হেফাজতের রাজনীতি আমার রাজনীতি আর আইডিওলজির জন্য কতোটা হুমকি দেখতে পাচ্ছেনতো? রাস্তায় সাংবাদিক ধরে মুসলিম-অমুসলিম যাচাই-বাছাই হচ্ছে চার কালিমা জিজ্ঞাসা করে। দেশে যেনো আবার পাক-মিলিটারি বাঙালিদের ধরে ধরে অমুসলিম ধরছে। কেনো, রাষ্ট্র কি অমুসলিমদের নয়? হিন্দুদের না? বুদ্ধদের না? সেকুলার, নাস্তিক, আদিবাসীদের না? ওরা রাষ্ট্রের নাগরিক না? আসলে এঘটনার শুরু গতপরশু থেকে হয়নি। ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৩ মনে আছে? মনে আছে সাংবাদিক নাদিয়া শারমিনের কথা? রাস্তায় ফেলে যাকে বেধরক মেরেছিলো হেফাজত কর্মীরা? সাংবাদিকদের উপরে হেফাজতের আক্রমণ গতপরশু থেকে হচ্ছে না। (লীগ অবশ্য রোজই করে দেখা যায়।) মনে আছে সেদিন রাতে বাইতুল মোকারমে রক্তাক্ত শিশুর শরীর? সেদিন আর আজকের দিনের মধ্যে হেফাজতের স্ট্র্যাটেজির কোনো পার্থক্য খুজে পেয়েছেন? আমি পাই না। সেদিনও অবুঝ বাচ্চাগুলোকে মাদ্রাসা থেকে ধরে ধরে নিয়ে আসা হয়েছিলো। যারা ডান-বাম, উত্তর-দক্ষিণ, পূর্ব-পশ্চিম, জাতীয়-আন্তর্জাতিক রাজনীতির কিছুই জানে না। মাঠ পর্যায়ে থাকা এই বাচ্চাগুলো জাস্ট ম্যানিপিউলেটেড হচ্ছে। গতোকাল দেখলাম রাস্তায় বসে মাদ্রাসার বাচ্চাগুলোকে কোরান পড়াচ্ছে। এক মাদ্রাসা শিক্ষক একদল বাচ্চার হাতে লাঠিসোঁটা তুলে দিয়ে কমান্ডো স্টাইলে মন্দিরে হামলা করছে। মিছিলে মরছে এই বাচ্চাগুলো, মাইর খাচ্ছে এই বাচ্চাগুলো। এর কারণ আসলে একটা ব্রেইন গেম। এই মাটির বাঙালিরা ৯০℅ মুসলিমের ১০০% চেতনায় মুসলিম। দে ডোন্ট বিলিভ রিলিজিয়ন ইন একশন। তাই ঘুষ-দূর্নীতি-ধর্ষণের বেলায় তারা চুপ থাকলেও ম্যাক্রোনের নবী মোহাম্মদ নিয়ে বক্তব্যে খুনাখুনি করে। সেখানে তার জাত ভাই মাদ্রাসার ছাত্র মরার পরে কী করতে পারে? এখানেই সফল মামুল সাহেবেরা। তারা তৌহিদি গর্দভগুলার ব্রেইনগেইম খেলে উস্কে দিতে পারে। পেরেছে। খুনটাও মূলত এক্সপেক্টেড ওর প্রিপ্ল্যান্ড। এখন তারা সিম্পেথি গেইন করবে এই বলে যে এই পুলিশ, আর্মি বাচ্চাদেরও ছাড়ে নাই। সুতরাং মাঠে নামো।
অন্যদিকে রাষ্ট্রের কাছে, রুলিং পার্টির কাছেও এই ঘটনা এক্সপেক্টেড ওর প্রিপ্ল্যান্ড। তারা আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় দেখাবে যে আমরা চলে গেলে যেই শক্তি আসতে চাচ্ছে, তারা মূলত উগ্র সাম্প্রদায়িক। সুতরাং আপনারা আমাদের সাপোর্ট করুন।
এখন একদলের মূর্খ প্রোপ্যাগান্ডা এই যে বামরা-হেফাজতিরা ভাই ভাই। তারা একযোগে কাজ করছে। আচ্ছা, একটা প্রশ্ন, বামদের মোদি বিরোধী কর্মসূচীর দাবীগুলো দেখেছেন? তারা সাম্প্রদায়িক মোদির পলিটিক্যাল এজেন্ডা নিয়ে আগমন এবং মতুয়াদের মন্দিরে যাওয়ার ড্রামাটিক আলাপটা বিরোধিতা করেছে। মূলত এক ঢিলে দুই পাখি মারা। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে মোদি ব্যবহার করছে পশ্চিবঙ্গে বিজেপিকে প্রতিষ্টা করতে। যেই মোদি গুজরাটে সংখ্যালঘু দলিত, মুসলিম ও অন্যান্যদের উপরে গণহত্যা চালিয়েছে, NRC আর CAA এর নামে হিন্দুত্ববাদী আগ্রাসন চালাচ্ছে, শিবসেনা আর আরএসএস- এর গডফাদার, যার কারণে ভারতের কৃষকেরা কৃষক মারা নতুন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে মার খাচ্ছে, তার বিরুদ্ধে বামেরা বলছে। যা হেফাজতের দাবীর পুরোই উলটো।
সুতরাং হাল ফেরান, লাল ফেরান। সেখানেই মুক্তি।
ফুক্কা কুল্লে নিজামিন।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মার্চ, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৩৯