ভাগ গুমের ঘটনা ঘটে।আন্তর্জাতিক ইন্টেলিজেন্স সংস্থাগুলোও এতে জড়িত।
*বাসটির কাছে ছোট একটি গাড়ি এসে থামে এবং সেটি থেকে ইউনিফর্ম পরিহিত সাত-আট ব্যক্তি নেমে আসেন। তারা নিজেদের আইনপ্রয়োগকারী বিশেষ বাহিনী র্যাব ও ডিবির সদস্য বলে পরিচয় দেন।
*আগে ড্রেস পরে নিয়ে গেছে, বিচারবহির্ভূত কিলিং হয়েছে, ক্রস ফায়ার হয়েছে।এখন অন্য ধরনের কিলিং হচ্ছে। তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় বিএনপির যশোর জেলার একজন নেতাসহ মোট চারজনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে।
*ওই স্থানের মাটি তোলার পর ওই যুবকের হাড়, জিন্সের প্যান্ট ও গেঞ্জি বেরিয়ে আসে।
*শামীমের স্ত্রী ঝর্ণা খানম বলেন, ‘আমরা তো অনেক দৌড়ালাম।শামীম বেঁচে আছে না মরে গেছে, এখন আমরা শুধু সেই তথ্যটা জানতে চাই।কিন্তু আমাদের মামলার কোনো গুরুত্বই নেই।
*১২ জুলাই সজলের লাশ পাওয়া যায় ঢাকা বাইপাস সড়কের পাশে সমর সিংহ গ্রামে।
*বিরুলিয়ার বাসিন্দারা জানান, এর আগেও সেখানে এক যুবকের লাশ সিমেন্টের বস্তার সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় পাওয়া গেছে। অজ্ঞাত ওই লাশের হাত পেছনে বাঁধা ছিল।
*মোহাম্মদপুর থানার কাছে সাদা পোশাকধারী লোকেরা তার গাড়ির গতিরোধ করেন।বন্দী করে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় অজ্ঞাত স্থানে।গাড়ির ভেতরের ‘বন্দিদশা' থেকে নাজমুল এক সহকর্মীকে শুধুই বলতে পারেন, ‘ভাই, আমাকে তো ধরে নিয়ে যাচ্ছে।' আর কোনো কথা বলতে পারেননি।উদ্ধারের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে তার স্ত্রী ও অন্যরা থানা-পুলিশ র্যাবের কাছে যান।অসহায় পরিবারটির বুক ফাটা কান্নায় মন গলেনি তাদের।রাত না পোহালে কিছুই করার নেই বলে সাফ জানিয়ে দেয় তারা। রাত পোহানোর পর নাজমুলের মৃতদেহ মেলে গাজীপুর চৌরাস্তার অদূরে।
*বেশ কিছুক্ষণ তল্লাশির পর পাওয়া গেলো একটি নতুন মাটি খোঁড়া গর্তের ঠিকানা। গর্ত খুঁড়তেই বেরিয়ে এলো প্রায় অর্ধগলিত বিকৃত এক তরুণের মৃতদেহ।
*আইনি জটিলতার আশঙ্কায় এসব লাশ দেখেও পুলিশকে খবর দেয় না স্থানীয় বাসিন্দারা।কোনো কোনো ক্ষেত্রে পুলিশকে জানিয়ে কোনো লাভ না হওয়ায় স্থানীয়রা লাশ মাটিতে পুঁতে রেখেছে।
*রাতে হাওয়া হয়ে যাচ্ছে মানুষ।একবার কেউ নিখোঁজ হলে তাকে আর পাওয়া যাচ্ছে না।
*পরদিন ১৩ জুলাই ইমরানের গুলিবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায় ঢাকা-মাওয়া সড়কের পাশে কেরানীগঞ্জের ইকুরিয়ার একটি ইটভাটায়।
*রিপোর্টে দেখা যায়, বেড়িবাঁধের একটি ব্রিজের নিচে অনেক দিন ধরে ভেসে আছে অজ্ঞাত পরিচয় একটি লাশ। স্থানীয়রা বাঁশ দিয়ে কচুরিপনা সরিয়ে লাশ দেখান। অনেক দিন পানিতে ভাসতে থাকায় লাশে পচন ধরেছে।
*র্যাবের পোশাকে, পুলিশের পোশাকে কিংবা সাদা পোশাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে।পরিবারের পক্ষ থেকে ওই সব সংস্থার সাথে যোগাযোগ করলে বলা হচ্ছে তারা এমন কাউকে ধরেনি কিংবা এ ধরনের ঘটনা সম্পর্কে তারা জানে না। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে এসব ঘটনায়।
*সাধারণভাবে মানুষের ধারণা, সরকারের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এই হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটাচ্ছে। এই ধারণা থেকে মানুষ অসহায়বোধ করতে শুরু করেছে। কারণ, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস হলে তো সাধারণ মানুষের যাওয়ার কোনো জায়গা থাকে না।’
*বিচারবহির্ভূত হত্যা বা গুমের অনেক ঘটনার জন্য দায়ী করা হয় অভিজাত বাহিনী র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বা র্যাবকে।এ পর্যন্ত প্রায় এক হাজার ৬০০ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা নথিবদ্ধ করেছে মানবাধিকার সংস্থাগুলো।সংস্থাগুলোর মতে, নিখোঁজ হয়ে যাওয়া, তথাকথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মৃত্যু এবং নিরাপত্তা হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা আছে এর মধ্যে। অনেক ক্ষেত্রে কাউকে গুলি করে হত্যার পর বন্দুকযুদ্ধের গল্প ফাঁদা হচ্ছে।
*মুন্সীগঞ্জের ধলেশ্বরী নদী থেকে তিনটি লাশ উদ্ধার করা হয়, যাদের গুলি চালিয়ে হত্যার পর লাশ বস্তায় ভরে নদীতে ডুবিয়ে দেয়া হয়। কয়েকদিন আগেও ধলেশ্বরী নদী থেকে আরও তিনটি লাশ উদ্ধার হয়েছিল।
*রাজধানীর উপকণ্ঠ সাভারের যত্রতত্র অজ্ঞাত লাশের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে। দুই কিলোমিটার এলাকায় গত কয়েক মাসে অন্তত ৮টি লাশ পড়ে থাকতে দেখা গেছে।আশুলিয়া, বিরুলিয়াসহ বিভিন্ন এলাকার ধান ক্ষেত, ব্রিজের নিচসহ বিভিন্নস্থানে লাশ পাওয়া গেছে।
*দিলুকে হত্যার পর লাশ গুম করে ফেলার অভিযোগে মালয়েশিয়ার পেনাং থানায় একটি মামলা করেন দিলুর ভাগ্নে শিপন খান।
*আইনি জটিলতার আশঙ্কায় এসব লাশ দেখেও পুলিশকে খবর দেয় না স্থানীয় বাসিন্দারা।কোনো কোনো ক্ষেত্রে পুলিশকে জানিয়ে কোনো লাভ না হওয়ায় স্থানীয়রা লাশ মাটিতে পুঁতে রেখেছে।
*পঞ্চবটি এলাকায় প্যান্ট ও গেঞ্জি পরিহিত এক যুববকে মাটিচাপা দেন কৃষক দ্বীন ইসলাম। তিনি জানান, ওই লাশ কেউ না নেয়ায় তিনি কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ করে মাটিচাপা দিয়েছেন।
*পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী সারাদেশে গত দেড় মাসে খুনের ঘটনা ঘটেছে ৪৬৫টি। এর মধ্যে ৩৩৬টি খুনের ঘটনা ঘটেছে জানুয়ারি মাসে। ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম ১৩ দিনে খুন হয়েছে ১২৯টি, ধর্ষণ ৪২টি। এর মধ্যে আইনশৃক্মখলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে খুন হয়েছে ১০ জন।গড়ে প্রতিদিন প্রায় ১০ জন করে খুন হচ্ছে।
*কয়েকজন সাংবাদিক নেতাকে কয়েটা প্লটের লোভ দেখিয়ে সাগর রুনীর মামলা ডিপ ফ্রিজে পাঠিয়ে দেওয়ার প্রজেক্ট উন্মুক্ত করেছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী।যমন ডিপ ফ্রিজে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে লোকমান হত্যা মামলা।সেদিন দেখলাম নিহত মেয়র লোকমানের ভাই কামরুল ধৃত আসামীর ১৬৪ এর কপির জন্য দারে দারে ঘুরছে।
*সংসদ ভবন চত্বরে এমপি হোস্টেলের তিনতলায় কয়েক দিন ধরেই লাশটা পড়ে ছিল। যখন উৎকট গন্ধ বের হতে থাকল, তখনই বিষয়টি ধরা পড়ল।গতকাল রোববার বিকেলে এমপি হোস্টেলের ৬ নম্বর ব্লক থেকে অজ্ঞাতনামা এক নারীর হাত বাঁধা অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
অপমৃত্যু, গুম, হত্যা, ক্রসফায়ার, দুর্ঘটনায় দশ পনের জনের মৃত্যুর খবর আজ প্রতিদিনের ব্যাপার।অজ পাড়া গা থেকে শুরু করে রাজধানীর সুরক্ষিত বাসা থেকে আইনশৃংখলা বাহিনীর পরিচয় দিয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে বেমালুম অস্বীকার করা হচ্ছে।কি ভিষন ভয়ংকর ব্যাপার।নাগরীকের নিরাপত্তার এরকম ভয়াবহ অবস্থা কোন গৃহযুদ্ধরত রাষ্ট্রেও গ্রহন যোগ্য না।এই পরিস্থিতিতেও সামান্য চিন্তিত না হয়েও নির্লজ্বের মত ইলিয়াস আলী আর চৌধুরী আলমের মত গুমের স্রোষ্টারা গুম হলে আমরা হরতাল দেই, খুন করি, সব আগুন জ্বালীয়ে দিতে ইচ্ছে করে, ক্ষমতার পরিবর্তন করার লক্ষ্যে ঝাপিয়ে পরি যেন এক ডাইনি গিয়ে আরেক ডাইনি আসলেই দেশটা বেহেস্ত হয়ে যাবে, এ বেহেস্তের জন্য জিহাদ, যদিও আরও নরকই হবে, তা টাইম টেস্টেড।আরআজম, আনসার, নাজমুল, করিম, শামীম, ইসমাইল, মাসুম, জসীমউদ্দীন, কালাম, বাশার, রহিম, ইস্রাফিল, সারোয়ার, আকতার, নূর মোহাম্মদ, আবদুল মান্নান, ইকবাল, জুয়েল, রাজীব, মিজানুর, সজল, ইমরান, মুকাদ্দাস, ওয়ালিউল্লাহ, সোহাগ, রফিকুল সহ আরও নাম না জানা অসংখ্য গুমের প্রেতাত্মারা নিরবে, নিশব্দে এই নিষ্ঠুর পশুর সমাজকে অভিশাপ দিয়ে যাবে।
অথচ দেখুন আমাদের দেশের প্রচলিত আইনেই ছিল, কোন আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী সাদা পোশাক কাউকে আটক করতে পারবে না।এমন কি সাদা পোশাকের কোন গোয়েন্দা সংস্থাও কাউকে আটক করার সময় সাথে পোশাকধারী বাহিনী রাখতে হবে এবং নিজেদের পরিচয়পত্র দেখাতে হবে।কোথায় নেয়া হবে তা গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তি ও তার আত্মীয়দের জানাতে হবে এবং আটকের ২৪ ঘন্টার মধ্যে নিকটস্থ আদালতে হাজির করতে হবে।এটা সভ্য দেশের প্রাথমিক পূর্শবর্ত, আজ থেকে ২০০ বছর আগে বৃটিশ আমলেই আইনটি করা হয়েছিল, যার উন্নত মোডিফিকেশন দূরে থাক কিভাবে সভ্য রাষ্ট্রের আইনকে বরবরের আইন করা যায় সে চেষ্টাই করেছি।দূঃখের বিষয় মানবতার মিনিমাম আইনগুলোও আমাদের কোন বাহিনী জানে না।সাধারন মানুষ তো প্রশ্নই ওঠেনা, কারন গত ৪১ বছর ধরে তাদের রাখা হয়েছে বিশ্বের সর্বোচ্চ অবরুদ্ধ, অন্ধকার, মূর্খ করে। গণতন্ত্রের নামে ইজারাতান্ত্রের ইজারাদারেরা জনগণকে সবসময় তথ্য, জ্ঞান, শিক্ষা থেকে বিচ্ছিন্ন রাখে পুরো রাষ্ট্রটিই একটি অন্ধকার রাষ্ট্র বানিয়ে রেখেছে।
যারা বলেন, দেশ স্বাধীন হয়েছে, তাদের বলবো একটা জায়গা দেখান, উন্নয়নের বেসিক উপাদান নিরাপত্তা, বিদ্যুৎ, কমিউনিকেশ, ব্যাংকিং থেকে শুরু করে কৃষি, কুটির শিল্প পর্যন্ত, প্রাথমিক শিক্ষা থেকে স্বাস্থ, পরিবেশ, আইন শৃংখলা পর্যন্ত।কোথাও এক ফোটা উন্নয়ন, পরিকল্পনা দেখাতে পারবেন।আসলে ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ বিকাল থেকে এড হকে রাষ্ট্রটি পরিচালিত হচ্ছে।গভীর ভাবে দেখলে হাজার বছরের পরাধীন বাঙালী লক্ষ বুকের রক্তে কেনা স্বাধীনতার অব্যহতি পরেই দেশটাকে আরও বেশি পরাধীন করেছে, সেই পরাধীনতার শুরু দেশের নাম থেকেই - দেশের নামটি পর্যন্ত ঠিক হয়নি, পরাধীনতার সুপ্তবীজ এর নামেই।গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ- আমরা প্রজাতন্ত্র শব্দটির সাথে একমত না, এতে কেমন রাজা, প্রজা, রাজপুত্রের গন্ধ আছে, লক্ষ লক্ষ কিশোরের বুকের রক্ত, তরুনীর সম্ভ্রমের, হাজার হাজার যুদ্ধ শিশুর বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশের জন্ম রাজা, প্রজার শাসন ব্যবস্থার জন্য হয়নি, বরং বিষয়টি হতে পারতো উন্মুক্ত গণতান্ত্রীক ব্যবস্থা।আরে তখন যে সংবিধান করা হয়েছিল তা পরাধীনতার চুক্তিপত্র, বিশ্বের নিৎকৃষ্ট সংবিধান।’৭২-এর সংবিধান সঠিকভাবে প্রণীতই হয়নি।যারা এই সংবিধান প্রণয়ন করেছিলেন তাদের তা করার বৈধ কর্তৃত্বই ছিল না, তারা ছিল পাকিস্তানের নির্বাচিত সদস্য, ৭০ সালে নির্বাচনটা হয়েছিলো মূলত পাকিস্তানের সংবিধান তৈরির জন্য। তখন গণপরিষদ গঠন করে সংবিধান প্রণয়ন করা উচিত ছিল। তাই স্বাধীনতা মানে দেশ আসলে সাধারন শয়তানের শাসন থেকে ঈবলিশের শাসনে এসেছে।বলতে পারেন, উপমহাদেশে বাংলাদেশ নামক ভূক্ষন্ডটির জনগণ প্রকৃত পক্ষে আজও স্বাধীন হয়নি এক সময় বিদেশী শোষকরা শাসন করেছে ২০০ বছর, পরবর্তীতে তাদের বীর্জে উৎপন্ন শয়তান শাসন করেছে এ অঞ্চলের, এক সাগর রক্ত দিয়ে জনগণ যখন দেশি শাসকের হাতে তা তুলেদিল প্রীয় মাতৃভূমীতে শুরু হলো ঈবলিশের শাসন।তাই ব্রিটিশ আমাল যদি বিদেশি "শোষকের শাসন" হয় তবে পাকিস্তানী শাসন ছিল "শয়তানের শাসন" আর গত ৪১ বছর ধরে চলছে "ঈবলিশের শাসন" - বিষয়টি পিথাগোরাসের উপপাদ্য, ত্রিভূজের দুই বাহুর যোগফল তৃতীয় বাহু অপেক্ষা বৃহত্তর দ্যের মত স্বতসিদ্ধ সত্য, যারা দ্বিমত করবে বুঝবেন সে ঈবলিশেরই একজন।
আমার বয়স আর বাংলাদেশের বয়স সমান।১৯৭০ সালে ডিসেম্বরে এদেশের এক সাধারন নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারে আমার জন্ম।জন্মের চার মাসের মধ্যে একদিন দেখি আমার মা এক হাতে আমার তিন বছরের বড় বোন আর কোলে আমাকে নিয়ে রাতের অন্ধকারে খেত, জঙ্গল, নদীনালা পেরিয়ে ছোট খাটো বিভিন্ন দলের সাথে ছুটছে আর ছুটছে। কখনও এই গ্রাম ঐ গ্রাম, নদীর এই পাড় ঐ পাড় ঝর বৃষ্টি, রোদ, খরা, শীত বেঁচে থাকার জন্য অন্তহীন যাত্রা। মা এরই মধ্যে শুনেছে পাঞ্জাবীরা নাকি আমার মত পুলাপান পাইলে আকাশে ছুড়ে টার্গেট প্রাকটিস করে।যুদ্ধের শুরুতেই বাবা আমাদের দূরে দুর্গম এক গ্রামে রেখে মুক্তি যুদ্ধে চলে যায়।দেশ স্বাধীন হয় লক্ষ লক্ষ তরুনের বুকের রক্তে, তরুনীর সম্ভমে -বুকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন।
আশির দশক থেকে মুটামুটি বুঝি।তখন থেকে আমাদের দেশ সমাজ রাজনীতি রাষ্ট্র সম্পর্কে সরাসরি নিজের অভিজ্ঞাতাতেই আছে।এবং আমি এক শতে এক শত পার্সেন্ট গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি সমাজের ও সরকারের প্রতিটি স্তরের সবচেয়ে খারাপ, দুষ্ট মানুষটি আমাদের দেশে রাজনীতিতে যোগ দেয়।সে ছাত্র হলে সবচেয়ে উশৃংখল, নীতিহীন, বদমাইশ ছাত্র নামের কলংকটি যাচ্ছে ছাত্র রাজনীতিতে।সে শ্রমীক দল হলে সবচেয়ে অকর্মন্য, মাত্তাব্বর, সন্ত্রাসী শ্রমিকটি নেতা।ডাক্তার হলে অংঙ্গ প্রতংঙ্গের ব্যবসায়ী সবচেয়ে বড় ধান্দাবাজ ডাক্তারটি চিকিৎসক ফোরামের নেতা।উকিল হলে সবচেয়ে ফাউল ও শয়তান লোকটা বারে নিজের গ্রুপ লিড দেয়।কৃষক হলে কৃষি কাজ বর্গা দিয়ে ধন্দার পিছনে ছোটাটা।তেমনি ভাবে জানা অজানা যত উইং আছে তার প্রতিটিতে স্বগোত্রের সবচেয়ে অদক্ষটিই রাজনীতিবিদ।এটা আমি আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে প্রত্যায়ন করলাম।সেই শৈশব থেকে দেশের উত্তর থেকে দক্ষিন, পূর্ব থেকে পশ্চিম, টপ টু বটম মানুষ, সমাজ, রাষ্ট্র, দারিদ্র, অর্থনীতি রাজনীতি, সিস্টেম, সরকার এই মাথা থেকে ঐ মাথা দেখার সুজোগ হয়েছে।সব দেখে দেশের সিংহ ভাগ সাধারন খেটেখাওয়া, চাষা-ভূসা, দরিদ্র জনগোষ্ঠি বাদ দিলে যে অল্প সংখ্যক ক্ষমতাশীল, সমাজপতি, শিক্ষিত, জনগণের ভাগ্য নিয়ন্ত্রক পাওয়া যায় তারা এক একজন সাক্ষ্যাত শয়তান।
যেখানে ১৯৬৫ সালে এশিয়ার দরিদ্রতম দেশ দক্ষিন কোরিয়া যার মাথাপিছু আয় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের চেয়েও কম ছিল, সে দেশটি আজ অনেক কিছুতে বিশ্বের এক নম্বর।দেশ দুটির অনেক বিষয় আবার একই রকম, যেমনে পঞ্চাশের দশকে ঐ দেশটিতেও বাংলাদেশের মত ২.৫ মিলিয়ন মানুষ গণহত্যায় শহীদ হয়েছিল, দক্ষিন কোরিয়া স্বাধীনতার বয়স প্রকৃতপক্ষে আমাদের চেয়ে দশ বছর বেশি, এই একই সময়ের মধ্যে দেশটি কোথায় পৌছে গেছে!আমরা সত্তুর ও আশির দশক যুদ্ধ বিদ্ধস্ত বললে বাদ দিলেও গত বাইশ বছর ধরে কি করেছি? নব্বুইয়ে গণ আন্দোলনে তিনজোটের যেই রুপকল্প সামনে রেখে গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধার করে খালেদা আর হাসিনার হাতে তুলেদিয়ছিল এই তাদের সেই গণতন্ত্র।গত বাইশ বছরে দেশের প্রতিটি অংঙ্গে পঁচন ধরিয়ে দিয়েছে।রাষ্ট্র, সরকার, রাজনীতি, গ্রাম শহর রাজধানী সমাজ পরিবার ঘর এমন কোন স্থান নেই যেখানে এই দুই নারীর রাজনীতি পৌছায় নাই।পুরো দেশটাকে আজ সর্বাঙ্গ কুষ্ঠরুগী বললেও কম বলা হয়ে যাবে।এর ইতিহাস লিখতে আগামী প্রজন্মের অনেক বছর লাগবে।আমরা কেবল কিছু তথ্য রেখে যাব।
কেউ দেশটার জন্য কিছু করলো না, সবাই গণিমতের মাল হিসাবে দেশটাকে ভাগভাগ করে নেয়ার নিরন্তন প্রতিযোগিতায় লিপ্ত।রাজনীতিবিদ, সামরিক বাহীনী, আমলা কেউ দেশটাকে দেশ ভাবলো না।যেখানে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের নাগরীকে প্রকৃত বন্ধু ও দেশ মাতৃকার অতন্দ্র প্রহরী হওয়ার কথাছিল সিভিল ও মিলিটারি বুরোক্রেটদের।তাদের হওয়ার কথাছিল প্রফেশনাল প্যাট্রিয়ট কেননা তারা নাগরীকের টাকায় পেইড দেশপ্রেমিক।তারা ঠিক থাকলে সৃষ্টিকর্তা ছারা আর কেউ জনগণের তথা সমষ্টির তথা দেশের সামান্যতম ক্ষতি কারও করতে পারার কথা না।কিন্তু হয়নি কারন ডিভাইড এ্যান্ডরুল।এদের পদে পদে ব্যাক্তিতে ব্যক্তিতে গোষ্ঠিতে গোষ্ঠিতে সামরিকে বেসামরিকে ক্যাডারে ক্যাডারে অসংখ্য বহুভূজে জটিল জটিল সব ডিভাইড এ্যান্ড রুল।
অথচ বাংলাদেশের মানুষের একটা ভালো গুন ছিল, এরা আলোতে ভালো বিহেইভ করে।যেমন আলোকিত প্রবাসে এই দেশেরই নষ্টতম মানুষটিও খুবই ভদ্র আচরন করে।যেখানে দেশে তারমত হিংস্র দুর্লভ।কারন দেশটি একটি সম্পূর্ন অন্ধকার দেশ।এখানে কোথাও কোন আলো নেই।পাশের মানুষটিকেও দেখা সম্ভব না।এই অন্ধকারে, তাই আপনি যদি কাওকে জিজ্ঞেস করেন, ভাই কি করেন, সে উত্তর দিবে নামাজ পরছি, যে আসলে চুরি করছে, আবার যে জিজ্ঞেস সেও মুখ বেঁধে কোন শিশুকে ধর্ষন করছে।
তরুনেরা তোমরা দেশটাকে বদলে ফেলতে চাও, আর কিছু করতে হবেনা, শুধু "সব জানিয়ে দাও সবাইকে", যখন একটা দেশের ১০০% নাগরিক ১০০% জেনে যাবে তখন একটা দেশ ১০০% সফল, সমাজ/নিরাপত্তা/অর্থনীতি/রাষ্ট্র/বিচার/গণতন্ত্র/মানবাধিকার/উন্নয়ন সকল ক্ষেত্রে প্লেটোর আটপিয়ান রাষ্ট্র হয়ে যাবে।একটা ওপেন বাংলাদেশ সৃষ্টি কর।
ইন্সপাইয়ার্ড বাই Open Bangladesh ।
Story of Freedom #
#1,2,4,5,6,7,8,9
what ever you say,
3 is a the most Beautiful number,
3 is Democracy,
3 is Equity,
3 is Justice,
3 is Freedom, like USA stands on #3 - PS2 President, Supreme Court, Senate,
3 is People's State,
3 is OPEN,
3 is Man's Quest,
3 is all mighty God- in man, material and in universe,
truly 3 is so nice a number
Love 3,
Love your 3rd Generation,
Depend on 3 - Probasi, Millitary, Civil,
Give 3 Ultimate power to people -Power, Network/Communication, Banking,
Build it with 3p's -Public, People, Partnership...
খসড়া পোষ্ট
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে এপ্রিল, ২০১২ দুপুর ১:৪৪