somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ঈদের আনন্দ নিয়ে বাপ-ছেলের পাল্লাপাল্লি !!!

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ সকাল ১০:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাবাঃ জানো! ছোট বেলায় ঈদের দিন আমরা অনেক মজা করতাম! রোজা শুরু হতেই দিন গোনা শুরু করতাম ঈদের আর ক’দিন বাকি, উত্তেজনায় তো আগের দিন রাতে ঘুমই হতো না! সুর্য উঠার আগেই ঘুম থেকে উঠতাম, তারপরও দেখতাম মা আরো সকালে উঠে ঘর-উঠান ঝাড়ু দিয়ে সেমাই রান্না শুরু করে দিয়েছে।

ছেলেঃ আমার কাছেও ঈদের দিনটা অনেক আনন্দের। আমিও খুশিতে রাতে ঘুমুতে পারি না, কিন্তু সকাল বেলা উঠেতো দেখি তোমরা ঘুমাচ্ছো!

বাবাঃ হু! আমরা আপন-চাচতো মিলে প্রায় ১০/১২ জন এক সাথে দল বেঁধে চিত্রা নদীতে গোছল করতে যেতাম। যদিও নদীটা কাঁদা আর কচুরীপানায় ভর্তি ছিল, তারপরও সেখানে দল বেধে ঝাপাঝাপি করতে কি যে ভাল লাগত!

ছেলেঃ ছি! তোমাদের গায়ে ময়লা লেগে যেত না? আমিতো বাথরুমে বাথটাবের পরিষ্কার পানিতে গোছল করি।

বাবাঃ ঈদের দিন নতুন বাসনা (সুগন্ধি) সাবান দিয়ে গোছল করা ছিল আরেক মজার জিনিষ! কার সাবানে কার শরীর বেশী সুগন্ধি করেছে তার প্রতিযোগীতা হত।

ছেলেঃ হি হি! তোমরা কি শুধু ঈদের দিন সাবান দিয়ে গোছল করতে! অন্য দিন ---? আমি তো প্রতিদিনই সাবান-শ্যাম্পু দিয়ে গোছল করি। ঈদের দিন আবার নতুন করে সাবান বের করতে হবে কেন, আমাদের বাথরুমে তো সবসময়ই সাবান থাকে।

বাবাঃ এরপর বাড়ি এসে ঈদের নতুন জামা পরতাম! সব ঈদে সব কিছু নতুন হতো না, জামা বা প্যান্ট একটা নতুন হলেইতো হলো! অবশ্য পূরাণটা মা ভাল করে পরিষ্কার করে দিতেন আর আব্বা বাজার থেকে তা স্ত্রী করে আনতেন।

ছেলেঃ কি বলো! তোমরা ঈদের দিন পুরাণ কাপড় পরতে! আমিতো প্রতি ঈদে ৮/১০ সেট করে ড্রেস পাই, এক ঘন্টা পরপর চেঞ্জ করেও শেষ করতে পারিনা। অবশ্য এবার মাত্র ৫ সেট ড্রেস হয়েছে। দেশ থেকে আমার জন্য অনেকেই ড্রেস পাঠিয়েছে কিন্তু ডাকে আসতে দেরি হচ্ছে, ওগুলো ঈদের পরে পাব।

বাবাঃ পাড়ার সবাই মিলে একসাথে ঈদের নামাজ পড়তে যেতাম। খোলা মাঠে নামাজ হতো তাই সাথে করে পাটি, জায়নামাজ, ছাতা নিতে হত।

ছেলেঃ আমার অতসব ঝামেলা নেই, আমরাতো এসি মসজিদে ঈদের নামাজ পড়ি।

বাবাঃ নামাজ থেকে ফিরে মা-বাবা, দাদা-দাদী, সব চাচা-চাচী, ফুফা-ফুফুদের সালাম করতে করতে পিঠ ব্যাথা হয়ে যেত, অবশ্য সালামীর লোভও কম ছিল না!

ছেলেঃ আমি অত মানূষ কোথায় পাব! আমার সবাই তো দেশে থাকে, অবশ্য মাকে সালাম করেই যত টাকা পাই তা তোমার সবার কাছ থেকে পাওয়া টাকার চেয়ে অনেকগুন বেশী।

বাবাঃ ঈদের দিন গ্রামের সবাই আমাদের বাসায় গ্রুপে গ্রুপে খেতে আসত। এইদিন প্রতিবেশী গরিব মানুষদেরও অনেক যত্ন করে খাওয়ানো হতো।

ছেলেঃ আমরা এখানে গরীব মানূষ কোথায় পাব, এখানেতো সবাই বড়লোক, বলতে গেলে আমরাই এদেশের গরীব মানুষ।

বাবাঃ সিন্নি সেমাই খেয়ে দে ছুট! যত খুশি মজা করো! কেও কিছু বলতো না। বছরের শুধু এই দু’টা দিনই মার্বেল খেলার পারমিশন ছিল।

ছেলেঃ হু্মম! নামাজ পড়েইতো তুমি চলে যাবে ল্যাব আর মা যাবে রান্না ঘরে, আমি কার সাথে বাইরে যাব? আমি বসে বসে কম্পিউটারে গেম খেলবো, যতক্ষন ইচ্ছা খেলা যাবে, আজ মা কিছু বলবে না। অবশ্য, সামনের রবিবার (বন্ধের দিন) আমাদের এখানে ঈদের অনুষ্ঠান হবে। ঐ দিন সব বাংগালীরা মিলে খুব মজা করব!

আপনাদের কি মত? ছেলেবেলার ঈদের আনন্দ কারটা বেশি?? আমার না আমার ছেলের???
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৯ সকাল ১০:২২
১১টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সরু চিকেন নেক করিডর সমস্যা এবং সমাধান

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২১ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১২:৩৭



সরু চিকেন নেক করিডরের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে নেপাল ও ভুটানের মাধ্যমে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সেভেন সিস্টার্সকে যুক্তের ব্যাপারে ভাবছে ভারত

ভারতের অর্থায়নে পরিচালিত বাংলাদেশের রেল সংযোগ... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাকীত্ব: আত্মার ঘুণপোকা ও আধুনিক সমাজের অদৃশ্য মহামারী

লিখেছেন মি. বিকেল, ২১ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৫



‘একাকীত্ব’ সাধারণ বিষয় নয়। একা থাকা মানে অজস্র চিন্তার স্রোত মাথায় প্রবাহিত হওয়া। একা থাকা মানে নিজের সাথে থাকা। নিজের চিন্তা ও স্মৃতির সাথে একাকীত্ব আমাদের বেশি করে পরিচয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঠকানোটাই ভাল শিখেছি আমরা

লিখেছেন ফেনা, ২১ শে এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১৭



এই বিশাল মহাকর্ষীয় বস্তু সবকিছু নিজের দিকে টেনে নেয়—এমনকি আলোও পালাতে পারে না। কিন্তু কৃষ্ণ গহ্বরের ভিতরে কী ঘটে? সেখানে সময় ও স্থান কেমন আচরণ করে? এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

আরব বিশ্বে নারীরা অপমানিত? আমার অভিজ্ঞতা বলছে ভিন্ন কথা

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ২১ শে এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪৬



বহুদিন ধরে একটি কথা শুনে আসছি—“নারীরা আরব দেশে অসম্মানিত অবস্থায় থাকে।”
কিন্তু আমি আরব দেশে গিয়েছি, থেকেছি, এবং প্রায় দুই মাস ধরে একাধিক জেলায় ঘুরেছি।
সত্যি বলছি—আমি সেখানে কোথাও নারীদের অসম্মানিত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতীয় দাবিদাওয়া নিষ্পত্তি সংস্থা : অরাজকতার পালে নতুন হাওয়া!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১:০৩


বাংলাদেশে আজকাল দাবি না জানালে কেউ আর মানুষ থাকে না—ছাত্র, শিক্ষক, গৃহিণী, পুলিশ, পিয়ন, কবি, কুস্তিগির, সবাই 'অধিকার' চায়। তবে অধিকার মানে এখানে মোটেই দায় বা কর্তব্য নয়, বরং ছিনিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×