বৌয়ের সঙ্গে ব্যবসা ফ্রির এমন
রমরমা প্রতারণা বাণিজ্য চলছে রাজধানীজুড়ে। পাত্রীর সবাই হয় ডিভোর্সি নতুবা বন্ধ্যা। বিজ্ঞাপনে উলি্লখিত প্রথম ফোন নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। দ্বিতীয় ফোন ধরে এক ব্যক্তি। পরিচয় জিজ্ঞাসা করে সে জানতে চায় প্রয়োজন। বিয়ের আগ্রহ প্রকাশ করলে সে বয়স কত জানতে চায়। জানানো হয় ৪৩। কি করেন_ গার্মেন্টের সুপারভাইজার? আগের বউ আছে? ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে বললে ফোনের অপরপাশ থেকে জানায়, কোনো চিন্তা নেই। আমেরিকায় যাওয়া যাবে কি না প্রশ্নে সে বলে, কাল সকালে ফোন দেন সব জানায় দেওয়া হবে। ফোন দিয়েন কিন্তু ভাই! পরে যখন তাকে বলা হয় এ রকম প্রতারণা কতদিন করবেন তখন ফোন বন্ধ করে দেয় ম্যারেজ মিডিয়ার ওই প্রতারক।
রাজধানীতে এভাবে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়া এবং ধনী পাত্রীর ব্যবসা পরিচালনার দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার নামে প্রতারণার ফাঁদ খুলে বসেছে প্রতারক চক্র। পাত্রীদের অধিকাংশ বন্ধ্যা ও ডিভোর্সি হিসেবে উল্লেখ করে প্রতারক চক্র। অল্প কিছুদিন এক জায়গায় থেকে প্রতারণার কাজ শেষ করে আবার অন্য জায়গায় আশ্রয় নেয় এরা। কখনও ট্র্যাভেল ব্যবসা কিংবা কখনও বায়িং হাউজ এমন পরিচয়ে জমকালো অফিস নেয় এসব প্রতারক চক্র। অফিসের সাজসজ্জা দেখলে কেউ বুঝতে পারবে না প্রতারণার কত বড় ফাঁদ পাতা হয়েছে।
ভুক্তভোগী এক কাপড় ব্যবসায়ী কবীর আহমেদ বলেন, আমি গত বছর এই প্রতারক চক্রের শিকার হয়েছি। আমাকে বলা হয়েছে বিদেশে নিয়ে যাওয়া হবে। প্রথম দুদিন আমাকে কোনো পাত্রী দেখানো হয়নি। এর মধ্যে বিভিন্ন খরচের কথা বলে ২০ হাজার টাকা নেয় এরা। পরের দিন পাত্রীর সঙ্গে দেখা হল মাত্র ৫ মিনিটের জন্য। এদিন আরও ২০ হাজার টাকা নেয় ওরা। বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকলে ওরা বলে ধৈর্য ধরেন শুভ কাজে একটু সময় তো লাগেই। এক সপ্তাহ পরে গুলশানের সেই অফিসে গিয়ে দেখি তালা দেওয়া। কেউ নেই। কিছু নেই। প্রতারণার সঙ্গে জড়িত এক ভুয়া পাত্রী সুমনা (ছদ্মনাম) জানায়, যা আয় হয় তার ৫ ভাগ আমরা পাই। বাকি ৯৫ ভাগ ফার্মের মালিক নিয়ে নেয়। ভুয়া পাত্রী জানায়, সবাইরে ভাগ দিয়ে এ ব্যবসা চলে। ধরা পড়তে হয়। বড় ভাই ছাড়ায় নেয়। আবার ব্যবসা জমে অন্য কোনো জায়গায়।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) মনিরুল ইসলাম বলেন, এ ক্ষেত্রে নাগরিকদের সচেতনতা খুব জরুরি। খোঁজখবর নিয়ে যে কোনো কাজ করা উচিত। তিনি আরও বলেন, প্রতারক চক্রের যোগাযোগের পরিধিও বেশ বড়। তাড়াতাড়ি জামিনে বের হয়ে আবারও অপরাধে জড়ায়। পাত্র-পাত্রী সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন প্রকাশের ক্ষেত্রে পত্রিকাগুলো আরও সংবেদনশীল ভূমিকা রাখতে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা অক্টোবর, ২০১১ সকাল ১০:৩১