ফেবারেটিসম নিয়ে আমি মাথা না ঘামালেও আমার চারপাশের মানুষগুলো এই ব্যাপারটা নিয়ে খুব যন্ত্রনা দিত আমাকে। আমারকে প্রায় সবাই পছন্দ করত আমার ভালো ব্যবহারের জন্য। আমার শত্রুরা সেটা পছন্দ করত না, আর আমার বন্ধুদের জন্য সেটা গর্বের বিষয় ছিল আমার প্রতি। কখন ভাবা হয়নি সবার মধ্যে যে কেন্দ্রীয় অবস্থানটা আমি পেয়েছিলাম তা এক সেকেন্ডে ভেঙ্গে পড়বে।সেদিন ক্যাফেটেরিয়ায় হটাৎ চোখ পড়ল একটা গম্ভীর ছেলের দিকে।কেন যেন এগিয়ে গেলাম।এভাবেই শুরু হয় জেমস আর আমার মধ্যবর্তী সম্পর্ক, যা শেষ হয়েছে দুঃস্বপ্নের শেষে ঘুম ভেঙ্গে জেগে উঠার মত।
জেমস ছিল সিনিয়র, আমি সফমোর। জেমসের অ্যনসেস্টররা ইউরোপীয়ান, কোন দেশের তা ও নিজেও জানেনা। তবে এমন ছিল না যে আমার তা জানতেই হবে, কেননা যে আমার কৌতুহল ও ভালবাসার উৎস, সে আমার সামনেই ছিল।
একটু একটু করে এগিয়ে গেলাম ভালবাসার সাজানো পথধরে। ঠিক সাজানো পথ ছিল কিনা জানিনা, কেননা সেই পথের শেষ আমাকে রক্তাক্ত করার উৎসব নিশ্চই যে ভালবাসে, সে তৈরি করে রাখবে না। একটু একটু করে জেমসের ভালবাসা পেয়েছি বলে মনে হতে হল। একইসাথে আমার বন্ধুদের আসল রুপ দেখতে পেলাম বলে মনে করলাম।
মানুষ যখন ভালবাসে, তখন সে চায় তার ভালবাসার মানুষটার কাছে যতটুকু সময় পারা যায়, ঠিক ততটুকু সময় একসাথে কাটাতে। আমি প্রতিদিন লাঞ্চে ওর পাশে বসতাম। আর জেমস যখন বুঝতে পারল আমার মনে ওর জন্য একটা দুর্বলতা বেড়ে উঠছে, তখনই ও আমাকে বলতে লাগলো আমি কখন কি করবো, কার সাথে কথা বলব, কার সাথে বলবনা, কিভাবে ব্যবহার করব, ইত্যাদি। এক কথায় আমকে ও কন্ট্রোল করতে চাইল, বলা বাহুল্য আমিও ওর কথা মানতে লাগলাম।
জেমস আমার বন্ধুদের পছন্দ করলনা, তাই ওর কথায় ওদের এড়িয়ে চলতে লাগলাম। আমার বন্ধুরা বলতে লাগলো আমি বদলে গেছি, আমি আর ওদের বন্ধু নই আর। কিন্তু জেমসকে কষ্ট না দিতে পেরে বন্ধুদের কাছ থেকে একটু একটু করে দুরে সরে গেলাম। বাবা মা আমাকে যেন চিনতে পারেনা, অদ্ভুত আচরন করতে লাগল সবাই।
গ্রীষ্মের তপ্ত বিকেলে ঠিক এক বছর পর আমি হাসপাতালের সামনে জেমসের পাশে বসে আমাদের জীবনের শেষেরবারের আগের ওর সাথে বলা কথাগুলো বললাম। প্রচন্ড অসহায় বোধ করছিলাম। অমনযোগী আমি কখনই জেমসকে চিনতে পারিনি, পারিনি ও যখন আমাকে কন্ট্রোল করতে লাগলো, পারিনি যখন ও আমার ভালবাসাকে পুজি করে আমার আমাকে ব্যবহার করল।
আমার পকেটে তখন আগের রাতের ড্রাগ পরে আছে। একটু আগে নিজ হাতে আমার রক্তের, শুধু জেমসের আমাকে ব্যবহারের নির্দশন আমার সন্তানকে ঈশ্বর নামের কারো কাছে পাঠালাম পৃথিবী থেকে দুর করে।
জেমসের দিকে চাইতে ইচ্ছা করছিল না, বললাম আমাকে বাড়িতে ফিরিয়ে দিয়ে আস। জেমস বুঝতে পারল ওর আসল রুপ আমি দেখেছি, তাই যা বললাম তাই করল। বাড়ীতে ঠিকই ফিরলাম, কিন্তু যেই আমাকে নিয়ে সবার ধারনা ছিল অসাধারন, সে যেন নিভে গেছে।
এরপরও জীবন থামেনি, চলতে লাগল, তবে আগেরমত নয়,খুড়িয়ে। জেমস এসেছিল, প্রার্থনা করে বলেছিল সে ভুল করেছে। কিন্তু এবার আর ভুল হলনা, আমার পথ থেকে সরে যেতে বললাম ওকে, দৃড়কন্ঠে!
(অসমাপ্তের সমাপ্তি)
সম্পুর্ন গল্প, কল্পনাদের সংমিশ্রন। প্রথমব্যক্তিতে লেখতে বেশি ভালোলাগে বলে লিখলাম। একটা কথা, ''যে ভালবাসে, সে নিয়ন্ত্রন করতে চায়না, ব্যবহার করেনা, বরং যার মনে ভয় থাকে আসল রুপ বেরিয়ে পড়ার, যে প্রতারনা করে, সে চায়''।
''ভালো থাকুন''