somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কেষ্ট কবির কষ্টে কথা - ১

২৯ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কালিকচ্ছ কুমারপাড়ার কিষাণ কুটিরের কর্ণধার কমল কুমারের কনিষ্ঠ কাকু কেষ্ট। কেউ কেউ কেষ্টরে কবি কেষ্ট' করেও কয়। কিছুকাল কবিতায় কাব্যেও কির্তনে কাজ করেছে কেষ্ট। কেষ্টর কণ্ঠে কিনা কঠিন কারুকাজ। “কিন্তু কপাল কুন্ডলা কেষ্ট”। কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে কণ্ঠরুদ্ধ কেষ্টর।


উপরের গদ্যাংশের প্রতিটি শব্দের শুরু হয়েছে বর্ণটি দিয়ে। এমন অনেক আছে আমাদের জানা। এমন ছোটখাটো লেখা আপনার আমার প্রায় সকলের পক্ষেই ধৈর্য আর সময় ব্যয় করলে তৈরি করা সম্ভব। কিন্তু যদি বলি ১০ পাতার একটি গদ্যাংশ লিখুন এমনি করে। কঠিন হয়ে যাবে। কিন্তু আপনি জানলে অবাক হবেন ১০ পাতা নয় বরং অর্ধশত পাতার উপন্যাস লিখেছেন একজন শুধু ক দিয়ে শুরু শুব্দ ব্যবহার করে। আরো অবাক হবেন এটা যেনে যে তিনি ১টি নয়, বরং ৩টি উপন্যাস তিনি লিখেন এইভাবে।



সরদার মোঃ নাজমুল কবির ইকবাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এই লেখক ইসমোনাক ছদ্মনামে লিখেছেন এই ৩টি উপন্যাস। তিনটি বইতে মোট ২৭,০০০ শব্দ রয়েছে, যার প্রতিটি শব্দ শুরু হয়েছে বর্ণ দিয়ে। উপন্যাসের শেষে প্রধান চরিত্রের মৃত্যু হবার শব্দটি ‘ক’ দিয়ে মেলাতে না পরে শেষ পর্যন্ত কুপোকাত শব্দটি ব্যবহার করেছেন।

বইটি এখনো আমার পড়ার সুযোগ যদি, ফলে এর ভালো মন্দ কিছুই বলতে পারছি না। কাহিনী সম্পর্কে কোনোই ধারনা না থাকলেও শুধ ক দিয়ে শুরু শব্দ ব্যবহার করে এমন সাহিত্য রচনা বাংলায় এই প্রথম। এই ধরনের সাহিত্যকে বলে টটোগ্রাম। বাংলা সাহিত্যে টটোগ্রাম উপন্যাসের এটাই প্রথম প্রচেষ্টা।

২০১০ সালে প্রকাশিত হয় ইসমোনাকের প্রথম বই।
বইয়ের নাম : কেষ্ট কবির কষ্টগুলো


প্রথম প্রকাশ : ২০১০ ইং
প্রকাশক : প্রজন্ম পাবলিকেশন
শব্দ সংখ্যা : ৭,০০০ টি

বইটির প্রথম কয়েক পতার নমুনা-
কালিকচ্ছ কুমারপাড়ার কিষাণ কুটিরের কর্ণধার কমল কুমারের কনিষ্ঠ কাকু কেষ্ট। কেউ কেউ কেষ্টরে কবি কেষ্ট' করেও কয়। কিছুকাল কবিতায় কাব্যেও কির্তনে কাজ করেছে কেষ্ট। কেষ্টর কণ্ঠে কিনা কঠিন কারুকাজ। “কিন্তু কপাল কুন্ডলা কেষ্ট”। কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে কণ্ঠরুদ্ধ কেষ্টর। কালিকচ্ছের কাজী কটেজের কাছে কামরাঙ্গিতলায় কুঁড়ের কুটিরে কোষ্ঠকাঠিন্যে কোনক্রমে কাল কাটায় কেষ্ট। কিছুকাল কাজীর কটেজে কাজ করেছিল, কিন্তু কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে কাজী কটেজেও কাজ করছেনা কিছুকাল। কেমনেইবা করবে। কাজ করাতাে কেষ্টর কাছে কঠিন। কঠিন কাজ কেষ্ট করবে কেমন করে। কাজ কাম করেনা, কাগজ কড়িও কামাই করেনা, কান্তু কড়ি কামাইনা করলে, কাম কাজ করলে কষ্টতাে করবেই। কেষ্টর কেবলই কষ্ট কেবলই কষ্ট। কত কিযে কষ্ট কেষ্টর, কেমনে কমু কষ্টের কথা। কেষ্টর কাকীমা কুসুম কলি কইল “কেষ্টরে, কষ্টের কথা কেউরে কইসনা। কইয়া কাম কি? কইলে কেবল করুণাই করবে। কটাক্ষ করে কথা কইবে।” কাকীমার কথায় কেষ্ট কষ্টেই কাল কাটাচ্ছে। কিন্তু কাউকে কয়না। কষ্ট করে, কেবলই কষ্ট করে “কষ্ট করাটাই কেবল কেষ্টর কাজ।"

কত কিযে কষ্ট কপাল কুন্ডলা কেষ্টর। কেমন করে কমু কেষ্টর কষ্টের কথা। কড়ির কষ্ট, কাগজের কষ্ট, কুঁড়ে কুটিরে কাঁথা কাপড়ের কষ্ট, কাম কাজ করার কষ্ট, কলমের কষ্ট, কালাে কালাে কষ্ট, কমলা কালার কষ্ট, কেষ্টর কেবলই কষ্ট। কমল কান্তের কনিষ্ট কুমারী কন্যা কমলারে কাছের করে করে কাবিন করে কালনা কাটানাের কষ্ট। কেষ্টর কেবল কষ্ট, কেবলই কষ্ট। কমল কান্তের কন্যা কংকনাকেও কইছিল, কংকনারে কাবিন করে, কাছের করে কামরাঙ্গিতলার কুঁড়ের কুটিরে কাল কাটাবে। কিন্তু কংকনা কেষ্টরে কাবিন করে কুঁড়ের কুটিরে কাল কাটায়নি। কেষ্টর কথায় কর্ণপাত করেনি। কিন্তু কেষ্টর কলিজার কোমল কুঠরির কঠিন কঠিন কথাগুলােকে কলঙ্কিত করেছে।

কিন্তু কেষ্ট! কষ্টের কথাগুলাে কারে কইব, কেমন করে কইব, কীভাবে কইব, কারে কইলে কেষ্টর কষ্ট কমবে?

কষ্টের কথা কি কেউ কর্ণপাত করে? করেনা। কেষ্টর কষ্টের কথা কেউ কর্ণপাত করবেনা। কি করবে কেষ্ট? কেমন করে কাল কাটাবে? কেষ্টর কাকিমা কুসুমকলি কালিকচ্ছের কয়েকজন কবিকে কইল; কবিগণ, কয়েকটা কথা কই।।

কবিগণ কইলেন; কও কুসুমকলি কও। কী কথা কইবা কও! কুসুমকলি কয়: কে কোথায়, কখন, কারাে কাছে কথাগুলাে কইছিল কিনা কমু কেমনে, কিন্তু কমু, কথাগুলাে কমু, কুসুম কোমল করে কুকিল কণ্ঠে কমু। কঠিন কঠোর কষ্টের করে কর্ণপাত করুন। কেননা কথাগুলাে কাজের কথা। কঠোর কঠিন কষ্টের কথা। কর্ণপাত করুণ, কবিগণ কর্ণপাত করুন। কাহিনীটি কবিগুরু কায়কোবাদের কওয়া কেষ্টর কঠিন কষ্টের কাহিনী। কবি কেষ্টর ক্রান্তিকালের কিছু করুণ কাব্য কথা।

কেউ কেউ কইবেন: কওতাে, কওতাে, কেমনতর করুণ কাব্য কথা। কেউ কেউ কইবেন, কাব্য কথা কীসের? কাব্য কথা কইয়া কাম কী? কিন্তু কবিগুরু কায়কোবাদ কী কয় কনতাে? কেমনেই বা কইবেন? কানেতাে কোন কাজ করেনা। কানে কাজ করলে কবিগুরু কী কয় কইতেন কিংবা কর্ণপাত করতেন।

কবিগণ কহে: কবিগুরু কায়কোবাদ কী কয়? কবিগুরু কায়কোবাদ কয় কৃপা করাে করুণাময়ী কৃপা করাে, করুণা করাে কঠিন কালের কর্তা। কেষ্টরে কৃপা করাে। কতনা করুন কণ্ঠে কেষ্ট কবিতা কইত। কির্তণ কইত। কিন্তু কোথায়! কোথায় কেষ্টর কষ্টের কবিতা। কোথায় কেষ্টর করুণ কির্তণ। কোথায়?

কোথায়? কৃপা করাে করুণাময়ী করুণা করাে। কেষ্টরে কৃপা করাে কেননা কেষ্ট কঠিন কপালকুণ্ডলা। কেষ্টরে কৃপা করাে। কিন্তু কপাল, কপালের কষ্টের কথা কেপারে কইতে?
কবি কালিপদ কয়: কবিগুরু কায়কোবাদের কথাই কন। কবিগণ কইলেন: কী কইবেন কবিগুরু কায়কোবাদের কপালের
কথা?
কালিপদ কয়: কেমন কপাল কবির, কয়েকটা কাঠের কারখানা, কয়টা কাপড়ের কল, কিন্তু...
কবিগণ কহে: কিন্তু কী?
কালিপদ কয়: কইতেছি।
কবিগণ কয়: কও কও; কবিগুরু কায়কোবাদের কথা কও।



লেখক ঠিক এভাবেই লিখেছেন ৭,০০০ শব্দের এই বইটি। সুযোগ হলে পড়ে দেখার ইচ্ছে রইলো আমার। আপনাদের কারো কাছে বইটির পিডিএফ কপি থাকলে শেয়ার করতে পারেন।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে আগস্ট, ২০২২ দুপুর ১:৪৯
৪৫৬ বার পঠিত
১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

চাই সরাসরি দুইস্তর বিশিস্ট প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন: নতুন বাংলাদেশের অঙ্গীকার

লিখেছেন বিদ্রোহী ভৃগু, ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৪

ভূমিকাঃ

ছাত্র-জনতার সফল জুলাই বিপ্লবের পর আজ বাংলাদেশ গণতন্ত্র, মৌলিক মানবাধিকার, আইনের শাসন ও প্রকৃত উন্নয়নের এক নতুন পথে যাত্র শুরু করেছে। নোবেল লরিয়েট ড। ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তবর্তীকালীন সরকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=শোকর গুজার প্রভুর তরে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:১৪



প্রভু তোমার দয়ার কথা, বলে হয় না শেষ তো
কত রিযিক আহার দিয়ে, রাখছো মোদের বেশ তো!
তোমার সৃষ্টির কেরামতি, নেই কো বুঝার সাধ্য
তোমার বান্দা তোমার গোলাম, শুধু তোমার বাধ্য!

গাছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সুপার সানডে : সংঘর্ষ ও নৈরাজ্যের পথে বাংলাদেশ!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৪৭


আজকের দিনটি বাংলাদেশের সচেতন মানুষের দীর্ঘদিন মনে থাকবে। এত সংঘর্ষ ও মারামারি অনেকদিন পর ঢাকাবাসী প্রত্যক্ষ করলো। দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে মানুষ আগে থেকেই উদ্বিগ্ন তার উপর বিভিন্ন অবরোধ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভয়েস অব আমেরিকার জরিপে সংস্কার শেষে ভোটের পক্ষে রায় দিয়েছে ৬৫.৯ % মানুষ

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ২৪ শে নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


পাগল ও নিজের ভালো বুঝে ,কখনো শুনেছেন পাগল পানিতে ডুবে মারা গেছে কিংবা আগুনে পুড়ে মারা গেছে ? মানসিক ভারসাম্য না থাকলেও মানুষের অবচেতন মন ঠিকই বুঝে আগুন ও পানি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউনূস সরকার নিজেই নিজের চাপ তৈরি করছে

লিখেছেন রাকু হাসান, ২৫ শে নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩


ইউনূস সরকার সব সংস্কার কিংবা কাজ করতে পারবে না ,সেটা নিয়মিতর নিয়ম মেনে নিতে হবে । রাজনৈতিক দলগুলো , যে কালচার তৈরি করে গেছে সেটা এই সরকার আমূলে বদলে দিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×