somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কুহক – হুমায়ূন আহমেদ (কাহিনী সংক্ষেপ)

২১ শে জুন, ২০২১ রাত ১:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বইয়ের নাম : কুহক
লেখক : হুমায়ূন আহমেদ
লেখার ধরন : বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
প্রথম প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ১৯৯১
প্রকাশক : প্রতীক প্রকাশনা সংস্থা
পৃষ্ঠা সংখ্যা : ৬২ টি



সতর্কীকরণ : কাহিনী সংক্ষেপটি স্পয়লার দোষে দুষ্ট


কাহিনী সংক্ষেপ :
নিশানাথ বাবুর সাইনাসের সমস্যার জন্য মাথা ব্যথা হয় বলে ডাক্তার পাঠিয়েছে মাথার এক্সরে করার জন্য। এক্সরে করার সময় হঠাৎ করেই মেশিনে সামান্য সমস্যার কারণে মেশিনটি আর বন্ধ না হওয়ার ফলে প্রচুর পরিমানে রশ্মি নিশানাথ সাহেবের মাথার ভিতর দিয়ে চলে যায়। ডায়গনিস্ট সেন্টারের এক্সরের লোকেরা খুব ভয় পেয়ে যায়। কিন্তু দেখা যায় বৃদ্ধ নিশানাথের তেমন কিছুই হয় নি। তিনি একটি রিক্সা নিয়ে বাড়ি ফিরে যান। কিন্তু এর মধ্যেই বিচিত্র কোন উপায়ে নিশানাথ বাবু রিক্সাওয়ালার মনের সব কথা বুঝতে পেরে যেতে থাকেন।


নিশানাথ বাবু থাকেন তার পুরনো ছাত্র মহসিন সাহেবের বাড়িতে। মহসিন সাহেব প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, তিন ছেলে মেয়ের পিতা। নিশানাথ বাবু এখন মহসিন সাহেবের ছেলে মেয়েদের পড়ান। আজ পড়ানোর সময় তিনি লক্ষ্য করলেন তিনি অনায়াসেই ছাত্রের মস্তিষ্কের ভিতরে ঢুকে যেতে পারছেন। যে টেনশিলেশান গুলি ছাত্র পারছিলো না, সেগুলি তিনি সহজেই মস্তিষ্কের ভিতরে থেকে শিখিয়ে দিলেন, কি করে একটার পর একটা শব্দ বসাতে হবে সেটা ধরিয়ে দিতেই ছাত্র টপাটপ সব বুঝে গেলো।


রাতে নিশানাথ বাবুর শরীর আবার খারাপ হয়ে গেলো, জ্বর আর প্রচন্ড মাথা ব্যথা। খবর পেয়ে মহসিনের স্ত্রী দীপা ছুটে আসেন নিশানাথের রুমে। ডাক্তার ডেকে আনান। ডাক্তার আসতে আসতে নিশানাথ বাবু আবার সুস্থ হয়ে যান। দ্বীপা নিশানাথকে চাচা বলে ডাকে। নিশানাথ বাবুও দ্বীপাকে খুবই স্নেহ করেন। তিনি দ্বীপাকে জানালেন- তিনি মানুষের মস্তিষ্কের ভিতরে ঢুকে যেতে পারেন। দ্বীপা ভাবলো এগুলি অসুস্থতার কারণে তিনি বলছেন।


পরদিন সকালে নিশানাথ দেখলেন তার মাথার সমস্ত চুল পরে গেছে। উপরের মাড়ির দুটি দাঁতও পরে যায়। তিনি তার দাঁতের এক্সরে করানোর জন্য আবার সেই ডায়গনিস্ট সেন্টারে যান। সেখানে তিনি ডাক্তারের মস্তিষ্কের ভিতরে ঢুকে ডাক্তারের ভিতরের লোভ আর কুটিলতা গুলি মুছে দেন। ডাক্তার বুঝতে পারেন তার ভিতরে কিছু একটা হয়েছে, নিশানাথ বাবুই যে সেটা করে দিয়ে গেছেন সেটাও তিনি বুঝতে পারেন।


মহসিন আর দ্বীপার সবচেয়ে ছোট মেয়ে আলো জন্ম থেকেই বোবা কালা। কোনো ভাবেই তাকে অক্ষর শেখানো যায়নি, সাইন ল্যাঙ্গুয়েজও তেমন শেখানো যায়নি। রাতে মহসিন সাহেবকে দেখলে সে ভয়ে অস্থিররহয়ে যায়। শুধু দ্বীপাই তাকে সামলাতে পারে। তাই বাধ্য হয়ে দ্বীপা স্বামীকে ছেড়ে রাতে মেয়েকে নিয়ে আলাদা ঘরে থাকেন। একদিন রাতে আলো ঘুম থেকে উঠে মাকে পাশে না পেয়ে প্রচন্ড চিৎকার চেচামেচি শুরু করে। ঠিক তখন নিশানাথ আলোর মস্তিষ্কের ভেতরে ঢুকে তাকে শান্তনা দেন। নতুন এই অভিজ্ঞাতয় আলো অবাক হয়। পরে নিশানাথ অতি সহজেই আলোকে অক্ষর চেনান, পড়তে সেখান মস্তিষ্কের ভেতরে থেকে।


কদিনের মধ্যেই নিশানাথ আরো অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার উপরের মাড়ির সবগুলি দাঁত পরে যায়। শরীরে পানি এসে শরীর ফুলে যায়। হাত পায়ের নখগুলি কালচে নীল হয়ে মরে যেতে শুরু করে। ডাক্তার তাকে হাসপাতালে ভর্তী হতে বলেন। কিন্তু তিনি দ্বীপাকে বলেন আর কয়েকটা দিনই তিনি বাঁচবেন, তাই তিনি হাসপাতালে না গিয়ে নিজের ঘরে থাকতে চান। এদিকে দ্বীপা তার ডাক্তার ছোট বোনকে খবর দেন নিশানাথ বাবুকে দেখে যেতে। নিশানাথ বাবু যখন তার ক্ষমতার কথা দ্বীপার বোনকে বলেন তখন সে তা বিশ্বাস করেনা। পরে হঠাৎ করেই যখন নিশানাথ মেয়েটির ব্যাগে থাকা গোপন চিঠির কথা বলে দেন তখন মেয়েটি অবাক হয়ে যায়।


দ্বীপার বোন মহসিন সাহেবকে নিশানাথের মস্তিষ্কের ভিতরে ঢুকে যাওয়ার ক্ষমতার কথা বলে, কিন্তু মহসিন সাহেব তা বিশ্বাস করেন না। পরে মহসিন সাহেব নিশানাথকে দেখতে গেলে নিশানাথ মহসিনের মস্তিষ্কে ঢুকে দেখতে পান মহসিন তার স্ত্রী দ্বীপাকে ইস্ত্রীর শটসার্কিট করিয়ে হত্যা করার পরিকল্পনা করছেন, কারণ মহসিন অন্য আরেকটি মেয়েকে ভালোবেসে ফেলেছে। নিশানাথ সাহেব প্রিয় ছাত্রের এমন নীচতা দেখে অবাক হয়ে যান। পরে তিনি দ্বীপাকে ডেকে তাদের বাসার সমস্ত ইস্ত্রী চেয়ে নেন নিজের কাছে আর দ্বীপাকে বলে দেন ভুলেও কোন কাপড় স্ত্রী না করতে।


রাতে মহসিন সাহেব বাড়িতে ফিরলে দ্বীপা নিশানাথের পাগলামির কথা জানান। নিশানাথ সমস্ত ইস্ত্রী নিয়ে নিয়েছেন শুনেই মহসিন বুঝতে পারে আসলে নিশানাথ মস্তিষ্কে ঢুকতে পারেন। তার মস্তিষ্কে ঢুকে নিশানাত ইস্ত্রীর বিষয়টা বুঝতে পেরেছেন। তাই মহসিন ঠিক করে আজ রাতেই তিনি নিশানাথকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করবেন। গভীর রাতে যখন মহসিন নিসা নাথের ঘরের দিকে যাচ্ছেন তখন নিশানাথ বাবু ঢুকে গেছেন মহসিনের মস্তিষ্কে। নিশানাথ বাবু বুঝতে পারেন তার সময় বেশী নেই। এই অল্প সময়ের মধ্যেই তাকে মহসিনের মম্তিষ্ক থেকে ঐ মেয়েটির সমস্ত স্মৃতি মুছে দিয়ে দ্বীপার জন্য ভালোবাসা ভরে দিতে হবে। নিশানাথ মহসিনের মস্তিষ্ক থেকে ঐ মেয়েটির স্মৃতি মুছতে শুরু করেন, অন্য দিকে মহসিন সাহেব ঢুকে পরেন নিশানাথের ঘরে। বালিশ চাপা দিয়ে ধরেন নিশানাথের মুখে। নিশানাথ বুঝতে পারেন মহসানের মাথা থেকে ঐ মেয়েটির স্মৃতির সাথে সাথে এই হত্যা কান্ডের স্মৃতিও মুছে দিতে হবে।

----- সমাপ্ত -----


=======================================================================

আমার লেখা হুমায়ূন আহমেদের অন্যান্য কাহিনী সংক্ষেপ সমূহ

আমার লেখা অন্যান্য কাহিনী সংক্ষেপ সমূহ: আমার লেখা অন্যান্য কাহিনী সংক্ষেপ সমূহ:
ভয়ংকর সুন্দর (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
মিশর রহস্য (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
খালি জাহাজের রহস্য (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
ভূপাল রহস্য (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
পাহাড় চূড়ায় আতঙ্ক (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
সবুজ দ্বীপের রাজা (কাকাবাবু) - সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়


তিতাস একটি নদীর নাম - অদ্বৈত মল্লবর্মণ

ফার ফ্রম দ্য ম্যাডিং ক্রাউড - টমাজ হার্ডি
কালো বিড়াল - খসরু চৌধুরী
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে জুন, ২০২১ রাত ১:৩৭
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কাশ্মীরে বন্ধুকধারীদের হামলায় ২৬ জনকে হত্যা; নেপথ্যে উগ্রবাদী মোদীর বিতর্কিত কাশ্মীর নীতি!

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ৮:২২

কাশ্মীরে বন্ধুকধারীদের হামলায় ২৬ জনকে হত্যা; নেপথ্যে উগ্রবাদী মোদীর বিতর্কিত কাশ্মীর নীতি!

পেহেলগাম, ছবি গুগল থেকে প্রাপ্ত।

কাশ্মীরে অন্তত ২৬ জন পর্যটক নিহত হয়েছেন, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোর সবচেয়ে মারাত্মক হামলা। বিশ্লেষকদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিসর্জনের ছাই

লিখেছেন রানার ব্লগ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৫ সকাল ১১:০৯




একদিন দগ্ধ ঘাসে ভালোবাসা পুড়িয়ে দেব।
সর্বাংগে ওর ছাই মেখে আমি বৈরাগ্য নেব।
রগড়ে রগড়ে ধুয়ে ফেলব শ্রবন মেঘের জলে।
কায়াটা কে শুকতে দেব তোমার বাড়ির উঠনে।

পায়ের নখে গজিয়ে উঠবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিছু আশা, কিছু হতাশা, কিছু বাস্তবতা

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১২:০৯



বাংলাদেশ যেন একটা রোলার কোষ্টারে সওয়ার হয়ে চলছে এখন। প্রতিনিয়ত পরিস্থিতির পরিবর্তন হচ্ছে; একটা সংযোজন-বিয়োজনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দেশ। আমরা সরকারের কর্মকান্ডে আশান্বিত যেমন হচ্ছি, তেমনি হতাশায়ও নিমজ্জিত হচ্ছি;... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইচ্ছে করে ঘুরে বেড়াই=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১:১২


এই উষ্ণতায় ইচ্ছে করে ঘুরে বেড়াই নদীতে সমুদ্দুরে
বালুচরে হেঁটে বেড়াই,
ঢেউয়ে থাকি বসে, জল এসে ছুঁয়ে দিক আমায়,
হিম হাওয়া এসে ভাসিয়ে নিয়ে যাক সুখের সপ্ত আসমানে।

এই বৈশাখে ইচ্ছে করে পুকুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি শেষ কবে একটি বই পড়েছেন ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:২২


আজ ২৩ এপ্রিল, বিশ্ব বই দিবস। অনেকেই একে বলেন ‘বিশ্ব গ্রন্থ ও গ্রন্থস্বত্ব দিবস’। ইউনেসকোর উদ্যোগে ১৯৯৫ সাল থেকে দিনটি পালিত হয়ে আসছে বই, লেখক এবং কপিরাইট রক্ষার বার্তা নিয়ে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×