প্রায় ১৫ দিন পরে পোস্ট দেয়ার জন্য আমি দুঃখিত। ভার্সিটির ক্লাস, প্রোজেক্ট নিয়ে খুব বেশি ব্যাস্ত ছিলাম। ঈদ এবং পূজার ছুটিতে এখন বাসায়। কিন্তু বাসায় আসার পরদিনই এক বন্ধু ফোন করে বলল যে গ্রামীনফোনে brand promoter এর জন্য কাল ইন্টারভিউ, সে আমার নামও লিস্ট এ দিয়ে দিছে। অবশ্য তাকে আমি আগে বলছিলাম আমি বাসায় থাকলে যদি কোন নতুন কাজ আসে তাহলে করব। নতুন অভিজ্ঞতার আশায় পরদিন ইন্টারভিউ দিলাম এবং নিজের চাপাবাজি প্রতিভার কারনে নির্বাচিত হলাম। যাই হোক, কাল কাজ শেষ হয়ে যাবে। এখন মোটামুটি অবসর এবং এখন থেকে নিয়মিত পোস্ট পাবেন। গত পর্বে নিঝুম দ্বীপ এ যাওয়ার ঘাট পর্যন্ত এসে শেষ করেছিলাম। আজ এর পর থেকে শুরু করছি।
ট্রলার যাত্রী নিয়ে ওপাড়ে গেছে। আমরা নাস্তা শেষ করতেই ট্রলার চলে এলো। নদীতে ভাটা চলছিল। প্রায় হাঁটু পর্যন্ত কাদাপথ মাড়িয়ে ট্রলার এ উঠলাম। নদীতে ইলিশ মাছ ধরা দেখলাম। ট্রলার যখন নিঝুম দ্বীপ এর কাছাকাছি তখন কিছু অদ্ভুত মাছ দেখলাম। দেখলাম মাছগুলো পানির উপরে ওড়ার মত করে সাঁতার কাটছে। মাঝে মাঝে লাফ দিয়ে পাড়ে উঠে আসছে। আবার পানিতে লাফিয়ে পড়ছে। পরে জেনেছিলাম ওইগুলো কে লোকাল ভাষায় চিরিং মাছ বলে। কিছুক্ষণ পর নিঝুম দ্বীপে আবার কাদাপথ মাড়িয়ে পা রাখলাম। অবশ্য একটু পথ হাঁটার পরেই একটা নলকূপ পেয়ে গেলাম। পা ধুয়ে চিন্তা করছিলাম কোন দিক দিয়ে তাড়াতাড়ি দ্বীপটা ঘুরে শেষ করা যায়, হরিণ এর দেখা পাওয়া যায়। দুপুর ২ টায় লঞ্চ, কাজেই ১২ টার মধ্যে ঘোরাঘুরি শেষ করতে হবে। এমন সময় একজন খবর নিয়ে এলো, নিঝুম দ্বীপ এ এই পাশে দেখার মত কিছু নেই। দেখতে হলে দ্বীপ এর আরেকপাশে যেতে হবে। ঐখানে সৈকত আর কেওড়া বন আছে। আরও একটা খবর পেলাম যে হরিণ দেখার জন্য আমাদের আগমন তা শুধু খুব ভোরে আর সন্ধ্যার সময় দেখা যায় কারণ হরিণ শুধু ঐ সময়ে খাওয়ার জন্য বের হয়। সুতরাং, হরিণ দেখতে হলে আমাদের একদিন নিঝুম দ্বীপ এ থাকতে হবে এবং ভালো হোটেল দ্বীপ এর আরেক পাশে। কি আর করা, বাসায় ফোন দিয়ে বললাম নিঝুম দ্বীপে ঘুরতে চলে এসেছি আর আগামীকাল বিকেল এর আগে বাসায় আসা সম্ভব নয়। মা বাবা আমার কৃতকর্মে খুব খুশি হইয়া অনেকক্ষণ মধুবর্ষণ করলেন। যাই হোক কিছুক্ষণ পরে কাঁচারাস্তা ধরে আমাদের মোটরসাইকেল যাত্রা শুরু হল।